আজকাল ওয়েবডেস্ক: ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ’ কর্মসূচিতে প্যাটিস বিক্রতাদের বেধড়ক মারধরের অভিযোগে তিন জনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। ধৃতদের নাম সৌমিক গোলদার, স্বর্ণেন্দু চক্রবর্তী এবং তরুণ ভট্টাচার্য। গত রবিবারের ব্রিগেডের ঘটনায় বেশ কিছু ভিডিও সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। তা দেখেই অভিযুক্তদের শনাক্ত করে হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এই ঘটনা নিয়ে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয় সমাজমাধ্যমে। রাজনীতির বিভিন্ন পক্ষ এই নিয়ে সওয়াল করতে শুরু করে। বিজেপি বিরোধীদলগুলি বিষয়টিকে তুলনা করতে শুরু করেন মহম্মদ আখলাখ বা দেশের অন্যত্র খাদ্যভ্যাসের কারণে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে। যদিও বিজেপির তরফ থেকে ঘটনাটিকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলেই দাবি করা হয়।
গত ৭ ডিসেম্বর ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে ‘পাঁচ লক্ষ কণ্ঠে’ গীতা পাঠের আয়োজন করা হয়েছিল। আয়োজক সংগঠন ছিল ‘সনাতন সংস্কৃতি সংসদ’। সেখানেই দু'জন ছাপোষা প্যাটিস বিক্রেতাকে 'আমিষ' প্যাটিস বিক্রির অভিযোগে বেধড়ক মারধর করেন কর্মসূচিতে আগত কয়েকজন। তাঁদের প্রশ্ন ছিল সনাতনী কর্মসূচিতে আমিষ খাবার কেন বিক্রি করা হচ্ছে। এই প্রশ্ন বার বার জিজ্ঞাসা করা হয়। ভিডিও দেখা গিয়েছে, একজন গলা চড়িয়ে প্যাটিস বিক্রেতার নামও জিজ্ঞেস করছেন। এমনকি কান ধরে ওঠবসও করানো হয়।
ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “বিক্রেতারা তো আমিষ-নিরামিষ ধরে বিক্রি করতে অভ্যস্ত নন। রোজ নিজেদের পণ্য নিয়ে বিক্রি করেন। যাদের প্যাটিস খাওয়ার নয়, তারা খাবেন না। কিন্তু বিক্রেতাকে মারবেন কেন? ওই জায়গায় কর্মসংস্থান, আয়ের জায়গা। কেউ কিছু না বুঝে হঠাৎ মারলেন কেন?”
ঘটনার ভিডিও এবং ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই চারিদিকে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। মঙ্গলবার ময়দান থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৮৯ (২), ১২৬ (২), ১১৫ (২), ২৯৯, ৩৫১ (৩), ৩২৩ (২) ধারায় মামলা রুজু হয়। ঘটনার ভিডিও বিশ্লেষণ করে বৃহস্পতিবার তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে সৌমিক উত্তর ২৪ পরগণার গোবরডাঙার বাসিন্দা, তরুণ হুগলির উত্তরপাড়া এবং স্বর্ণেন্দু অশোকনগরের বাসিন্দা।
রবিবার ময়দানে ছিল গীতাপাঠের কর্মসূচি। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস, বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা। লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে ২০২৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর ব্রিগেডে ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ’ কর্মসূচি হয়েছিল। এই বছরের গীতাপাঠ কর্মসূচি থেকে হিন্দুরাষ্ট্র গড়ার ডাক দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাগেশ্বর ধামের ধীরেন্দ্রকৃষ্ণ শাস্ত্রীও।
