আজকাল ওয়েবডেস্ক: পাকিস্তানে নিহত শীর্ষ লস্কর কমান্ডার জিয়া-উর-রহমান ওরফে আবু কাতাল। আবু কুখ্যাত লস্কর জঙ্গি হাফিজ সইদের অতি বিশ্বস্ত সহযোগি বলে পরিচিত। এছাড়াও জম্মু ও কাশ্মীরে একাধিক হামলার অন্যতম চক্রী চিল এই নিহত সন্ত্রাসবাদী নেতা।
সূত্রের খবর, আবু কাতাল শনিবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ ঝিলাম এলাকায় পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জিনাত হোটেলের কাছ দিয়ে তার নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে গাড়িতে ঘুরছিলেন। সেই সময়ই তাকে অজ্ঞাত পরিচয় দুষষ্কৃতীরা গুলি করে হত্যা করে। হামলাকারীরা ১৫ থেকে ২০ রাউন্ড গুলি চালায়। ফলে ঘটনাস্থলেই আবু কাতাল এবং তার এক নিরাপত্তারক্ষী নিহত হন। আরেকজন রক্ষী গুরুতর জখম হয়েছে।
আবু কাতাল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তায় ছিলেন। লস্কর-ই-তৈয়বার জঙ্গিরা এবং সাদা পোশাকের পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী সবসময় তার নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন।
আবু কাতাল ভারতে বহু জঙ্গি হামলার সঙ্গে যুক্ত ছিল, বারে বারেই সেই প্রমা মিলেছে। ২৬/১১ মুম্বাই সন্ত্রাসবাদী হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হাফিজ সইদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী আবু কাতাল, ৯ জুন জম্মু ও কাশ্মীরের রিয়াসি জেলার শিব খোরি মন্দির থেকে ফিরে আসার সময় তীর্থযাত্রীদের বহনকারী বাসে হামলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। কাতালের নেতৃত্বে এই হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
হাফিজ সইদই আবু কাতালকে লস্করের প্রধান অপারেশনাল কমান্ডার হিসেবে নিযুক্ত করেছিল। হাফিজ সইদের নির্দেশ মোতাবেক আবু কাতাল কাশ্মীরে বড় ধরনের হামলা চালাত।
২০২৩ সালের ১লা জানুয়ারি, রাজৌরির ধাঙ্গরি গ্রামে সাধারণ নাগরিকদের লক্ষ্য করে একটি সন্ত্রাসবাদী হামলা চালানো হয়। পরের দিন একটি আইইডি বিস্ফোরণ ঘটে। এই হামলায় দুই শিশু-সহ সাতজন মারা যান এবং আরও অনেকে গুরুতর আহত হন। ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) এই হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে আবু কাতালের নাম চার্জশিটে উল্লেখ করেছে। এছাড়াও, আবু কাতাল ২০২৩ সালের ২০ এপ্রিল ভাট্টা/দুরিয়া সন্ত্রাসবাদী হামলায়ও জড়িত ছিল। এই জঙ্গি হামলায় পাঁচজন সেনাকর্মী শহিদ হয়েছিলেন এবং তাঁদের দেহ বিকৃত করা হয়েছিল।
৪৩ বছর বয়সী জিয়া-উর-রহমান ওরফে আবু কাতাল জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চ-রাজৌরি অঞ্চলে বিভিন্ন জঙ্গি হামলার পরিকল্পনায় জড়িত ছিলেন। তিনি সাইফুল্লাহ সাজিদ জুটের সঙ্গে এই অঞ্চলে সক্রিয় লস্কর-ই-তৈয়বার প্রধান হ্যান্ডলার ছিলেন। সে পাকিস্তান অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের কোটলি জেলায় অবস্থিত লস্কর-ই-তৈবার খুইরাত্তা ডেটের-ও ইনচার্জ ছিলেন।
জানা গিয়েছে যে, আবু কাতাল পাক অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে লস্কর-ই-তৈবার ক্যাডার এবং অপারেটরদের মধ্যে প্রধান যোগসূত্র ছিল। আবু কাতাল ২০০০ সালের গোড়ার দিকে জম্মু অঞ্চলে অনুপ্রবেশ করেছিল এবং ২০০৫ সালে পালায়।
