আপাতভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও গোছানো ঘরেও কিছু অদৃশ্য স্বাস্থ্যঝুঁকি লুকিয়ে থাকতে পারে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কিছু নিরীহ মনে হওয়া জিনিস আসলে পেটের সমস্যা তৈরি করতে পারে বা সার্বিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে। এই বিষয়ে গ্যাস্ট্রোএনটেরোলজিস্ট ড. সৌরভ সেঠি তাঁর সাম্প্রতিক ইনস্টাগ্রাম পোস্টে জানিয়েছেন তিনটি বিষাক্ত গৃহস্থালির জিনিস, যেগুলি অবিলম্বে ফেলে দেওয়া উচিত।
অনেক সুগন্ধি মোমবাতিতে ফথ্যালেটস থাকে, যা হরমোনের ক্ষতি করতে পারে। আর প্যারাফিন ওয়াক্সও থাকে, যা জ্বললে ধোঁয়া এবং ভিওসি নির্গত করে। ড. সৌরভ বলেন, এই রাসায়নিকগুলো অ্যালার্জি, শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়াতে পারে, এমনকি সময়ের সঙ্গে অন্ত্রেরও ক্ষতি করতে পারে। কিছু ভাল বিকল্পের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, গন্ধহীন সয়, নারকেল বা বি ওয়্যাক্স মোমবাতি ব্যবহার করতে। যেগুলি প্রতিদিনের ব্যবহারের জন্য নিরাপদ।
প্লাস্টিকের ছুরি থেকে খাবারে ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণিকা মিশে যেতে পারে। বছরের পর বছর ব্যবহারের ফলে এই ঝুঁকি আরও বাড়ে। তিনি ব্যাখ্যা করেন, এই মাইক্রোপ্লাস্টিক শরীরে জমে গিয়ে দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে। আরও একটি ভাল বিকল্প হল সঠিকভাবে তৈরি করা কাঠ বা বাঁশের বোর্ড। তিনি উল্লেখ করেন, কাচ স্বাস্থ্যকর হলেও এটি ছুরি দ্রুত ভোঁতা করে দেয়, তাই সব সময় এটি ব্যবহার করা ভাল বিকল্প নয়।
“পুরোনো ফ্রাইপ্যানে অনেক সময় পিএফওএ ব্যবহার করা হয়, যা প্রজনন এবং হরমোনজনিত সমস্যার সঙ্গে যুক্ত,” বলেন ড. সেঠি। তিনি আরও জানান, আধুনিক নন-স্টিক প্যানে পিএফওএ না থাকলেও খোঁচা লাগলে সেখান থেকে ক্ষুদ্র কণিকা এবং ভিতরে আটকে থাকা বিভিন্ন রাসায়নিক খাবারে মিশে যেতে পারে। তাঁর পরামর্শ, “স্টেইনলেস স্টিল, কাস্ট আয়রন বা খাঁটি সিরামিক কুকওয়্যার দৈনন্দিন রান্না এবং দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যের জন্য অনেক বেশি নিরাপদ বিকল্প।”
সব মিলিয়ে বলা যায়, আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক সাধারণ জিনিসই অজান্তে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে। সামান্য সচেতনতা এবং সঠিক বিকল্প ব্যবহার করলে এই ঝুঁকি থেকে সহজেই বাঁচা সম্ভব। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ঘর মানেই শুধু বাইরে ঝকঝকে পরিবেশ নয়, ভিতরের নিরাপত্তাও জরুরি। তাই স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে ছোট ছোট পরিবর্তন আনলেই পরিবারকে দীর্ঘমেয়াদে সুরক্ষিত রাখা যায়।
