আজকাল ওয়েবডেস্ক: শরীরে সামান্য কালশিটে দাগ বা দাঁতের মাড়ি থেকে রক্তপাত, এমন উপসর্গ আমরা প্রায়শই উপেক্ষা করে যাই। কিন্তু এই মামুলি লক্ষণই হতে পারে লিউকেমিয়ার মতো কর্কট রোগের পূর্বাভাস। লিউকেমিয়া, ব্লাড ক্যানসার বা রক্তের ক্যানসার নামেই পরিচিত। এই রোগে আক্রান্ত হলে অস্থিমজ্জা থেকে অস্বাভাবিক শ্বেত রক্তকণিকার উৎপাদন অনিয়ন্ত্রিতভাবে বেড়ে যায়, যা সুস্থ রক্তকণিকা তৈরিতে বাধা দেয়। ফলে শরীরে নানা উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, লিউকেমিয়ার লক্ষণগুলি প্রায়শই বিভিন্ন সাধারণ রোগের উপসর্গের সঙ্গে মিলে যায়, যা রোগ নির্ণয়ে বিলম্বের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই কয়েকটি নির্দিষ্ট সঙ্কেতের দিকে নজর রাখা অত্যন্ত জরুরি।
আরও পড়ুন: ৭ কোটি শুক্রাণু চাই! চাহিদা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ৫০ সঙ্গীর সঙ্গে একটানা সঙ্গম রানিমার! কোথায় থাকে এই রানি?
আরও পড়ুন: অন্য জাতের সঙ্গে সঙ্গম, তাতে জন্মানো সন্তানরাই বদলে দিচ্ছে বংশের স্বভাব-চরিত্র! এ কী দেখলেন গবেষকরা?
১। অস্বাভাবিক ক্লান্তি ও দুর্বলতা: লিউকেমিয়ার অন্যতম প্রধান লক্ষণ হল ক্রমাগত ক্লান্তি। শরীরে লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যা কমে যাওয়ায় অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা দেখা দেয়। এর ফলে পর্যাপ্ত অক্সিজেন শরীরের কোষে পৌঁছতে পারে না, ফলস্বরূপ রোগী সর্বক্ষণ ক্লান্ত ও অবসন্ন বোধ করেন।
২। বারবার সংক্রমণ: শ্বেত রক্তকণিকা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার মূল সৈনিক। লিউকেমিয়ায় অস্বাভাবিক শ্বেত রক্তকণিকা তৈরি হওয়ায় শরীরের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। ফলে জ্বর, সর্দি-কাশি, গলা ব্যথা বা অন্য কোনও ধরনের সংক্রমণে রোগী বারবার আক্রান্ত হতে থাকেন।
৩। রক্তপাত ও কালশিটে দাগ: অনুচক্রিকা বা প্লেটলেট রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। লিউকেমিয়ায় প্লেটলেটের সংখ্যা কমে যাওয়ায় শরীর জুড়ে কালশিটে দাগ দেখা যায়। সামান্য আঘাতেই রক্তপাত শুরু হয় এবং সহজে বন্ধ হতে চায় না। নাক বা দাঁতের মাড়ি থেকে রক্তপাতও একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ।
৪। ফোলা লসিকা গ্রন্থি (লিম্ফ নোড): ঘাড়, বগল বা কুঁচকির লসিকা গ্রন্থিগুলি কোনও কারণ ছাড়াই ফুলে যাওয়া লিউকেমিয়ার ইঙ্গিত হতে পারে।
৫। অন্যান্য উপসর্গ: এগুলি ছাড়াও, অনেকের ক্ষেত্রে গাঁটে বা হাড়ে ব্যথা, প্লীহা (স্প্লিন) বড় হয়ে যাওয়ার কারণে পেটের বাঁ দিকে অস্বস্তি বা পেট ভার হয়ে থাকা, খিদে কমে যাওয়া এবং ওজন হ্রাস পাওয়ার মতো লক্ষণও দেখা যায়। রাতে ঘুমের মধ্যে ঘেমে যাওয়াও এই রোগের অন্যতম সঙ্কেত।
চিকিৎসকদের মতে, এই উপসর্গগুলির কোনওটি যদি দীর্ঘ দিন ধরে শরীরে দেখা যায়, তবে আতঙ্কিত না হয়ে অবিলম্বে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হলে আধুনিক চিকিৎসার মাধ্যমে লিউকেমিয়ার মোকাবিলা করা অনেকাংশেই সম্ভব। তাই সচেতনতাই প্রতিরোধের প্রথম ধাপ।
