শীতের সময় ফাটা গোড়ালির সমস্যা খুব সাধারণ বিষয়। এই সময় প্রায় প্রত্যেকেরই গোড়ালি ফেটে যায়। ফাটা গোড়ালি যেমন দেখতে খারাপ লাগে, তেমনই হাঁটাচলার সময় ব্যথা ও জ্বালাভাবও হয়। অনেক সময় ফাটল গভীর হলে রক্তপাত বা সংক্রমণের ঝুঁকিও তৈরি হয়। বাজারে নানা ধরনের ক্রিম এবং লোশন পাওয়া গেলেও সেগুলি সাময়িক স্বস্তি দেয়। কিন্তু আসল সমাধান লুকিয়ে আছে ঘরোয়া উপায়েই। জেনে নেওয়া যাক ফাটা গোড়ালিতে আরাম দেবে এমন ৫টি কার্যকর ঘরোয়া টোটকা।
নারকেল তেল
নারকেল তেল ফাটা গোড়ালির জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি ত্বকের গভীরে পুষ্টি জোগায় এবং এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। রাতে শোওয়ার আগে পা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ভালভাবে মুছে নিন। তারপর গোড়ালিতে নারকেল তেল লাগিয়ে মোজা পরে নিন। সকালে দেখবেন, গোড়ালি অনেক নরম হয়ে গেছে। নিয়মিত করলে ফাটা জায়গাগুলো দ্রুত সেরে যায়।
গ্লিসারিন এবং গোলাপজল
গ্লিসারিন এবং গোলাপজলের মিশ্রণ ত্বককে আর্দ্র রাখার দারুণ উপায়। দুটো উপাদান সমান পরিমাণে নিয়ে মিশিয়ে ফাটা গোড়ালিতে লাগান। ২০ মিনিট পর গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন ব্যবহার করলে ধীরে ধীরে ফাটল মিলিয়ে যাবে।
লেবু এবং বেকিং সোডা
গোড়ালিতে জমে থাকা মৃত ত্বক দূর করতে লেবু এবং বেকিং সোডার মিশ্রণ খুব কার্যকর। একটি পাত্রে উষ্ণ গরম জল নিন, তাতে অর্ধেক লেবুর রস এবং এক চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে নিন। পা ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন, তারপর হালকা হাতে পিউমিক স্টোন দিয়ে ঘষে ফেলুন। এতে গোড়ালি হবে নরম এবং ফাটলমুক্ত।
ভ্যাসলিন এবং লেবুর মিশ্রণ
এক চামচ ভ্যাসলিনের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে ফাটা গোড়ালিতে লাগিয়ে হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন। তারপর মোজা পরে রাতে রেখে দিন। সকালে ধুয়ে ফেললে গোড়ালির ফাটল অনেকটাই কমে যাবে। বিশেষ করে শীতকালে এই উপায়টি খুব ফলদায়ক।
কলার পেস্ট
পাকা কলা প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। একটি পাকা কলা মেখে পেস্ট তৈরি করে গোড়ালিতে লাগান। ১৫–২০ মিনিট রেখে গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কলায় থাকা ভিটামিন এ, বি৬ এবং সি ত্বককে পুষ্টি দেয় এবং ফাটা গোড়ালি দ্রুত সারিয়ে তোলে।
শীতের সময় ফাটা গোড়ালি কোনো বড় সমস্যা নয়—যদি নিয়মিত যত্ন নেওয়া যায়। বাজারের রাসায়ানিকযুক্ত প্রোডাক্টের চেয়ে এই ঘরোয়া উপায়গুলো অনেক বেশি নিরাপদ ও কার্যকর। প্রতিদিন পা পরিষ্কার রাখা, ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা এবং গরমে-ঠান্ডায় পায়ের যত্ন নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললেই ফাটা গোড়ালির সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
