বাড়ন্ত বয়সে সন্তানের শরীর নিয়ে চিন্তিত থাকেন কম-বেশি সকল অভিভাবকই। খুদের উচ্চতা না বাড়লে চিন্তার ভাঁজ পড়ে বাবা-মায়ের কপালে। যদিও অনেক ক্ষেত্রেই লম্বা না হওয়ার পিছনে থাকে জিনগত কারণ। আবার শিশুর পুষ্টির ঘাটতিও উচ্চতা না বাড়ার কারণ হয়। বাড়ন্ত বয়সে সন্তানের খাদ্যতালিকার উপর বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন। সেই সঙ্গে নিয়ম করে একটি পাউডার খাওয়ালে সুফল দেখতে পাবেন। যদি আপনার সন্তানের বয়স ৮ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে হয় তাহলে তার উচ্চতার বাড়াতে এই ঘরোয়া উপায়টি অবলম্বন করে দেখতে পারেন। কীভাবে বানাবেন এই পাউডার এবং কোন নিয়মে খেতে হবে, জেনে নিন-
উপকরণ
তিলের বীজ - ১ চা চামচ
বাদাম - ১০টি
আখরোট - ৫-৬টি
কুমড়োর বীজ - ১ চা চামচ
নারকেল (কুঁচি করা) - ১ চা চামচ
খেজুরেরগুঁড়ো - ১ চা চামচ
কোকোপাউডার - ১ চা চামচ
বানানোর পদ্ধতি
প্রথমে একটি প্যানে তিসির বীজ, বাদাম, আখরোট, কুমড়োর বীজ এবং নারকেল হালকা করে ভাজুন।
এবার,এই সমস্ত ভাজা উপাদান একটি ব্লেন্ডারে দিয়ে ভাল করে পিষে নিন। এই গুঁড়োতে খেজুর গুঁড়ো এবং কোকো পাউডার যোগ করুন। পাউডারটি একটি এয়ারটাইট জারে রাখুন।
আরও পড়ুনঃ বর্ষায় বেড়েছে জয়েন্টের ব্যথা? কোন কোন নিয়ম মেনে চললে কমবে আর্থ্রাইটিসের ভোগান্তি?
কীভাবে খেতে হবে
প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক চামচ এই পাউডার গরম দুধ বা জলে মিশিয়ে শিশুকে পান করতে দিন। রাতে এটি খেলে শিশুর বৃদ্ধির হরমোনকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করবে। এই পাউডারে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান শিশুদের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং হাড়কে শক্তিশালী করে।
পাউডারে থাকা উপাদানগুলোর উপকারিতা
আখরোট- এতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং মেলাটোনিন থাকে, যা হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং ভাল ঘুমের জন্য সহায়ক।
তিসির বীজ - ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ ফ্ল্যাক্স সিড হরমোনের ভারসাম্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আমন্ড- আর্জিনিন নামক একটি উপাদান থাকে আমন্ডে, যা প্রাকৃতিকভাবে বৃদ্ধির হরমোন তৈরিতে সাহায্য করে।
কুমড়োর বীজ - এটি জিঙ্ক সমৃদ্ধ, যা বৃদ্ধির হরমোন সংশ্লেষণ এবং হাড়ের বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য।
নারকেল- এতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং খনিজ পদার্থ রয়েছে, যা বিপাক উন্নত করে এবং শরীরকে বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করে।
খেজুরের গুঁড়ো - এটি শক্তি এবং খনিজ পদার্থের একটি প্রাকৃতিক উৎস, যা শরীরের টিস্যু তৈরিতে সাহায্য করে।
কোকো পাউডার- ম্যাগনেশিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট কোকো পাউডারে যা পেশি এবং হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল।

এছাড়া শিশুকে নিয়মিত কী কী খাওয়াবেন
• দুধ- দুধে ভরপুর মাত্রায় ক্যালশিয়াম ও প্রোটিন থাকে। যা বাড়ন্ত বয়সে শিশুর কোষ বৃদ্ধিতে এবং উচ্চতা বাড়াতে সাহায্য করে। খুদে দুধ খেতে না চাইলে পনির, টক দই, চিজও খাওয়াতে পারেন।
• ডিম- আমিষ প্রোটিনের মধ্যে ডিম খুবই ভাল খাবার। ডিমের হলুদ অংশে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে, যা শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটাতে খুব উপকারী।
• মুরগির মাংস- প্রোটিনে ভরপুর মুরগির মাংস শিশুর হাড় ও মাংসপেশি মজবুত করে। শিশুকে নিয়মিত চিকেন খাওয়ালে তা শিশুর উচ্চতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
• সয়াবিন- সয়াবিনে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে, যা দেহের কোষ ও হাড়ের গঠনে সাহায্য করে। তাই শিশুদের ডায়েটে অবশ্যই সয়াবিন রাখুন।
• শাকসবজি- মেথি, পালং শাক, বাঁধাকপি, লাউয়ের মতো বিভিন্ন ধরনের শাকসবজিতে একাধিক ভিটামিন, আয়রন ও ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে। যা বাড়ন্ত বয়সে শিশুদের উচ্চতা বাড়াতে সহায়ক।
