চা, স্যালাড, ডাল বা তরকারিতে প্রায় সকলেই লেবু ব্যবহার করেন। কিন্তু লেবুর রস ব্যবহার করার পর খোসাটা সাধারণত ডাস্টবিনেই যায়। অনেকেই ভাবেন, খোসার আর কী দরকার! কিন্তু বাস্তবে লেবুর খোসা মোটেও ফেলনা নয়। পুষ্টিবিদদের মতে, লেবুর খোসায় এমন অনেক উপাদান রয়েছে, যা শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী। সহজ কথায়, লেবুর রসের চেয়েও কখনও কখনও খোসা বেশি কাজের।
লেবুর খোসায় থাকে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। এগুলো শরীরের ভেতরের ক্ষতিকর উপাদান বা ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এর ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং বার্ধক্যের প্রভাব ধীরে আসে। যারা সহজে সর্দি-কাশি বা সংক্রমণে ভোগেন, তাঁদের জন্য লেবুর খোসা বেশ উপকারী হতে পারে।
লেবুর খোসা হজমের জন্য খুব ভাল। এতে থাকে ডায়েটারি ফাইবার, যা পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত অল্প পরিমাণে লেবুর খোসা ব্যবহার করলে কোষ্ঠকাঠিন্য কমে এবং হজম শক্তিশালী হয়। যাঁদের গ্যাস বা বদহজমের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের জন্য এটি উপকারী হতে পারে।
লেবুর খোসা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্যও ভাল। এতে থাকা কিছু প্রাকৃতিক উপাদান খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। ফলে হৃদযন্ত্র সুস্থ থাকে এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিও কিছুটা কমতে পারে। অবশ্যই এটি কোনও ওষুধ নয়, কিন্তু নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাদ্যের অংশ হলে উপকার পাওয়া যায়।
লেবুর খোসা দাঁত ও মুখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ মুখের ক্ষতিকর জীবাণু কমাতে সাহায্য করে। অনেকেই শুকনো লেবুর খোসার গুঁড়ো প্রাকৃতিকভাবে দাঁত পরিষ্কারের কাজে ব্যবহার করেন।
কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, লেবুর খোসায় থাকা উপাদান শরীরের কোষকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে, যা ভবিষ্যতে কিছু গুরুতর রোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক হতে পারে।
কীভাবে ব্যবহার করবেন? লেবুর খোসা ব্যবহারের আগে ভাল করে ধুয়ে নিন। তারপর কুচি করে কেটে স্যালাড, দই, স্যুপ বা তরকারিতে অল্প পরিমাণে দিতে পারেন। চাইলে শুকিয়ে গুঁড়ো করেও ব্যবহার করা যায়।
সব মিলিয়ে বলা যায়, লেবুর খোসা না ফেলে একটু সচেতনভাবে ব্যবহার করুন। এই সাধারণ খোসাই হতে পারে আপনার দৈনন্দিন স্বাস্থ্যের বড় সহায়ক।
