দীপাবলির সময় আকাশে আলো এবং শব্দের উল্লাস শিশুরা উপভোগ করে। কিন্তু এর একটি গোপন কুপ্রভাব হল বায়ু দূষণের মাত্রা হঠাৎ বাড়া, যা শিশুদের ফুসফুসকে গুরুতরভাবে প্রভাবিত করতে পারে। ঝুঁকি বোঝা এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
নিয়োনাটোলজি এবং পেডিয়াট্রিকস ড. অক্ষয় মেহতা শিশুদের দীপাবলির সময় নিরাপদ রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং পরামর্শ শেয়ার করেছেন।
শিশুর ফুসফুসের উপর বাজির প্রভাব
দীপাবলি আনন্দ, আলো এবং উদযাপনের উৎসব। কিন্তু বাজি পোড়ানোর কারণে প্রচুর ধোঁয়া, ধুলো এবং বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হয়, যা শিশুদের জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বাজি থেকে সালফার ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড এবং ফাইন পার্টিকুলেট ম্যাটার নির্গত হয়। বিশেষ করে শীতের রাতে ধোঁয়া নিচের স্তরে জমে থাকে। শিশুরা দ্রুত শ্বাস নেয় এবং বাইরে বেশি সময় কাটায়, তাই এই দূষকগুলি গভীরভাবে শ্বাসনালি এবং ফুসফুসে সহজে প্রবেশ করে।
এই ধোঁয়া শিশুদের মধ্যে অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট, কাশি, গলাব্যথা এবং বুক চেপে ধরা সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। সুস্থ শিশুরাও সংক্ষিপ্ত শ্বাসকষ্ট, ক্লান্তি বা দীর্ঘস্থায়ী কাশি অনুভব করতে পারে। এই সমস্যা দীর্ঘমেয়াদি বা এর পুনরাবৃত্তি হলে ফুসফুসের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হতে পারে, অক্সিজেন গ্রহণ কমে যেতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসযন্ত্রের রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
ড. মেহতা বলেন, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের বাজি পোড়ানোর সামনে রাখা উচিত নয়। সম্ভব হলে পরিবেশ বান্ধব উদযাপন বেছে নিন, যাতে শিশুদের স্বাস্থ্য রক্ষা হয় এবং উৎসবের আনন্দ কমে না।
শিশুর ফুসফুস রক্ষার টিপস
দূষণের মাত্রা বেশি থাকলে বিশেষ করে সকালে এবং সন্ধ্যায় বাইরে না যাওয়া।
জানালা বন্ধ রাখা এবং বাইরে গেলে শিশুকে প্রোটেকটিভ মাস্ক পরানো।
আলো, প্রদীপ, গান এবং মিষ্টি দিয়ে পরিবেশ বান্ধব উদযাপন করা।
পর্যাপ্ত জল খাওয়ানো এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল যেমন কমলা, পেয়ারা, আমলা খাওয়ানো।
দীপাবলির আলো এবং আনন্দ উপভোগ করার পাশাপাশি আমাদের উচিত শিশুদের স্বাস্থ্যের প্রতিও সমান যত্নশীল থাকা। বাজির ঝলক এবং শব্দের আকর্ষণ যতই হোক, একটি শিশুর সুস্থ ফুসফুসের তুলনায় একেবারেই গুরুত্বপূর্ণ নয়। পরিবেশবান্ধব এবং সচেতন উদযাপনই এই উৎসবের প্রকৃত আলো ছড়াতে পারে যেখানে আনন্দের সঙ্গে থাকবে নিরাপত্তা, আর উৎসবের উজ্জ্বলতা মিলবে শিশুর হাসিতে। তাই নিয়ম মেনে সঠিক উপায়ে উদযাপনই সুস্থতার অন্যতম চাবিকাঠি।
