আজকাল ওয়েবডেস্ক: দাবি করছেন, এখনও পর্যন্ত আটটি যুদ্ধ থামিয়েছেন। নোবেল পাওয়ার আশাও করেছিলেন শান্তি স্থাপনের জন্য। অথচ তাঁর দেশেই ক্ষোভ তীব্র। ক্ষোভ তাঁকে নিয়েই। ফের ট্রাম্প বিরোধী ক্ষোভে উত্তাল মার্কিন মুলুক। একাধিক আন্তর্জাতিক এবং স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর তেমনটাই। ওয়াশিংটন ডিসি, শিকাগো, নিউ নিয়র্ক সর্বত্র ক্ষোভ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একাধিক নীতির বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সময়, শনিবার সকালে নিউ ইয়র্ক সিটির আইকনিক টাইমস স্কোয়ারে সমাবেশ শুরু হয়। কিছুক্ষণেই হাজার হাজার মানুষ সেখানে উপস্থিত হন। রাস্তা এবং মেট্রো রেলের প্রবেশপথগুলিতে 'রাজতন্ত্র নয় গণতন্ত্র' এবং 'সংবিধান ঐচ্ছিক নয়' স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভকারীরা ভিড় জমান। বিক্ষোভের আগে, ট্রাম্পের সহযোগীরা বিক্ষোভকারীদের উপর চরম বামপন্থী অ্যান্টিফা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ এনেছিলেন এবং এই জমায়েতকে আমেরিকার ঘৃণা সমাবেশ বলেও উল্লেখ করেছিলেন।
কেন পথে নেমে এই 'নো কিংস' বিক্ষোভ? কী জানাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা?
ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন, শিক্ষা এবং নিরাপত্তা নীতির বিরুদ্ধে এই ক্ষোভের প্রকাশ। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় বসার পর থেকে, ট্রাম্প অভিবাসন দমন অভিযান, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির জন্য ফেডারেল তহবিল হ্রাস করার হুমকি, এবং বেশ কয়েকটি রাজ্যে ন্যাশনাল গার্ড সেনা মোতায়েনের অনুমোদন দিয়েছেন। এই কয়েকটি ছাড়াও ট্রাম্পের আরও একাধিক সিদ্ধান্তে তিতিবিরক্ত সেখানকার বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, ট্রাম্প স্বৈরাচারী শাসন চালাচ্ছেন, আর ওই ব্যবস্থার বিরুদ্ধেই মূলত প্রতিবাদ।
নিজেদের জমায়েত, ক্ষোভ উগরে দেওয়া প্রসঙ্গে তাঁরা জানিয়েছেন, 'নো কিংস' আন্দোলনের মূল নীতি হল অহিংসা। বিক্ষোভকারীরা তাঁদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছেন, যেখানে সকল অংশগ্রহণকারীরা যেন বিক্ষোভের মাঝে আবার নিজেরা মনমালিন্যে জড়িয়ে না পড়েন। মূল লক্ষ্য যাতে আন্দোলনের দিকেই থাকে, নিজেদের দাবির দিকে থাকে।

নিউ ইয়র্ক পুলিশ জানিয়েছে, শহরের পাঁচটি বরোতেই শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করার জন্য ১০০,০০০ এরও বেশি মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। তবে প্রতিবাদের কারণে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলেই তথ্য নিউ ইয়র্ক পুলিশ সূত্রে। বিক্ষোভ মূলত সেখানকার চতুর্দিকে। উত্তর ভার্জিনিয়ায়, বিক্ষোভকারীদের ওয়াশিংটন ডিসি অভিমুখী ওভারপাসগুলিতে মিছিল করেছেন পথে নেমে। বহু মানুষ আর্লিংটন জাতীয় কবরস্থানের কাছে জড়ো হয়েছিলেন, যেখানে ট্রাম্প লিংকন মেমোরিয়ালের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য একটি খিলান নির্মাণের প্রস্তাব করেছেন আনুষ্ঠানিকভাবে।
শনিবার লন্ডন এবং বিশ্বের অন্যান্য শহরে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের বাইরেও শত শত মানুষ জড়ো হয়েছিল 'নো কিংস' বিক্ষোভের জন্য। বিক্ষোভ থেকে সমবেত সুর উঠেছে, 'নো কিংস', 'নো ক্রাউন, নো ক্লাউনস', 'নো ট্রাম্প'। প্ল্যাকার্ডেও তাই লেখা।
সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স, কংগ্রেসওম্যান আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজ, প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের পাশাপাশি এই বিক্ষোভকে সমর্থন করেছেন বহু মানুষ। বেশ কয়েকজন তারকাও পথে নেমে গলা মিলিয়েছেন। তবে 'নো কিংস' বিক্ষোভ সে দেশে এই প্রথম নয়। এর আগে, জুন মাসে, সারা দেশে ২০০০ টিরও বেশি 'নো কিংস' মিছিল হয়েছিল এবং বেশিরভাগই ছিল শান্তিপূর্ণ।
ট্রাম্প যদিও সচরাচর এইসব বিক্ষোভকে উপেক্ষা করে যান, তবে এবার বিক্ষোভ প্রসঙ্গে একটি মন্তব্য করেছেন সংবাদমাধ্যমে। শুক্রবার ফক্স বিজনেসে একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, 'ওঁরা আমাকে রাজা বলে উল্লেখ করছেন, তবে আমি রাজা নই।'
