পিরিয়ডসের রক্ত দিয়ে রূপচর্চা! কী শুনেই আঁতকে উঠলেন বা ঘেন্নায় সিঁটিয়ে গেলেন? তবে এটাই কিন্তু বর্তমানে ট্রেন্ডিং! সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমত চর্চায় রয়েছে এই রূপচর্চার পদ্ধতি। নাম? মেন্সট্রুয়াল মাস্কিং। 

কী হয় এতে? এই রূপচর্চার পদ্ধতিতে নিজের ঋতুস্রাবের রক্ত নিয়ে নিজেরই মুখে লাগাতে হয়। যেমন ভাবে অন্যান্য প্যাক বা মাস্ক লাগান, এই ক্ষেত্রেও একইভাবে পিরিয়ড ব্লাড নিয়ে গোটা মুখে ভালভাবে লাগাতে হয়। কয়েক মিনিট রেখে তারপর ভাল করে মুখ ধুয়ে নিলেই হয়ে গেল! 

কিন্তু কেন করা হয় এই অদ্ভুত রূপচর্চা? নেটপ্রভাবীদের মতে, এটি নাকি প্রাকৃতিক রেটিনল। ঋতুস্রাবের রক্তে নাকি ভরপুর স্টেম সেল ও, প্রোটিন এবং সাইটোকাইন্স থাকে। আর এই উপাদানগুলোই ত্বকের উজ্জ্বলতা ফেরাতে সাহায্য করে। ত্বককে মেরামত করে প্রদাহ কমায় এই রক্ত। 

বিশ্বের সবথেকে বড় বায়োমেডিক্যাল লাইব্রেরি, যা মূলত আমেরিকার দ্বারা পরিচালিত হয়, সেই ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফেডিসিনের তরফে সম্প্রতি একটি গবেষণা পত্র প্রকাশিত হয়েছে। সেখানেই জানানো হয়েছে ঋতুস্রাবের রক্ত আদতেই ত্বক, কোষ মেরামত করতে, ক্ষত সারাতে সাহায্য করে। এই গবেষণায় গবেষকরা পরীক্ষা করে দেখেছেন যে কীভাবে পিরিয়ডসর রক্ত ক্ষতের উপর কাজ করে। ক্ষতকে দ্রুত মেরামত করে সারাতে, আরও বেশি মাত্রায় ব্লাড ভেসেল তৈরি করতে, কোলাজেন বাড়াতে সাহায্য করে এই রক্ত। ঘেন্না পেলেও ঋতুস্রাবের রক্ত ত্বককে আরও সজীব রাখে, গ্লো আনে। কেরাটিনোসাইটস এবং ফাইব্রোব্লাস্টের তুলনায় এই রক্ত দ্রুত এবং ভাল কাজ করে ক্ষত সারানোর জন্য। 

সহজ ভাষায় বললে, কোনও ক্ষত বা কোষ মেরামতিতে ঋতুস্রাবের রক্ত সাহায্য করে। তবে এই রক্ত শুদ্ধ করে, প্রসেস করার পর ব্যবহার করতে হবে। মেন্সট্রুয়াল কাপ বা প্যাড বা যোনি থেকে সোজাসুজি তুলে এই রক্ত মুখে লাগাবেন না যেন! 

এছাড়া, আরও কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। পিরিয়ড ব্লাড শুদ্ধ নয়। ফলে সেটা সরাসরি মুখে লাগানো যাবে না, বিশেষ করে যাঁদের ত্বকে কোনও কাটাছেঁড়া আছে, ব্রণ রয়েছে বা ওপেন পোরসের সমস্যা আছে। এতে ত্বকের স্বাভাবিক পিএইচ লেভেল গড়বড় হতে পারে। তখন লাভের লাভ কিছুই হবে না, উল্টে ক্ষতি হবে। ফলে বিষয়টা যতই সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ডিং থাকুক না কেন, হুটহাট এটা দিয়ে রূপচর্চার না করাই শ্রেয়।