আজকাল ওয়েবডেস্ক: বছর শেষে ফের ভয়ঙ্কর অগ্নিকাণ্ড ইন্দোনেশিয়ায়। এবার বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড ঘটল এক বৃদ্ধাশ্রমে। জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা গেলেন ১৬ জন। দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও তিনজন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, অগ্নিকাণ্ডটি ঘটেছে রবিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ। পুলিশ জানিয়েছে, সুলাওয়েসি দ্বীপের মানাদো শহরে এক বৃদ্ধাশ্রমে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৬ জন বৃদ্ধ-বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে।
মানাদো ফায়ার সার্ভিস বিভাগের প্রধান জিমি রতিনসুলু জানিয়েছেন, বৃদ্ধাশ্রমের ভেতরে থাকা বাসিন্দাদের অধিকাংশেরই বয়স ছিল ৮০-র ওপরে। বার্ধক্যজনিত কারণে তাঁরা শারীরিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল। অগ্নিকাণ্ডের সময় দ্রুত ঘর থেকে পালিয়ে বেরিয়ে আসা তাঁদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। আগুনের লেলিহান শিখার কবলে পড়ে, ঘরের মধ্যে আটকে পড়েই অসহায়ভাবে প্রাণ হারিয়েছেন তাঁরা।
মানাদো পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা আলমসিয়াহ পি. হাসিবুয়ান জানিয়েছেন, রবিবার গভীর রাতে আগুন লাগার খবর পেয়েই দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। দমকলের একাধিক ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। ১২ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
তিনি আরও জানিয়েছেন, আগুনের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে সোমবার ভোরের আগে তা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। আগুনের উৎস সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। শর্ট সার্কিট থেকে এই দুর্ঘটনা কি না, তা খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। বৃদ্ধাশ্রমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং অগ্নি-নির্বাপক পরিকাঠামো নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
চলতি মাসের শুরুতেই ইন্দোনেশিয়ায় আরও এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছিল। ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় একটি সাত তলা অফিস ভবনে আগুন লেগে কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছিলেন। দুপুরের দিকে ভবনটির প্রথম তলায় আগুন লেগে যায় এবং তা দ্রুত উপরের তলায় ছড়িয়ে পড়ে। ঘন কালো ধোঁয়া বাতাসে ছড়িয়ে পড়ার কারণে অফিসের কর্মীরা ভিতরেই আটকে পড়েন। পুলিশ জানিয়েছিল, মৃতদের মধ্যে একজন গর্ভবতী মহিলাও ছিলেন।
সেন্ট্রাল জাকার্তা পুলিশের প্রধান সুসাতিও পুরনোমো কনড্রোর জানিয়েছিলেন, মঙ্গলবার বিকেল নাগাদ মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২০ জনে পৌঁছেছিল। তিনি আরও বলেছিলেন, “আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ চালাচ্ছি।”
নভেম্বরের শেষের দিকে হংকংয়ের সাতটি বহুতল টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬০ জনে দাঁড়িয়েছিল। মঙ্গলবার চূড়ান্ত পর্যায়ের তল্লাশি অভিযান সম্পন্ন করার পর এই তথ্য দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। গত ২৬ নভেম্বর উত্তর তাই পো জেলার ওয়াং ফুক হাউসিং কমপ্লেক্সে আটটি বহুতলের সাতটিতে আগুন লেগে যায়।
টানা দু’দিন ধরে সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হয়। কী ভাবে এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল সেই আগুন, এখন তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। তদন্তকারীদের একাংশ মনে করছেন, অগ্নিকাণ্ডের নেপথ্যে রয়েছে ওই বহুতলের নির্মাণ সামগ্রী। হংকঙের ‘ওয়াং ফুক কোর্ট’ আবাসনে ছিল মোট ২,০০০টি ফ্ল্যাট। তাতে বাস করতেন ৪,৮০০ জন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই বৃদ্ধ।
