আজকাল ওয়েবডেস্ক: নেপালের প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার এবং বিশিষ্ট সাংবাদিক ইলা শর্মা শনিবার (১২ জুলাই) কাঠমান্ডুর নিজ বাসভবনে আকস্মিকভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর। স্বামী ও ভারতের প্রাক্তন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এস. ওয়াই. কুরেশি সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে জানিয়েছেন, ইলা শর্মা এক বন্ধুর সঙ্গে কথোপকথনের সময় হঠাৎই জ্ঞান হারান এবং সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর মৃত্যু ঘটে। কুরেশি তখন পাশের ঘরে ছিলেন।
নেপালের রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পৌডেল এবং বিদেশমন্ত্রী অর্জু রানাঃ দেবা রবিবার শোকবার্তা প্রকাশ করে শর্মার অবদানকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। ইলা শর্মা ২০১৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত নেপালের নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর মেয়াদকালে নেপালে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পর্ব সম্পন্ন হয়। ২০১৫ সালে নেপালের নতুন সংবিধান গৃহীত হওয়ার পর, ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত হয় দেশটির প্রথম কেন্দ্রীয় সংসদ নির্বাচন এবং দুই দশক পর অনুষ্ঠিত হয় প্রাদেশিক নির্বাচন।
আরও পড়ুন: নকশাল দমন না ভিন্ন মত দমন?—মহারাষ্ট্রে পাশ হল বিতর্কিত ‘বিশেষ জননিরাপত্তা বিল’
এই নির্বাচনগুলিকে নেপালের রাজনীতিতে একটি মোড় ঘোরানো অধ্যায় হিসেবে দেখা হয়, কারণ তার আগে দেশটি দীর্ঘ এক দশক ধরে একটি গৃহযুদ্ধে নিমজ্জিত ছিল, যেখানে মাওবাদী আন্দোলনের প্রেক্ষিতে রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। ইলা শর্মা সেই উত্তাল সময়ে সাংবিধানিক নির্বাচন পরিচালনার গুরু দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে সামলান। নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ ও স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন করতে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য তিনি প্রশংসিত হন দেশ-বিদেশে।
সাংবাদিকতা জীবন শুরু করেন ‘দ্য রাইজিং নেপাল’ পত্রিকায়, যেখানে তিনি বহু বছর ধরে রাজনৈতিক ও সমাজকেন্দ্রিক লেখালেখি করেন। তাঁর বিশ্লেষণাত্মক দৃষ্টিভঙ্গি ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি অঙ্গীকার তাঁকে রাজনৈতিক সংস্কারপন্থী মহলে শ্রদ্ধার আসনে অধিষ্ঠিত করেছিল। বর্তমানে নেপালে রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে কিছু অংশে আন্দোলনের হালকা সুর শোনা গেলেও, ইলা শর্মার মতো প্রগতিশীল মননের মানুষ গণতন্ত্রকে সাংবিধানিকভাবে দৃঢ় করার পক্ষেই বরাবর অবস্থান নিয়েছিলেন। মাওবাদী আন্দোলন থেকে শুরু করে নতুন সংবিধান গঠন পর্যন্ত প্রতিটি অধ্যায়ে তিনি গণমাধ্যম ও প্রশাসনিক স্তরে সক্রিয় ছিলেন।
তিনি রেখে গেলেন দুই কন্যা ও এক বিশাল রাজনৈতিক উত্তরাধিকার, যা নেপালের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর বিশ্লেষণাত্মক দৃষ্টিভঙ্গি ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি অঙ্গীকার তাঁকে রাজনৈতিক সংস্কারপন্থী মহলে শ্রদ্ধার আসনে অধিষ্ঠিত করেছিল। বর্তমানে নেপালে রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে কিছু অংশে আন্দোলনের হালকা সুর শোনা গেলেও, ইলা শর্মার মতো প্রগতিশীল মননের মানুষ গণতন্ত্রকে সাংবিধানিকভাবে দৃঢ় করার পক্ষেই বরাবর অবস্থান নিয়েছিলেন। মাওবাদী আন্দোলন থেকে শুরু করে নতুন সংবিধান গঠন পর্যন্ত প্রতিটি অধ্যায়ে তিনি গণমাধ্যম ও প্রশাসনিক স্তরে সক্রিয় ছিলেন।
তিনি রেখে গেলেন দুই কন্যা ও এক বিশাল রাজনৈতিক উত্তরাধিকার, যা নেপালের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর অকালপ্রয়াণে নেপালের রাজনৈতিক ও সাংবাদিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বহু গণতান্ত্রিক আন্দোলনকর্মী, নির্বাচন পর্যবেক্ষক এবং তরুণ সাংবাদিকরা তাঁর কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েছেন। তাঁর সততা, সৌম্য নেতৃত্ব ও সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতি নেপালের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
