আজকাল ওয়েবডেস্ক: কলকাতা বড়বাজারে ৬৫ লক্ষ টাকার তছরুপ ও জাল নথি কাণ্ডে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে পোস্তা থানায় একটি নির্দিষ্ট মামলা রুজু করেছে কলকাতা পুলিশ। অভিযুক্ত হিসেবে নাম রয়েছে বাগবাজারের বাসিন্দা সিদ্ধার্থ মোদি এবং তাঁর স্ত্রী শিল্পী মোদির। অভিযোগ দায়ের করেছেন অনন্ত গোয়েঙ্কা, যিনি আদালতে Misc. C. Case No. 130/2025 নম্বরে একটি পিটিশন দাখিল করেছিলেন। আদালতের ৯ ডিসেম্বরের নির্দেশের ভিত্তিতেই সেই পিটিশনকে এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করেছে পুলিশ।
পোস্তা থানার কেস নং ১৪৮, তারিখ ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ অনুযায়ী, ভারতীয় ন্যায় সংহিতা -এর ৩১৬(২)/৩১৬(৪)/৩১৪/৩১৮(৪)/৩৩৬(২)/৩৪০(২)/৬১(২) ধারায় মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে যে অভিযুক্ত সিদ্ধার্থ মোদি অভিযোগকারী প্রতিষ্ঠানের ‘বিজনেস ইন-চার্জ’ পদে দীর্ঘদিন কাজ করতেন এবং তাঁর উপর প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক লেনদেন ও গোপন তথ্য রক্ষার গুরুদায়িত্ব ন্যস্ত ছিল। অভিযোগকারীর দাবি, সেই অবস্থানের সুযোগ নিয়ে সিদ্ধার্থ মোদি তাঁর স্ত্রী শিলপি মোদির সঙ্গে অপরাধমূলক যোগসাজশে প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য করে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে পরিকল্পিত প্রতারণা চালান।
জানা গিয়েছে, ২০২২ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ৯ জুন পর্যন্ত তিনি অভিযোগকারী সংস্থার কালীকৃষ্ণ ঠাকুর স্ট্রিটের অফিসে বসে ভুয়ো এবং জাল ক্রয়াদেশ তৈরি করেন। এই ভুয়ো নথিগুলি ব্যবহার করে “Manamaa Fabrics” নামে একটি ফার্মে ৬৫ লক্ষ টাকা স্থানান্তর করা হয়, যা পরে ব্যক্তিগতভাবে আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রতিষ্ঠানের আর্থিক খাতে একের পর এক সন্দেহজনক লেনদেন ধরা পড়ার পরই গোটা বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আসে।
অভিযোগ রয়েছে, শুধু আর্থিক প্রতারণাই নয়, ২০২৫ সালের জুন মাসে পদত্যাগ জমা দেওয়ার পরও সিদ্ধার্থ মোদি নাকি বেআইনিভাবে প্রতিষ্ঠানের সুরক্ষিত ওয়েব পোর্টালে লগ-ইন করেন। সেখানে তিনি গ্রাহক তালিকা, পোশাকের ডিজাইন, ব্যবসায়িক পরিকল্পনাসহ বিপুল পরিমাণ মালিকানাধীন গোপন তথ্য ডাউনলোড বা স্থানান্তর করেন। অভিযোগকারীর দাবি, এই তথ্যগুলি পরবর্তীতে তিনি ও তাঁর স্ত্রী নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে অন্যায্য সুবিধা নেন এবং কোম্পানির ব্যাপক ক্ষতি করেন।
মামলায় প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গ, জালিয়াতি এবং গোপন তথ্যের অসাধু ব্যবহার- সব মিলিয়ে একাধিক গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং আর্থিক লেনদেন, নথি, ডিজিটাল প্রমাণ- সবকিছুই সংগ্রহ করা হচ্ছে। শীঘ্রই অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। বড়বাজারের ব্যবসায়ী মহলে এই কাণ্ড ইতিমধ্যেই আলোড়ন ফেলেছে এবং ব্যবসায়িক নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে।
