আজকাল ওয়েবডেস্ক: দক্ষিণ লেবাননের সীমান্তে টানটান পরিস্থিতির মধ্যে দুইজন ইউনিফিল শান্তিরক্ষীর ওপর গুলি চালানোর কথা স্বীকার করেছে ইজরায়েলি সেনাবাহিনী (IDF)। সেনাবাহিনী দাবি করেছে, খারাপ আবহাওয়া ও ভুল সনাক্তকরণের কারণে এই ঘটনা ঘটেছে।
ইউনাইটেড নেশনস ইন্টারিম ফোর্স ইন লেবানন (UNIFIL)-এর দুই সদস্য আল-হামামেস এলাকায় নিয়মিত টহল দিচ্ছিলেন। সেই সময় দূর থেকে তাদের “দুই সন্দেহভাজন” হিসেবে দেখে ইজরায়েলি সেনারা সতর্কতামূলক গুলি ছোড়ে, যার ফলে শান্তিরক্ষীরা দ্রুত পিছু হটেন। পরে ঘটনার পর্যালোচনায় IDF বুঝতে পারে, যাদের তারা সন্দেহ করেছিল তারা প্রকৃতপক্ষে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী।
IDF এক বিবৃতিতে জানায়, ইউনিফিল সদস্যদের উদ্দেশে কোনও ইচ্ছাকৃত গুলি ছোড়া হয়নি এবং ঘটনাটি সরকারিভাবে লিয়াজোঁ চ্যানেলের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে। ইজরায়েলি বাহিনী আরও জানায়, তারা ইজরায়েলের নিরাপত্তার প্রতি যেকোনও হুমকি দূর করার প্রতিশ্রুতিতে অটল।
তবে ইউনিফিলের বিবরণ অনেক বেশি গুরুতর। তারা জানায়, ইজরায়েলের একটি মার্কাভা ট্যাঙ্ক দক্ষিণ লেবাননের একটি ইজরায়েলি পোস্টের কাছাকাছি থেকে ভারী মেশিনগান দিয়ে গুলি ছোড়ে, যার কয়েকটি গুলি শান্তিরক্ষীদের থেকে মাত্র পাঁচ মিটার দূরে এসে পড়ে। পরিস্থিতি সঙ্কটজনক হয়ে উঠলে শান্তিরক্ষীরা আশ্রয় নেন এবং ইউনিফিলের লিয়াজোঁ ব্যবস্থার মাধ্যমে ইজরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। যোগাযোগের পর গুলি থামে। প্রায় আধঘণ্টা টানটান উত্তেজনার পর ট্যাঙ্কটি সরে যায় এবং শান্তিরক্ষীরা আহত না হয়েই ফিরে যেতে সক্ষম হন।
ইউনিফিল এই ঘটনাকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব ১৭০১-এর গুরুতর লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছে। সংস্থাটি ইজরায়েলকে সতর্ক করেছে যে ইউনিফিলের সদস্যদের ওপর বা আশপাশে কোনও ধরনের আগ্রাসী আচরণ বরদাস্ত করা হবে না। ইউনিফিল জানায়, সংঘাতবিধ্বস্ত এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বজায় রাখাই তাদের প্রধান দায়িত্ব।
২০২৩ সালের অক্টোবরের প্যালেস্তাইন-ইজরায়েল যুদ্ধের পর থেকে লেবানন সীমান্তে বারবার গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে, যার ফলে ইউনিফিলের অবস্থানগুলোও ঝুঁকির মুখে পড়েছে। যদিও ইজরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি রয়েছে, তবুও ইজরায়েল লেবাননে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, দাবি করছে হিজবুল্লাহর দিক থেকে এখনও হুমকি রয়ে গেছে।
এদিকে ইজরায়েলের সীমান্ত পোস্টগুলো ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সরিয়ে নেওয়ার কথা থাকলেও এখনো বহু জায়গায় তারা অবস্থান বজায় রেখেছে, যা সীমান্ত পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে বলে পর্যবেক্ষকদের মত।
