আজকাল ওয়েবডেস্ক: একদিকে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ। অন্যদিকে তথ্য, গত ৩৬ ঘণ্টায় পড়শি দেশ নেপাল ওলটপালট একপ্রকার। একাধিক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, গত কয়েকঘণ্টায় সে দেশে বন্যা-ধসে মৃত্যু মিছিল। বেশকিছু সূত্রে খবর, মৃত্যু হয়েছে ৩৯ জনের। আবার একাধিক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, মৃত অন্তত ৪৭। জানা গিয়েছে, ভূমিধসে সেখানকার বেশ কয়েকটি মহাসড়ক বন্ধ হয়ে গেছে এবং বন্যায় ভেসে গেছে একাধিক রাস্তা। শত শত যাত্রী আটকে পড়েছেন। পাহাড়ি কাঠমান্ডুতে, বেশ কয়েকটি নদী বিপদসীমার উপরে বইছে, একাধিক রাস্তা প্লাবিত করেছে। জলের তলায় বহু বাড়ি-ঘর।

বিপদসীমার উপরে বইছে কোশি নদী। স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি জল বইছে নদীতে।  এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, দক্ষিণ-পূর্ব নেপালের এই নদীর কারণেই, পূর্ব ভারতের বিহারে প্রায় প্রতি বছরই বানভাসি পরিস্থিতি তৈরি হয়। সুনসারির জেলা গভর্নর ধর্মেন্দ্র কুমার মিশ্র জানিয়েছেন, কোশি ব্যারেজের ৫৬টি স্লুইস গেটই জল নিষ্কাশনের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। যেখানে স্বাভাবিক অবস্থায় এর অর্ধেকের থেকে কম গেট খোলা থাকে। কোশি নদীর সেতুর উপর দিয়ে যান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে পরিস্থিতি বিচারে।

আরও পড়ুন: তছনছ উত্তরবঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে তোড়জোড়, অভিষেকের সহযোগিতার বার্তা, 'টোল ফ্রি' নম্বর দিলেন মমতা 

নেপালের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে পুলিশের মুখপাত্র বিনোদ ঘিমিরে জানিয়েছেন, ভারতের পূর্ব সীমান্তবর্তী ইলাম জেলায় পৃথক ভূমিধসে আঠারো জন নিহত হয়েছেন। দক্ষিণ নেপালে বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে এবং পূর্ব নেপালের উদয়পুর জেলায় বন্যায় একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শনিবার (৪ অক্টোবর, ২০২৫) থেকে বন্যায় এগারো জন ভেসে গেছেন এবং প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত তাঁদের খোঁজ মেলেনি বলে জানা গিয়েছে। এনডিআরআরএমএ-এর মুখপাত্র শান্তি মাহাত সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, সমস্তরকমভাবে তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। 

স্থানীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রে তথ্য, কাঠমান্ডু বিমানবন্দরের মুখপাত্র রিঞ্জি শেরপা জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল স্বাভাবিকভাবে চললেও দেশের অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল মূলত ব্যাহত হয়েছে। 

 

অন্যদিকে, এক রাতের বৃষ্টিতে তছনছ উত্তরবঙ্গ। ১২ ঘণ্টায় বৃষ্টি ৩০০ মিলিমিটার। হাওয়া অফিসের পুর্বাভাস, রবিবারের প্রায় গোটা দিন জুড়েই উত্তরের জেলাগুলিতে তাণ্ডব চলবে ঝড়-বৃষ্টির। কয়েকঘণ্টার ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিতে প্রকৃতির রুদ্রমূর্তি দেখেছে পাহাড়। ফুঁসছে তোর্সা, মানসাই। মহানন্দার বাঁধ ভেঙে জল ঢুকছে গ্রামে। বৃষ্টি-জলের তোড়ে সেতু ভেঙেছ। দার্জিলিং, কালিম্পং, মিরিকের একাধিক জায়গায় ধস। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মিরিক। সেখানে সেতু বিপর্যয়ে ন'জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত। অন্যদিকে উত্তরবঙ্গজুড়ে মৃত্যুমিছিল। একাধিক স্থানে মৃত আরও বহু। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সোমবারেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি যাচ্ছেন উত্তরবঙ্গে। একথা কিছুক্ষণ আগেই জানিয়েছেন তিনি।

 

প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ ও সিকিম। ভেঙেছে দুধিয়া লোহার সেতু ও বিজনবাড়ি সেতু। নিহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৭।  বিভিন্ন নজায়গায় রাস্তায় ধস নেমেছে। বন্ধ হয়ে দিয়েছ বহু রাস্তা। এই পরিস্থিতিতে মৃতদের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি, ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এক্স-পোস্টে জানালেন যে, পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে।

এক্স-পোস্টে মোদি লিখেছেন, 'দার্জিলিংয়ে সেতু দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় গভীরভাবে মর্মাহত। যাঁরা তাঁদের প্রিয়জনদের হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি গভীর সমবেদনা। আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন- এই কামনা করি। প্রবল বৃষ্টিপাত ও ভূমিধসের প্রেক্ষিতে দার্জিলিং ও আশেপাশের এলাকার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সমস্ত সম্ভাব্য সহায়তা প্রদান করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।'