বিভাস ভট্টাচার্য: খাটে শুইয়ে ছিল পাঁচ মাসের ছোট্ট ভাই। পাশেই অন্য ভাইবোনরা তাকে নিয়ে খেলছিল। খেলতে খেলতেই কোনওভাবে ভাইয়ের মুখে ঢুকে যায় মুখ খোলা প্রায় এক ইঞ্চি লম্বা একটি সেফটিপিন। ভাই সেটা গিলে ফেলে। সেফটিপিন আটকে যায় শ্বাসনালীর ঠিক আগে। শুক্রবার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ইএনটি বিভাগের চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচার করে সেফটিপিনটি বের করে শিশুটিকে বিপন্মুক্ত করেন। কিন্তু পাঁচদিন আগে এই ঘটনা ঘটলেও হুগলির জাঙ্গিপাড়ার বাসিন্দা ওই শিশুটির বাবা-মা বিষয়টি প্রথমে একেবারেই বুঝতে পারেননি। বাচ্চাটির মুখ থেকে অবিরত লালা ঝরছিল এবং সেইসঙ্গে কিছু খেতেও চাইছিল না। স্থানীয় এক চিকিৎসককের কাছেও নিয়ে যাওয়া হলে তিনি শিশুটির ঠান্ডা লেগেছে বলে সেই অনুযায়ী ওষুধ দেন। কিছুতেই অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় বৃহস্পতিবার বিকেলে শিশুটির অভিভাবক তাকে নিয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে এলে এমার্জেন্সি বিভাগ থেকে শিশুটিকে ইএনটি বিভাগে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।প্রাথমিক পরীক্ষায় সন্দেহ হলে গলায় এক্সরে করিয়ে দেখা যায় সেফটিপিনটি ঠিক শ্বাসনালীর মুখে আটকে আছে। এবিষয়ে হাসপাতালের ইএনটি চিকিৎসক ডা. সুদীপ দাশ বলেন, 'শরীরের ভেতরে সেফটিপিন মুখ খোলা অবস্থায় ঢুকলে একরকমের বিপদ আর মুখ না খোলা অবস্থায় ঢুকলে আরেকরকম বিপদ। এটা বলার অপেক্ষা থাকে না মুখ খোলা সেফটিপিন অনেকবেশি বিপজ্জনক। কিন্তু এই শিশুটির ক্ষেত্রে সেরকম কিছু হয়নি কারণ সেফটিপিন শ্বাসনালীর ভেতরে প্রবেশ করেনি।' শুক্রবার ৪০ মিনিটের অস্ত্রোপচারে সেফটিপিন বের করে আনা হয়। অস্ত্রোপচারে ডা. সুদীপ দাশ ছাড়াও ছিলেন ইএনটির অপর দুই চিকিৎসক ডা. মৈনাক দত্ত এবং ডা. তনয়া পাঁজা। সেইসময় ছিলেন সার্জেন ডা. শুভ্রজ্যোতি নস্কর এবং অ্যানেসথেটিস্ট ডা. মৃদুছন্দা দাশ। শিশুটির অবস্থা এই মুহূর্তে স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
