দুধ আর সোডা-নামটা শুনেই অনেকের কপালে ভাঁজ পড়ে। দুধের সঙ্গে সোডা আবার কীভাবে খাওয়া যায়! শুনতে অবাক লাগলেও দুধ সোডা সত্যি ভারত ও পাকিস্তানের বহু পুরনো এবং জনপ্রিয় স্ট্রিট ড্রিঙ্ক। সম্প্রতি 'ধুরন্ধর' ছবির একটি দৃশ্যের পর এই পানীয়টিকে নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে। অনেকেই এখন জানতে চাইছেন, এই দুধ সোডা আসলে কী, আর কীভাবেই বা বানানো হয়?
সহজ করে বললে, দুধ সোডা হল ঠান্ডা দুধ আর লেমন-লাইম সোডার মিশ্রণ। সাধারণত এতে ব্যবহার করা হয় ঠান্ডা দুধ, স্প্রাইট বা সেভেন আপের মতো সোডা, আর স্বাদ বাড়াতে একটু চিনি বা রোজ সিরাপ। কোথাও কোথাও সাবজা বীজ বা এলাচের গুঁড়োও দেওয়া হয়। শুনতে অদ্ভুত লাগলেও যারা খেয়েছেন, তাঁদের অনেকেই বলেন স্বাদ বেশ ভাল।
এই পানীয়টির ইতিহাস পুরনো। বলা হয়, ব্রিটিশ আমলে ইউরোপে প্রথম দুধ আর সোডা মিশিয়ে পান করার চল শুরু হয়। পরে তা ভারত ও পাকিস্তানে এসে স্থানীয় স্বাদের সঙ্গে মিশে যায়। বিশেষ করে পাঞ্জাব, লাহোর, করাচি বা দিল্লির কিছু এলাকায় গরমকালে রাস্তার ধারের দোকানে দুধ সোডা বেশ জনপ্রিয় ছিল। ইফতারেও অনেক জায়গায় এই পানীয় পরিবেশন করা হয়।
দুধ সোডা বানানো খুবই সহজ। প্রথমে দুধ ভাল করে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে নিতে হয়। গ্লাসে বরফ দিয়ে তার মধ্যে ঠান্ডা দুধ ঢালা হয়। এরপর ধীরে ধীরে সোডা দেওয়া হয়, যাতে দুধ ফেটে না যায়। সবশেষে স্বাদ অনুযায়ী চিনি বা রোজ সিরাপ মেশানো হয়। ব্যস, কয়েক মিনিটেই তৈরি ঠান্ডা ও ফিজি দুধ সোডা।
অনেকে ভাবেন, দুধ আর সোডা একসঙ্গে খেলে শরীর খারাপ হতে পারে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিমিত পরিমাণে খেলে সাধারণত সমস্যা হয় না। তবে যাঁদের দুধে অ্যালার্জি আছে বা হজমের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের একটু সাবধান থাকা ভাল। খুব গরমের দিনে শরীর ঠান্ডা রাখতে এই পানীয় কাজে আসতে পারে, কারণ এতে দুধের পুষ্টি আর সোডার টাটকাভাব-দুটোই পাওয়া যায়।
সবমিলিয়ে বলা যায়, দুধ সোডা কোনও নতুন আবিষ্কার নয়। এটা আমাদের উপমহাদেশের পুরনো স্ট্রিট ফুড সংস্কৃতিরই অংশ। সিনেমার দৌলতে আবার নতুন প্রজন্মের সামনে ফিরে এসেছে এই পানীয়।
