আজকাল ওয়েবডেস্ক: বাড়ন্ত বয়সে ছোটদের দুষ্টুমির শেষ থাকে না। অনেক সময় তারা নিজেদের সেই দুষ্টুমি ঢাকতে মিথ্যে কথাও বলে ফেলে। কিন্তু সন্তান যদি বারবার, কারণে-অকারণে মিথ্যে কথা বলতে থাকে, তাহলে বাবা-মায়ের জন্য পরিস্থিতি বেশ চিন্তার হয়ে যায়। অনেক সময় বাবা-মা বাচ্চাকে মারাত্মক বকঝকা করেন। কিন্তু সত্যিই কি বকঝকা করে কাজের কাজ হয়? বরং এই সমস্যা মোকাবিলায় ধৈর্য ও সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করা জরুরি।

১.  শান্ত থাকুন এবং কারণ বোঝার চেষ্টা করুন: প্রথমেই সন্তানের উপর রেগে যাবেন না বা অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাবেন না। শান্তভাবে তার সঙ্গে কথা বলুন। সে কেন মিথ্যে বলছে, নেপথ্যের কারণটা বোঝার চেষ্টা করুন। অনেক সময় শিশুরা শাস্তি বা বকাবকির ভয়ে, মনোযোগ আকর্ষণের জন্য, বা কোনও কিছু নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে মিথ্যে বলে। মূল কারণটা ধরতে পারলে সমাধান করা সহজ হবে।

২.  সত্য বলার জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করুন: সন্তানকে বোঝান যে সত্যি কথা বললে, এমনকী যদি সে কোনও ভুল করেও ফেলে, তাকে খুব বেশি বকাবকি বা কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে না। সন্তানকে আশ্বস্ত করুন যে আপনি তার সমস্যাটা শুনবেন এবং তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করবেন। যদি সত্যি বলার পর সন্তান অতিরিক্ত শাস্তির ভয় পায়, তবে সে মিথ্যার আশ্রয় নিতে পারে।

৩.  সত্য বলার গুরুত্ব ও মিথ্যার পরিণতি বোঝান: সন্তানের বয়স বুঝে তাকে বোঝান কেন সত্যি কথা বলা জরুরি। মিথ্যা বললে কীভাবে বিশ্বাস নষ্ট হয়, সম্পর্ক খারাপ হয় এবং ভবিষ্যতে কী ধরনের সমস্যা হতে পারে। সন্তান ছোট হলে সহজ উদাহরণ দিয়ে বা গল্পের মাধ্যমে বোঝান। সততার ভাল দিকগুলো তুলে ধরুন।

৪.  নিজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন: শিশুরা যা দেখে, তাই শেখে। বাবা-মা হিসেবে আপনাদের নিজেদের আচরণে সততা বজায় রাখতে হবে। ছোটখাটো বিষয়েও মিথ্যে এড়িয়ে চলুন। যদি কখনও ভুল করেন, তা স্বীকার করুন। আপনার এই আচরণ সন্তানের মধ্যে সততার মূল্যবোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।

৫.  সততার জন্য প্রশংসা করুন এবং সমাধানের উপর জোর দিন: যখন আপনার সন্তান সত্যি কথা বলে, বিশেষ করে যদি সেই সত্যিটা বলা তার জন্য কঠিন হয়, তখন অবশ্যই তার প্রশংসা করুন। এতে সে সত্যি বলতে উৎসাহিত হবে। মিথ্যে বললে তাকে শাস্তি দেওয়ার উপর বেশি জোর না দিয়ে, যে কারণে সে মিথ্যে বলেছে সেই মূল সমস্যাটি কীভাবে সমাধান করা যায়, সেদিকে মনোযোগ দিন। আলোচনা করুন এবং সঠিক আচরণ করতে সাহায্য করুন।