আজকাল ওয়েবডেস্ক: আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভাণ্ডার (আইএমএফ) তার বেলআউট কর্মসূচির পরবর্তী কিস্তি প্রকাশের জন্য পাকিস্তানের উপর ১১টি নতুন শর্ত আরোপ করেছে। পাশাপাশি সতর্ক করে দিয়েছে যে, ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা- প্রকল্পের আর্থিক, বৈদেশিক এবং সংস্কার লক্ষ্যগুলির ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।

পাকিস্তানের উপর আরোপিত নতুন শর্তগুলির মধ্যে রয়েছে ১৭.৬ ট্রিলিয়ন পাক টাকার নতুন বাজেটের সংসদীয় অনুমোদন, বিদ্যুৎ বিলের উপর ঋণ পরিশোধের সারচার্জ বৃদ্ধি এবং তিন বছরেরও বেশি পুরানো ব্যবহৃত গাড়ি আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার।

পাশাপাশি ২০২৭ সালের মধ্যে সমস্ত আর্থিক পরিকল্পনা জনসমক্ষে আনতে হবে পাকিস্তানকে। বরাদ্দ টাকার সঠিক ব্যবহার হচ্ছে না সেই রিপোর্ট দিতে হবে যাতে কোনওভাবেই এই টাকা অন্য কোনও খাতে ব্যবহৃত না হয়।

এছাড়া আইএমএফের প্রতিবেদনে আগামী অর্থবছরের জন্য পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বাজেট ২.৪ ট্রিলিয়ন পাকিস্তানি টাকা রাখা হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি। এদিকে অপারেশন সিঁদুরের পর নিজেদের প্রতিরক্ষা বাজেট ১৮ শতাংশ করার বার্তা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তবে আইএমএফের নির্দেশ অনুযায়ী শাহবাজ শরিফের সরকার তা আর বাড়াতে পারবে না। 

নতুন শর্ত অনুযায়ী, প্রদেশগুলোকে কৃষি আয়ের ওপর কর আদায়ের জন্য কার্যকর প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে হবে, এবং একটি শাসন সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করতে হবে। এছাড়া ২০২৮ সালের পর আর্থিক খাতের কৌশল নির্ধারণে একটি পরিকল্পনাও প্রকাশ করতে হবে।

জ্বালানি খাতে চারটি বড় শর্ত রয়েছে—বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ট্যারিফ যথাক্রমে জুলাই ২০২৫ ও ফেব্রুয়ারি ২০২৬-এর মধ্যে সমন্বয় করতে হবে, শিল্প খাতে ক্যাপটিভ পাওয়ার লেভির ওপর আইন সংসদে পাস করতে হবে, এবং বিদ্যুৎ বিলের ওপর সর্বোচ্চ সারচার্জ সীমা তুলে দিতে হবে।

এছাড়া, বিশেষ প্রযুক্তি অঞ্চল ও শিল্প পার্কে দেওয়া কর সুবিধা ২০৩৫ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এই ১১ শর্তের পাশাপাশি আগে চাপানো ৫০টি শর্তও মানতে হবে পাকিস্তানকে।

এই ১১ শর্তের পাশাপাশি আগে চাপানো ৫০টি শর্তও মানতে হবে পাকিস্তানকে।

এক্সপ্রেস ট্রিবিউন সংবাদপত্র জানিয়েছে যে, শনিবার আইএমএফ প্রকাশিত স্টাফ লেভেল রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে "ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা, যদি অব্যাহত থাকে তাহলে কর্মসূচির আর্থিক, বাহ্যিক এবং সংস্কার লক্ষ্যগুলির ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।"

ভারতের তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও পাকিস্তানকে ৮৫০০ কোটির ঋণ দিয়েছে আন্তর্জাতিক আর্থিক তহবিল আইএমএফ। ভারতের তরফে এই ঋণের তীব্র বিরোধিতা করে যুক্তি দেওয়া হয়, পাকিস্তান এর আগেও বারবার আইএমএফের থেকে ঋণ নিয়েছে। কিন্তু সেই অর্থে সংস্কারের তেমন কিছুই করা হয়নি। দ্বিতীয়ত, ওই বিপুল অর্থ সন্ত্রাসে মদত দিতে ব্যবহৃত হবে। সুতরাং ঋণ না পেলে সেটা ব্যাহত হবে। তবে আমেরিকা-সহ বেশকিছু দেশের সমর্থনে এই ঋণ পেয়ে যায় পাকিস্তান। 

কিন্তু কার্যত দেউলিয়া পাকিস্তান যে সুবিধাজনক নয় তা বুঝতে পেরেই ১১ দফা শর্ত চাপানো হয়েছে আইএমএফের তরফে। 

 

কিন্তু কার্যত দেউলিয়া পাকিস্তান যে সুবিধাজনক নয় তা বুঝতে পেরেই ১১ দফা শর্ত চাপানো হয়েছে আইএমএফের তরফে।