আজকাল ওয়েবডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির তরবারি গেলার শিল্পী জিন মিনস্কি এক অভিনব ভিডিওর মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় চাঞ্চল্য তৈরি করেছেন। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ১৮ ইঞ্চি লম্বা তলোয়ার তার গলা বেয়ে নেমে যাচ্ছে সরাসরি খাদ্যনালী পর্যন্ত। এ দৃশ্য রেকর্ড  করা হয়েছে কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারে এন্ডোস্কোপির মাধ্যমে।

প্রসঙ্গত, মিনস্কি একজন পেশাদার সোর্ড-সোয়ালোর (তলোয়ার গেলার শিল্পী)। বিরল এই ভিডিওতে তার গলার ভেতরকার অংশ স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সাধারণত মুখ দিয়ে তাকালে গলার ভেতরের জটিল অংশ দেখা যায় না। কিন্তু এই পরীক্ষার মাধ্যমে স্বরযন্ত্র (লারিংক্স) ও খাদ্যনালীর মতো অদৃশ্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কার্যক্রম স্পষ্টভাবে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয়েছে।

আরও পড়ুন: কখনও জাপটে ধরছেন, কখনও চুমু খাচ্ছেন! যৌন উত্তেজনা প্রশমনে স্ত্রীকে ছেড়ে বেলুনে মজেছেন ৭৫-এর বৃদ্ধ!

চিকিৎসক ড. মাইকেল পিটম্যান, যিনি কলম্বিয়ার ল্যারিঙ্গোলজি বিভাগের প্রধান, নিজেই মিনস্কির ওপর ল্যারিঙ্গোস্কোপি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। তিনি জানান, “আমরা এই পরীক্ষার মাধ্যমে স্বরযন্ত্র ও গলার ভেতরের গঠনগুলি উচ্চমানের বিশদে দেখতে পাচ্ছি এবং একইসঙ্গে মানুষ যখন কথা বলে, গান করে বা কিছু গিলে ফেলে— সেই কার্যক্রম সরাসরি পর্যবেক্ষণ করতে পারছি।”

ভিডিওটি শেয়ার করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি শিক্ষামূলক ধারাবাহিক প্রকল্পের অংশ হিসেবে। এখানে আগে থেকেই বিভিন্ন শিল্পীর কণ্ঠ ও শ্বাসযন্ত্রের কার্যক্রম বিশ্লেষণ করা হয়— যেমন ট্রাম্পেটবাদক ও বাঁশিবাদকদের। মিনস্কির পারফরম্যান্স সেই তালিকায় নতুন সংযোজন।
ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর দর্শকরা কৌতূহল প্রকাশ করেছেন। অনেকেই এই বিরল দৃশ্যকে একইসঙ্গে শিহরণজাগানো ও শিক্ষণীয় বলে মন্তব্য করেছেন।

আরও পড়ুন: টেনেই কয়েক ইঞ্চি 'বাড়ানোর' নাম করে প্রতারণা চিকিৎসকের! দু'সপ্তাহেই 'ছোট' হয়ে গেল কিশোরের...

স্পিচ-ল্যাঙ্গুয়েজ প্যাথলজিস্ট হলি রেকার্স, যিনি ভিডিওটি রেকর্ড  করেছেন, জানান— “আমি প্রতিদিন মানুষের কণ্ঠস্বর ও গেলার প্রক্রিয়া পরীক্ষা করি। তলোয়ার গেলার বিষয়টি তাত্ত্বিকভাবে বোঝা যায়, কিন্তু তা চোখে দেখা সত্যিই বিস্ময়কর অভিজ্ঞতা।”

নিজের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে জিন মিনস্কি বলেন, তিনি এখন পর্যন্ত কখনও গুরুতর আহত হননি। তবে কয়েকবার অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিশেষত মশলাদার খাবার খাওয়ার পর তলোয়ার গেলার সময় অম্বলজনিত জ্বালা অনুভূত হয়েছে। তার কথায়— “যেহেতু আমার তলোয়ার সরাসরি পাকস্থলীতে পৌঁছায়, ফলে পাকস্থলীর অ্যাসিডও উঠে আসে। তখন যদি ঝাল কিছু খাই, সেটা গলায় জ্বালা ধরায়। একেবারেই সুখকর নয়।”

চিকিৎসাবিদদের মতে, এই ভিডিও ভবিষ্যতে স্বরযন্ত্র ও খাদ্যনালীর কার্যকারিতা বোঝার ক্ষেত্রে চিকিৎসা গবেষণায় নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে। একদিকে যেমন এটি চমকপ্রদ শিল্পকলা, অন্যদিকে তেমনি চিকিৎসাবিজ্ঞানের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষণীয় উপাদান।