নাটকীয়তা, ঝামেলা আর অফুরন্ত অভিযোগ! নিয়মিত এই তিনটি বিষয় নিয়ে মেতে থাকেন এমন ধরনের মানুষ থেকে সাবধান, হুঁশিয়ারি প্রাক্তন গোয়েন্দার। জীবনে চলার পথে বহু মানুষের সঙ্গে আলাপ হয়। কিন্তু সকলেই কি আপনার শুভাকাঙ্ক্ষী? মার্কিন সিক্রেট সার্ভিসের এক প্রাক্তন বিশেষ এজেন্টের মতে, আমাদের চার পাসেক অন্তত তিন ধরনের মানুষ আছেন, যাঁদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখাই শ্রেয়। পরামর্শটি যিনি দিয়েছেন, তাঁর নাম এভি পম্পাওরাস। তিনি একাধারে টিভি ভাষ্যকার, সাংবাদিক এবং লেখিকা।
এভি যে শুধু কথার কথা বলছেন, তা নয়। তাঁর এই বক্তব্যের নেপথ্যে রয়েছে মনস্তত্ত্ব এবং মানবচরিত্র নিয়ে গভীর জ্ঞান। তিনি ফরেনসিক সাইকোলজি এবং সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। পাশাপাশি, মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের পলিগ্রাফ ইনস্টিটিউট থেকে মিথ্যা শনাক্তকরণ, মানুষের আচরণ এবং তার প্রভাবের মতো বিষয়েও তিনি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।
সাম্প্রতিক একটি অনুষ্ঠানে এভি মূলত তিন ধরনের মানুষের থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
১। অফুরন্ত নাটকীয়তা
প্রথমেই তিনি সেই সব মানুষের কথা বলেছেন, যাঁদের জীবনে নাটকীয়তার শেষ নেই। তাঁর কথায়, “এই ধরনের মানুষের জীবনে সর্বক্ষণ কিছু না কিছু গোলমাল লেগেই থাকে।” আপনি হয়তো ভাবছেন, সমস্যাটা তো তাঁর, আপনার কী? কিন্তু বিশেষজ্ঞের মতে, এই ধারণা ভুল। নাটকীয়তা সংক্রামক। আগ্নেয়গিরির মতো জ্বলতে থাকা মানুষের পাশে থাকলে সেই উত্তাপ এক দিন আপনার গায়েও লাগবে। তাঁদের সমস্যা অজান্তেই আপনার জীবনে প্রবেশ করে আপনাকেও অস্থির করে তুলবে।
২। বিবাদই যাঁদের স্বভাব
এমন কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা সর্বক্ষণ কারও না কারও সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। মজার বিষয় হল, তাঁরা মুখে হয়তো বলবেন যে, তাঁরা নিজেরা ঝামেলা-অশান্তি পছন্দ করেন না, কিন্তু তাঁদের আচরণ ঠিক উল্টো কথা বলে। এভির মতে, “যাঁরা বলেন ঝামেলা পছন্দ করেন না, অথচ সব সময় তার মধ্যেই জড়িয়ে পড়েন, তাঁরা আসলে নিজেরাই সমস্যা তৈরি করেন। সেটাই তাঁদের অভ্যাস।"
৩। অভিযোগ এবং দোষারোপের প্রবণতা
সবশেষে এভি উল্লেখ করেছেন এমন কিছু মানুষের কথা যাঁরা সর্বক্ষণ কিছু না কিছু নিয়ে অভিযোগ করেন। কিংবা অন্যদের দোষারোপ করেন। তিনি তাঁর সিক্রেট সার্ভিসের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়ে বলেন, “আমাদের ওখানে কারও অভিযোগ শোনার সময় ছিল না। কেউ জানতেও চাইত না আমাদের কোনও অভিযোগ আছে কি না।” তাঁর বিশ্লেষণ, যাঁরা কেবলই অভিযোগ করেন কিন্তু সমাধান খোঁজার চেষ্টা করেন না। কিংবা সর্বদা অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপান, তাঁরা দায়িত্ব নিতে ভয় পান। কোনও কিছুর দায়বদ্ধতা নিতে শেখেননি বলেই অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপান তাঁরা।
আরও পড়ুন: মধুচক্র চালানোয় অভিযুক্ত অভিনেত্রী অনুষ্কা দাস! সেক্স র্যাকেট থেকে উদ্ধার বাংলা সিরিয়ালের আরও ২ নায়িকা! তুলকালাম মহারাষ্ট্রে
জীবনের লক্ষ্যে পৌঁছতে গেলে এই স্বভাবই সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কারণ, কোনও কিছুই তাঁদের দোষে হয় না। সবকিছুর জন্য অন্য কেউ দায়ী। এই অজুহাত তাঁদের এক জায়গায় দাঁড় করিয়ে রাখে। তাঁরা নিজেদের ভাগ্যের শিকার বলে মনে করেন, যেখানে নিজেদের জীবনের উপর তাঁদের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই।
এভির এই পরামর্শ যে কতটা বাস্তবসম্মত, তার প্রমাণ মিলেছে সমাজমাধ্যমে। ভিডিওটি প্রকাশ পেতেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। ইতিমধ্যেই ৩০ লক্ষেরও বেশি মানুষ দেখেছেন ভিডিওটি। লাইক করেছেন দেড় লক্ষেরও বেশি মানুষ। এক জন মন্তব্য করেছেন, “উনি এক্কেবারে ঠিক কথা বলেছেন! এই ধরনের মানুষেরা জীবনীশক্তি শুষে নেয়, এদের থেকে দূরে থাকুন...।”
