আজকাল ওয়েবডেস্ক: এআই। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। সাম্প্রতিক সময়ে এআই নিয়ে চর্চা বিস্তর। এআই-এর ভাল দিক, খারাপ দিক, ভবিষ্যৎ কী, ইত্যাদি, প্রভৃতি। এসবের মাঝেই এআই নিয়ে বড় বার্তা দিয়েছেন অর্থনীতিতে নোবেল প্রাপক পিটার হাউইট। সমাজ এবং শ্রমবাজারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব কীভাবে পড়বে তা নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর হাউইট নিজের মতামত জানিয়েছেন। তাঁর মতামত সামনে আসতেই, আশঙ্কার মেঘ ঘনীভূত হয়েছে আরও ব্যাপকহারে। যদিও এই ভাবনা, ধারণা নিয়ে যে আগে চর্চা হয়নি, তেমনটাও নয়।
কী বলছেন হাউইট?
সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, সোমবার তিনি সতর্ক করে বলেছেন যে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা 'আশ্চর্যজনক সম্ভাবনা' প্রদান করে সমাজের নানা ক্ষেত্রে, কিন্তু এটির নেতিবাচক প্রভাবও পড়বে এবং তাও হবে ব্যাপক মাত্রার। এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কর্মসংস্থান ধ্বংস করতে পারে ব্যাপক হারে, তেমন শঙ্কার কথাই জানিয়েছেন তিনি। তাঁর বার্তা, এই বিপুল শঙ্কার কারণেই, এইআই-এর ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনা উচিত।
ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম সোমবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটবটগুলির সঙ্গে জড়িত একটি আইনে স্বাক্ষর করেছেন। প্রযুক্তি কীভাবে প্রবৃদ্ধিকে চালিত করে এবং প্রভাবিত করে, এই বিষয়ে কাজের জন্য রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অফ সায়েন্সেস সোমবার সম্মানিত করেছে তিন অর্থনীতিবিদকে। তাঁদের মধ্যে হাউইট একজন। স্বাভাবিকভাবেই জল্পনা ছিল, এই প্রসঙ্গে তাঁর মতামত নিয়ে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কীভাবে প্রভাব ফেলবে অর্থনীততে? কর্মক্ষেত্রে? কী ভাবছেন অর্থনীতিবিদ?
জোয়েল মোকির, ফিলিপ অ্যাঘিয়ন এবং পিটার হাউইট। ২০২৫ সালে অর্থনীতিতে নোবেল জয়ী এই তিন অর্থনীতিবিদ। 'ক্রিয়েটিভ ডেসট্রাকশন' নিয়ে তাঁদের কাজ দীর্ঘদিনের। কী নিয়ে কাজ করেছেন তাঁরা? তাঁদের গবেষণা ছিল, একটি নতুন এবং উন্নত পণ্য বাজারে প্রবেশ করে এবং পুরানো পণ্য বিক্রিকারী কোম্পানিগুলি ক্ষতিগ্রস্থ হয়, সেই প্রক্রিয়া নিয়ে।
হাউইট এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন যে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে কে নেতৃত্ব দেবে তা এখনও দেখা বাকি, এবং এতে ক্রিয়েটিভ ডেসট্রাকশন কীভাবে প্রভাবিত হবে, তা নিয়েও এখনও নিশ্চিত নন। এআই প্রসঙ্গে তিনি বিস্তারিত বলতে গিয়ে বলেন, 'এটি স্পষ্টতই একটি দুর্দান্ত প্রযুক্তি, যার আশ্চর্যজনক সম্ভাবনা রয়েছে।' একইসঙ্গে তিনি বলেন, এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অন্যান্য চাকরি ধ্বংস করার বা অত্যন্ত দক্ষ শ্রম প্রতিস্থাপনের জন্য একটি আশ্চর্যজনক সম্ভাবনাও রাখে। অর্থাৎ বড় নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনার কথা জানাচ্ছেন তিনি।
এই পরিস্থিতিতে উপায় কী?
তিনি বলছেন, একমাত্র উপায়, নিয়ন্ত্রণ। বক্তব্য, 'আমি কেবল এটুকু বলতে পারি যে এটি একটি দ্বন্দ্ব। এটি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।'
তিনি এও বলেন, 'এই সকল উদ্ভাবনই প্রমাণ করেছে যে প্রযুক্তি কীভাবে কেবল শ্রম প্রতিস্থাপনই করে না, বরং উন্নতি করতে পারে।' আমেরিকান-ইজরায়েলি জোয়েল মোকির, শ্রমবাজারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব সম্পর্কে আশাবাদী আরও কিছুটা। তাঁর মতে, 'যন্ত্রগুলি আমাদের প্রতিস্থাপন করে না। তারা আমাদের আরও আকর্ষণীয়, আরও চ্যালেঞ্জিং কাজের দিকে পরিচালিত করে।'
