আজকাল ওয়েবডেস্ক: ক্যালিফোর্নিয়ায় দুই মহিলার বিয়ে। তাও আবার একেবারে সনাতন হিন্দু রীতি মেনে। লেহেঙ্গা পরে মণ্ডপে প্রবেশ, মালাবদল, সাত পাক, যজ্ঞ - বাদ গেল না কিছুই। সম্প্রতি এমনই এক সমকামী যুগলের বিয়ের ভিডিও ঘিরে তোলপাড় নেটদুনিয়া।

ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, টিয়া এবং ক্যারল নামের ওই যুগল বাবা-মায়ের সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী লেহেঙ্গা পরে মণ্ডপের দিকে হেঁটে আসছেন। এর পর তাঁরা মালাবদল, অগ্নিসাক্ষী করে সাত পাক এবং যজ্ঞও সারেন। গুরুজনদের পায়ে হাত দিয়ে আশীর্বাদ নিতেও দেখা যায় তাঁদের। শেষে বিবাহ পরবর্তী অনুষ্ঠানে নাচ-গানে মেতে ওঠেন নবদম্পতি। এই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই নেটেজিনদের একাংশ যেমন তাঁদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, তেমনই অন্য একটি অংশ হিন্দু রীতির ‘অপমান’ এবং ‘উপহাস’ করা হচ্ছে বলে তীব্র সমালোচনা করেছেন।

এক্স হ্যান্ডলে এক ব্যক্তি ভিডিওটি পোস্ট করে লেখেন, “আমি সমকামী বিয়ের সম্পূর্ণ পক্ষে, কিন্তু আজ পর্যন্ত দুই পুরুষ বা দুই মহিলার মধ্যে নিকাহ হতে দেখিনি। তার জন্য হিন্দু ঐতিহ্যকেই কেন পাল্টাতে হবে? সোজা কোর্ট ম্যারেজ করে নিলেই তো হয়। এটা৷ নিছক উপহাস ছাড়া আর কিছুই নয়।”

এই পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় তীব্র সমালোচনার ঝড় ওঠে। এক জন লিখেছেন, “বিয়ে কেবল এক জন পুরুষ এবং এক জন মহিলার মধ্যেই হতে পারে। 'বিয়ে' শব্দটি দুটি ভিন্ন লিঙ্গের মানুষের মধ্যেকার বাঁধনের জন্য নির্দিষ্ট। হাজার হাজার বছরে এমন মূর্খামি কখনও ঘটেনি। আমি এটাকে ভাল বন্ধুত্ব বা অন্য কিছু বলতে পারি, কিন্তু এটা নিশ্চিত ভাবেই বিয়ে নয়।”

তবে এর বিরোধিতাও করেছেন অনেকে। অন্য এক জনের প্রশ্ন, “এতে ভুলটা কোথায়? ওঁরা শুধু হিন্দু রীতি মেনে বিয়ে করছেন। আপনারা বিরোধিতা করলে ওঁরা অন্য ধর্মের রীতি অনুসরণ করবেন। আপনারা কি সেটাই চান?”

এর পাল্টা এক জনের মন্তব্য, “জঘন্য। বিয়েকে পবিত্র থাকতে দিন, রামধনু রিমিক্স বানাবেন না।” তবে এক ব্যক্তি লেখেন, “এরা তো শুধু নিজেদের জীবন নিজেদের মতো করে কাটাচ্ছে।”

আরও পড়ুন: ‘জেলে যেতে হলেও খুন করব’! মহিলা যাত্রীদের রড নিয়ে তাড়া উবার চালকের, কারণ জানলে ভিরমি খাবেন

অন্য এক জনের মতে, “সমলিঙ্গের মধ্যে কোনও বিয়ে হয় না। এটা কেবল লোকদেখানো বা তরুণ প্রজন্মের মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলার জন্য তৈরি করা একটা নাটক। সাধারণত মগজধোলাই হওয়া মানুষই এই ধরনের কাজ করে।”

আরও এক জন রসিকতা করে প্রশ্ন তুলেছেন, “তা হলে বিবাহবিচ্ছেদ হলে কে কার বিরুদ্ধে মিথ্যে পণপ্রথার মামলা করবে আর খোরপোশই বা কে নেবে?”

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের শুনানির শুরুতে অনেকেই আশা করেছিলেন, ভারতে সমকামী বিয়ে আইনি স্বীকৃতি পেতে চলেছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সেই আবেদন খারিজ করে দিলে বহু এলজিবিটিকিউ+ যুগলের আশাভঙ্গ হয়। শীর্ষ আদালত অবশ্য সমকামী যুগলদের আরও বেশি আইনি অধিকার এবং সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করার কথা বলেছিল।