রাতে ঘুমানোর আগে অনেকেরই বিছানার পাশে গ্লাসে জল রাখার অভ্যাস রয়েছে। রাতে তৃষ্ণা পেলে ঘুম ভেঙে যাওয়ার ঝামেলা এড়াতে এই অভ্যাস মোটেই অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু এতেই নাকি শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে! স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সাধারণ অভ্যাস নিঃশব্দে বাড়িয়ে দিতে পারে একাধিক স্বাস্থ্যঝুঁকি। খোলা গ্লাসে রাখা জল সকালে পান করা মোটেও নিরাপদ নয়।

কেন খোলা গ্লাসে রাখা জল বিপজ্জনক? চিকিৎসকদের মতে, সারারাত খোলা অবস্থায় থাকা জল ঘরের বাতাস থেকে নানা ধরনের ধুলো, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক এবং মাইক্রোপার্টিকল শোষণ করে। ঘরের ভেতরের পরিবেশ যত উষ্ণ বা আর্দ্র হবে, এই জীবাণু তত দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ফলে সকালে সেই জল আর বিশুদ্ধ থাকে না। শুধু ধুলো বা ময়লাই নয়, জলের উপরে জমে থাকা ব্যাকটেরিয়া সহজেই শরীরে প্রবেশ করে নানা ধরনের হজম সমস্যা ও মুখের সংক্রমণ ঘটাতে পারে।

রাসায়নিক পরিবর্তনের আশঙ্কাও রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, পরিবেশের কার্বন ডাইঅক্সাইড জলের সঙ্গে বিক্রিয়া করে হালকা মাত্রায় কার্বনিক অ্যাসিড তৈরি করতে পারে। এতে জলের স্বাদ অদ্ভুত হয়ে যায়, কখনও কখনও টক ভাবও আসে। এই পরিবর্তন শরীরের জন্য খুব বড় ক্ষতি না করলেও, নিয়মিত এই জল পান করলে গ্যাস্ট্রিকের অস্বস্তি দেখা দিতে পারে।

স্বাস্থ্যের কী কী ঝুঁকি বাড়ে?

১. গলা ব্যথা ও সংক্রমণ: খোলা জল ব্যাকটেরিয়া বহন করতে পারে, যা গলায় জ্বালা ও ইনফেকশন তৈরি করে।
২. হজমের সমস্যা: দূষিত জল পাকস্থলীতে অস্বস্তি, বমি ভাব বা পাতলা মলের সমস্যা হতে পারে।
৩. অ্যালার্জি: ধুলো বা ছত্রাকের স্পোর থাকা জল অ্যালার্জি প্রবণদের জন্য আরও ক্ষতিকর।
৪. মুখের স্বাস্থ্য নষ্ট: জীবাণুযুক্ত জল পান করলে মুখের ব্যাকটেরিয়া বেড়ে গিয়ে দুর্গন্ধ বা মাড়ির সমস্যা তৈরি হতে পারে।

কারা বেশি সতর্ক হবেন? অ্যালার্জি থাকলে, প্রবীণদের, শিশু এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাঁদের জন্য এই অভ্যাস বিশেষত ক্ষতিকর হতে পারে।

কী করা উচিত

খোলা গ্লাস নয়, বরং ঢাকনাযুক্ত বোতল বা ফ্লাস্ক ব্যবহার করুন।

প্রতিদিন বোতল ভাল করে ধুয়ে নিন।

সকালে জলের স্বাদ অদ্ভুত লাগলে নতুন জল নিন। 

রাতে ঘুমানোর আগে পর্যাপ্ত জল পান করুন।