আজকাল ওয়েবডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রে এক রোমহষর্ক ঘটনা। লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যের রবার্ট বুলেভার্ড এলাকায় অবস্থিত একটি নার্সিং হোমে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে। খবর অনুযায়ী, এই ঘটনার বিচারিক কার্যক্রম শেষ হতে লেগেছে কমপক্ষে ছয় বছর। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ৪৭ বছর বয়সী ববি মেনডেল বেস্টার। তিনি একজন সাফাইকর্মী (ঝাড়ুদার)। তাঁকে এই ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে ৬৯ বছর বয়সী এক প্রৌঢ়া কে যৌন হেনস্থার অভিযোগে। বর্তমানে তিনি ৯৯ বছরের কারাদণ্ডের মুখোমুখি। খবর মারফত জানা গিয়েছে এই মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হবে ২০২৫ সালের ২৩ অক্টোবর।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন নার্সিং হোমে ওই প্রৌঢ়া তাঁর নিজ কক্ষে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। সেই সুযোগে অভিযুক্ত বেস্টার নিজেকে কর্মচারী পরিচয় দিয়ে কক্ষে প্রবেশ করেন। ঘর পরিষ্কার করতে এসছেন বলে তিনি ঘরের সাফাই শুরু করেন। কাজের ভান করে তিনি প্রথমে প্রৌঢ়ার পড়ে যাওয়া মোজা তুলে পরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। এরপর তিনি ঘরের জানালার পর্দা টেনে বন্ধ করে দেন। পরে তিনি ক্রমে তাঁর আচরণ বদলাতে থাকেন। প্রৌঢ়ার পায়ে লোশন মাখাতে শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর তিনি জোর করে তাঁর পা নিজের যৌনাঙ্গের সঙ্গে ঘষতে থাকেন। প্রৌঢ়ার সঙ্গে চরম অশ্লীল ও আক্রমণাত্মক আচরণ করতে শুরু করেন বেস্টার। 

ঠিক এই অবস্থায় বাইরে থেকে কেউ ঘরের কাছে আসলে তিনি সাময়িকভাবে থেমে যান। কিন্তু এর পরে আবার একই নির্যাতন চালাতে থাকেন। সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার পর দীর্ঘ ছয় বছর বেস্টার পলাতক ছিলেন। এমনকী পুলিশ তাঁকে খুঁজে পেতে দীর্ঘদিন ধরে ব্যর্থ হয়। অবশেষে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজের 'ফুট ফেটিশ' থাকার কথা স্বীকার করেন। তবে তিনি প্রৌঢ়ার বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেন। কিন্তু তদন্তকারী সংস্থা ও প্রসিকিউশন আদালতে আরও কিছু সাক্ষ্যপ্রমাণ হাজির করে যা বেস্টারের বিকৃত মানসিকতার পরিচয় দেয়।

আরও পড়ুন: আবারও জোর তোড়জোড়! মাতা বৈষ্ণো দেবীর পবিত্র গুহা মন্দিরে যাত্রা শুরু হচ্ছে আগামী ১৪ই সেপ্টেম্বর থেকে

ঘটনার জেরে অপর একজন মহিলা আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে বলেন, বেস্টার তাঁর পা নিয়ে নানারকম কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করতেন। শুধু তাই নয় একাধিকবার ফোন ও মেসেজ করে তাঁকে চরম হেনস্থা করতেন। এ বিষয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, একদিন বেস্টার তাঁকে ফোন কলে বলেন, 'আমি কি আপনার পায়ের উপর স্বমেহন করতে পারি? আপনার পা দেখেই আমি উত্তেজিত হয়ে পড়ছি। আমি কি আপনার পা চুষতে বা লেহন করতে পারি?' 

এছাড়াও এ বিষয়ে ওই যুবতী আরও বলেন, একবার বেস্টার তাঁকে লক্ষ্য করে বলেন, 'তোমার ওই গোলাপি নেইলপলিশটা খুব ভালো লাগছে।' যুবতী জানান সে সময় তিনি খোলা জুতো পরে ছিলেন। বেস্টারের এইসব কথা তাঁকে ভয়ানক আতঙ্কিত করে। একটা সময় পর তাঁর সন্দেহ হয় যে বেস্টার তাঁকে অনুসরণ করছেন।

আদালতে এসব ভয়াবহ বিবরণ ও সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থাপনের পর জুরি মাত্র দুই ঘণ্টা আলোচনা শেষে বেস্টারকে দোষী সাব্যস্ত করে। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, বেস্টার একজন সিরিয়াল যৌন হেনস্থাকারী, যাঁর বিকৃত মানসিকতা তাঁকে বহু বছর ধরে অপরাধের মুখে ঠেলে দিয়েছে। বর্তমানে আদালত তাঁর জন্য কঠোর শাস্তির অপেক্ষায়, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এই ধরনের ভয়ংকর কাজ করার সাহস না পায়।