আজকের ব্যস্ত জীবনে আলাদা করে শরীরচর্চার সময় বের করা অনেকের পক্ষেই কঠিন। সকাল থেকে অফিস, তারপর বাড়ির কাজ- দিন শেষে শরীরচর্চার কথা ভাবলেই ক্লান্ত লাগে। কিন্তু জানেন কি, প্রতিদিনের রান্নাঘরের কাজ দিয়েই ওজন বৃদ্ধি আটকানো সম্ভব? ফিটনেস বিশেষজ্ঞদের মতে, রান্নাঘরে একটু সচেতনভাবে কাজ করলেই শরীর সক্রিয় থাকে এবং ধীরে ধীরে ক্যালরি বার্ন হয়।

প্রথমেই আসা যাক বসার ভঙ্গিতে। আমরা অনেকেই সবজি কাটার সময় চেয়ারে বসে বা ঝুঁকে কাজ করি, যা পিঠ ও কোমরের উপর চাপ ফেলে। এর বদলে মেঝেতে পা ভাঁজ করে বা হালকা স্কোয়াট ভঙ্গিতে বসে কাজ করলে শরীরের নিচের অংশের পেশি সক্রিয় হয়। এতে শুধু নমনীয়তাই বাড়ে না, ধীরে ধীরে ক্যালরিও বার্ন হয়।

রান্না হওয়ার অপেক্ষায় চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকার অভ্যাসটাও বদলানো দরকার। যখন ডাল ফুটছে বা তরকারি কষানো হচ্ছে, তখনই হালকা নড়াচড়া করুন। পায়ের গোড়ালি তুলে নামানো, এদিক-ওদিক হাঁটা, কাঁধ ঘোরানো বা দু’-একটা স্কোয়াট-এই ছোট ছোট মুভমেন্টই মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে। আলাদা করে ব্যায়ামের পোশাক পরার দরকার নেই, কাজের ফাঁকেই হয়ে যাবে শরীরচর্চা।

অনেক সময় রান্নাঘরে ভারী হাঁড়ি, গ্যাস সিলিন্ডার বা বাজারের ব্যাগ তুলতে হয়। এই কাজগুলো ভুল ভঙ্গিতে করলে পিঠে চোট লাগার আশঙ্কা থাকে। ফিটনেস বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, কোমর না ভেঙে হাঁটু ভাঁজ করে স্কোয়াটের মতো করে জিনিস তুলুন। এতে পায়ের পেশি কাজ করবে, পিঠ থাকবে সুরক্ষিত, আর বাড়তি ক্যালরিও খরচ হবে।

রান্নাঘর পরিষ্কার করাকেও ব্যায়ামের সুযোগ হিসেবে দেখা যায়। ঝাঁট দেওয়া, ঘর মোছা, বাসন ধোয়ার সময় যদি শ্বাস-প্রশ্বাসের দিকে মন দেন, তাহলে তা স্ট্রেস কমাতেও সাহায্য করবে। গভীর শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার সঙ্গে শরীরের নড়াচড়া মানসিক শান্তি বাড়ায়, যা ওজন নিয়ন্ত্রণেও গুরুত্বপূর্ণ।

এসব অভ্যাস নিয়মিত করতে হবে। একদিন করলেন, দু’দিন ভুলে গেলেন, তাতে লাভ হবে না। কিন্তু প্রতিদিনের রুটিনে এই ছোট কৌশল মেনে চললে কষ্ট না করেই শরীর থাকবে সক্রিয়। রান্নাঘরের দৈনন্দিন কাজই তখন হয়ে উঠবে নিত্যদিনের ওয়ার্কআউট, আর ওজন বাড়ার চিন্তাও অনেকটাই কমবে।