আজকাল ওয়েবডেস্ক: ব্রিটেন সরকার আগামী সাধারণ নির্বাচনের আগেই ভোটের বয়সসীমা কমিয়ে ১৬ করতে চলেছে—এমন ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত ঘোষণার মধ্যেই নতুন এক সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, তরুণ ভোটারদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিক হলেন জেরেমি করবিন। আইটিভি নিউজের জন্য পরিচালিত এই সমীক্ষায় ১৬ ও ১৭ বছর বয়সি ৫০০ জন তরুণ-তরুণীর রাজনৈতিক মনোভাব বিশ্লেষণ করা হয়। এতে দেখা গেছে, ১২% অংশগ্রহণকারী করবিনকে ‘জোরালোভাবে অনুমোদন করি’ বলে জানিয়েছেন, যা বর্তমান লেবার নেতা কিয়ার স্টারমার ও রিফর্ম পার্টির নেতা নাইজেল ফারাজ—উভয়ের ৯%-এর তুলনায় বেশি।
এই ফলাফল এমন এক সময়ে এলো, যখন করবিন লেবার পার্টি থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে নিজস্ব রাজনৈতিক সংগঠন গঠনের পথে এগোচ্ছেন বলে জোর গুঞ্জন চলছে। ২০২০ সালে লেবার পার্টির নেতৃত্বে কিয়ার স্টারমারের আবির্ভাবের পর করবিনকে পার্টি হুইপ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়, এবং ২০২৩ সালে তাঁর দলীয় সদস্যপদ স্থায়ীভাবে স্থগিত করা হয়। এই পদক্ষেপের কারণ হিসেবে পার্টির নেতৃত্ব করবিনের “বিতর্কিত ও বিভাজনমূলক অবস্থান”কে দায়ী করে। বিশেষ করে, তাঁর প্যালেস্টাইন সংহতি বিষয়ক বক্তব্য ও দলীয় বিরোধিতা নিয়ে প্রকাশ্য অবস্থান—এসব নিয়ে স্টারমার নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টির মধ্যে গভীর মতভেদ তৈরি হয়।
আরও পড়ুন: ল্যাপটপ কোলে, মোবাইল পকেটে! নীরবে ধ্বংস হচ্ছে পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা
তবে পার্টির বাইরেও করবিনের সামাজিক আন্দোলন ও জনগণঘনিষ্ঠ রাজনীতি তাঁকে তরুণদের মধ্যে জনপ্রিয় করে তোলে। জলবায়ু পরিবর্তন, ফ্রি এডুকেশন, জাতীয়করণ, বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার মতো ইস্যুতে করবিনের অবস্থান এই নতুন ভোটারদের সঙ্গে গভীরভাবে সাযুজ্যপূর্ণ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, “যদি করবিন নতুন দল গঠন করেন, তাহলে ১৬-১৭ বছর বয়সিদের এই সমর্থন তাঁকে চমকপ্রদ প্রাথমিক সাফল্য এনে দিতে পারে।” সমীক্ষায় আরও দেখা গেছে, তরুণদের মধ্যে লেবার পার্টির জনপ্রিয়তা এখনো সবচেয়ে বেশি—৩৩% ভোটার লেবারকে সমর্থন করছেন, যা রিফর্ম পার্টির থেকে ১২ পয়েন্ট বেশি।
অবশ্য, ‘প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সবচেয়ে উপযুক্ত কে?’—এই প্রশ্নে করবিনের নাম না থাকলেও, ৩৯% তরুণ কিয়ার স্টারমারকে উপযুক্ত মনে করেন, ফারাজের পক্ষে মত দেন ২৬%। তরুণদের এই প্রবণতা আগামী নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, বিশেষ করে যদি ভোটাধিকার সম্প্রসারণের এই পদক্ষেপ সময়মতো কার্যকর হয়। জনমতের এই পরিবর্তন এবং করবিনের উত্থান শুধুমাত্র একটি ব্যক্তির জনপ্রিয়তার চিত্র নয়—এটি যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক পরিমন্ডলের অভ্যন্তরে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভাঙন ও বিকল্প রাজনীতির সূচনাও নির্দেশ করে।
