আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রতি বছরের মতো এবারেও ২১ জুলাইয়ের আগের দিন ধর্মতলায় মঞ্চ পরিদর্শনে গেলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি। উপস্থিত তৃণমূল কর্মীদের উদ্দেশ্যে হাত নেড়ে সোজা চলে গেলেন মঞ্চের দিকে। সেখানে গিয়ে খুঁটিয়ে দেখলেন প্রস্তুতি, কথা বললেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে। প্রস্তুতি খুঁটিয়ে দেখে মাইক হাতে নিয়ে স্মরণ করলেন সেদিনের কথা, যেদিন পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন ১৩ জন কর্মী।

বললেন, ‘সিপিএমের আমলে ভোট দিতে দেওয়া হত না কাউকে। এমনকি, বিভিন্ন মাল্টিস্টোর বিল্ডিংয়ে তালা দিয়ে রেখে দেওয়া হত। গ্রামগঞ্জেও ভোট দিতে দিত না। এই সবকিছুর বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন হয়েছিল। আমাদের দাবি ছিল নো আইডি কার্ড, নো ভোট। সিপিএমের কোনও ক্ষমতাই ছিল না সেদিন আমাদের আটকানোর, গণতন্ত্রের কন্ঠরোধ করার। এমন গুলি চালিয়েছিল ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল ঘটনাস্থলেই। প্রায় ২০০ জন আহত হয়েছিলেন তার মধ্যে ১৫০ জন পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছিলেন’।

আরও পড়ুন: গাড়ি নিয়ে বেরোলে খেয়াল রাখুন, ২১ জুলাই যান নিয়ন্ত্রণ শহরের এই রাস্তাগুলিতে, কলকাতা পুলিশের বিশেষ নির্দেশিকা

তৃণমূল সুপ্রিমোর কথায়, ‘এই অনুষ্ঠান প্রায় ৩৩ বছর ধরে এখানে হয় তার কারণ এখানে অনেকগুলো প্রাণ চলে গিয়েছিল, এখানে রক্তের বন্যা বয়ে গিয়েছিল। আমাদের বছরে একটাই প্রোগ্রাম, শহিদ স্মরণে, আমরা এখানে করি। ২১ জুলাই চিরকাল চলবে, এই অনুষ্ঠান কোনওদিন বন্ধ হবে না’। এখানেই শেষ নয়, ২১ জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশ ধর্মতলায় করা নিয়ে বিগত কয়েকদিনে জল গড়িয়েছে অনেকদূর। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল সুপ্রিমো জানান, ‘এতে যাদের আপত্তি তাদের বলি, পুলিশের অনুমতি ছাড়া অনেকে নবান্ন অভিযান করে তখন কোথায় থাকে আপত্তি? ওদের তো আমাদের দেখে প্রোগ্রাম করতে হয়। কই আমরা তো ওদের দেখে প্রোগ্রাম করি না। তৃণমূলের থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত’।

প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, সোমবার সকাল ৯টা থেকে ১১টার মধ্যে শহরে যেন কোনওভাবে যানজট না হয়। সেই নির্দেশ মেনেই লালবাজারের তরফে জারি হয়েছে কঠোর নির্দেশিকা। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ২১ জুলাই ভোর ৪টে থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত যাত্রীবাহী গাড়ির উপর নিয়ন্ত্রণ থাকবে এই রাস্তাগুলিতে।

আমহার্স্ট স্ট্রিট (উত্তর থেকে দক্ষিণমুখী, বিধান সরণি (কেসি সেন স্ট্রিট থেকে বিবেকানন্দ রোড পর্যন্ত), কলেজ স্ট্রিট (দক্ষিণ থেকে উত্তরমুখী), ব্রাবোর্ন রোড (উত্তর থেকে দক্ষিণমুখী), স্ট্র্যান্ড রোড (হেয়ার স্ট্রিট থেকে রাজা উডমন্ট স্ট্রিট পর্যন্ত), বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট (পূর্ব থেকে পশ্চিমমুখী), বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট (দক্ষিণ থেকে উত্তরমুখী), নিউ সিআইটি রোড (পশ্চিম থেকে পূর্বমুখী), রবীন্দ্র সরণি (বিকে পাল অ্যাভিনিউ থেকে লালবাজার স্ট্রিট পর্যন্ত)। 

এখানেই শেষ নয়, সোমবার ভোর ৩টে থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত শহরে পণ্যবাহী গাড়ির প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে জরুরি পরিষেবা, এলপিজি, মাছ, মাংসের গাড়ি এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে। জানানো হয়েছে, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল ও সংলগ্ন এলাকায় গাড়ি পার্কিং পুরোপুরি নিষিদ্ধ থাকবে। সংলগ্ন এলাকার তালিকায় রয়েছে হেস্টিংস ক্রসিং, ক্যাথিড্রাল রোড, হসপিটাল রোড, লাভার্স লেন এবং ক্যাসুরিনা অ্যাভিনিউ। জানানো হয়েছে, ধর্মতলার দিকে যেসব রাস্তায় মিছিল যাবে, সেই সমস্ত রাস্তায় কোনও যানবাহন দাঁড়াতে দেওয়া হবে না।