আজকাল ওয়েব ডেস্ক: আজ আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোকবেণু। মহালয়ার শুভক্ষণে পিতৃপক্ষের অবসান হয়ে শুরু মাতৃপক্ষ। কথিত আছে, মহালয়ার দিন অসুর ও দেবতাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। হিন্দু ধর্মে মহালয়ার গুরুত্ব অনেক। কিন্তু মহালয়া কি শুভ না অশুভ, এই নিয়ে মত পার্থক্য রয়েছে বিস্তর। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই বিষয়ে।
বাঙালির কাছে মহালয়া মানেই দুর্গাপুজোর শুরু। এখন তো প্রায় সব বড় পুজোর উদ্বোধন হয়ে যায় মহালয়াতেই। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ঠাকুর দেখার পালাও শুরু হয়ে যায়। সেই কারণে বাঙালির কাছে আসন্ন উত্স বের আগমনী সুর নিয়ে আসে মহালয়া। এদিন সকাল থেকে মোবাইল ভরে ওঠে শুভ মহালয়া মেসেজে। কিন্তু অনেকে আবার মহালয়ার শুভেচ্ছা জানানোর ঘোরতর বিরোধী। এই দিনটি কোনও শুভ অনুষ্ঠানের দিন নয় বলে তাঁদের মত।
পিতৃপক্ষের অবসান ও দেবীপক্ষের সন্ধিক্ষণই মহালয় হিসাবে চিহ্নিত। মহালয়া অর্থাৎ মহান যে আলয়, এই কথাটির ব্যাখ্যা নানা ভাবে করেছেন শাস্ত্র বিশেষজ্ঞরা। হিন্দু রীতি অনুসারে মহালয়া হল—প্রয়াত তথা শ্রদ্ধেয় প্রিয় পূর্বপুরুষদের জলদান বা তর্পণ করার সবচেয়ে ভাল তিথি। শাস্ত্র অনুসারে এই দিনের সঙ্গে দুর্গাপুজোর কোনও সম্পর্ক নেই। বাঙালির কাছে মহালয়ার বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। আবার এদিনই দেবীর দুর্গার চক্ষুদান হয়। পুরাণ থেকে মহাভারত নিয়ে রয়েছে নানা কাহিনি।
মহালয়াকে অশুভ বলার যুক্তি হল, এই দিনে পিতৃ পুরুষদের উদ্দেশ্যে তর্পণ করার অর্থাৎ জলদান করার রীতি রয়েছে। পিতৃপুরুষদের স্মরণ করার দিন বলে অনেকে মনে করেন এদিন আসলে শোক পালনের দিন। এবার মহালয়াকে শুভ বলার পিছনে কারণ রয়েছে।
একপক্ষের মতে, এদিন থেকেই মাতৃপক্ষের সূচনা, সব অশুভ শক্তির বিনাশ হয়, তাই মহালয়া শুভ। দুর্গাপুজো বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তেই থাকুক না কেন, সারা বছর ধরে দুর্গাপুজোর ওই চারটে দিনের জন্য অপেক্ষা করে থাকে বাঙালি। এছাড়াও হিন্দু ধর্মের যে কোনও শুভ কাজেই পিতৃপুরুষদের স্মরণ করা হয়। ফলে তর্পণের বৃহত্তর অর্থ আসলে জগৎব্যাপী এক মহামিলনক্ষেত্রের ইঙ্গিত দেয়। সেটিও কোনও ভাবেই অশুভ হতে পারে না। তবে শুভ হোক কিংবা অশুভ যাই হোক না কেন, যে কোনও উৎসবই আসলে মিলনক্ষেত্র।
