আজকাল ওয়েবডেস্ক: যেকোনো দেশের প্রতিরক্ষা, আকাশসীমা রক্ষা এবং সামরিক শক্তির মূলভিত্তি হল যুদ্ধবিমান বা ফাইটার জেট। আধুনিক যুগে আকাশশক্তি শুধু রক্ষার জন্য নয়, বরং বিশ্বের পরিসরে প্রভাব বিস্তার, দ্রুত সামরিক অভিযান পরিচালনা এবং প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বর্তমানে বিশ্বের কয়েকটি দেশ বিশাল বিমানবাহিনী গড়ে তুলে নিজেদের শক্তিকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গেছে। নিচে এমন পাঁচটি দেশের উল্লেখ করা হলো, যাদের কাছে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফাইটার জেট বহর।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত যুদ্ধবিমান বহর রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে। দেশটির বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনী উভয়েই F-35 Lightning II, F-15 Eagle, F-16 Fighting Falcon এবং সুপার-উন্নত F-22 Raptor-এর মতো যুদ্ধবিমান পরিচালনা করে। শুধু সংখ্যার দিক থেকেই নয়, মানের দিক থেকেও আমেরিকার ফাইটার ফ্লিট শীর্ষে। উন্নত স্টেলথ প্রযুক্তি, শক্তিশালী ইঞ্জিন, দীর্ঘ পাল্লা এবং আধুনিক অস্ত্র ব্যবস্থার কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার আকাশশক্তিকে বিশ্বব্যাপী ব্যবহার করতে পারে। দেশটি গবেষণা, আপগ্রেড এবং রক্ষণাবেক্ষণে বিপুল বিনিয়োগ করে, যাতে বহর সবসময় যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকে।
রাশিয়া
রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম যুদ্ধবিমান বহরের অধিকারী। দেশটির বহরে রয়েছে MiG-29, Su-27, Su-30, Su-35-এর মতো বিশ্বখ্যাত জেট। পাশাপাশি রাশিয়া আধুনিক স্টেলথ ফাইটার Su-57-এর উৎপাদনও শুরু করেছে। রাশিয়ার সামরিক নীতি মূলত শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা এবং দ্রুত মোতায়েন সক্ষমতার ওপর নির্ভরশীল। বিশাল ভৌগোলিক এলাকা এবং কঠোর জলবায়ুর কারণে রাশিয়ার বিমানবাহিনীকে সবসময় শক্তিশালী বহর রাখা প্রয়োজন হয়।
চীন
গত এক দশকে চীন তার যুদ্ধবিমান বহর দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি করেছে। দেশটির বিমানবাহিনীতে রয়েছে J-10, J-11, J-16 এবং অত্যাধুনিক স্টেলথ ফাইটার J-20। প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, দ্রুত উৎপাদন এবং দেশীয় প্রতিরক্ষা শিল্পে বিপুল বিনিয়োগ চীনকে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী আকাশশক্তিতে পরিণত করেছে। চীন এখন এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবকে চ্যালেঞ্জ জানাতে সক্ষম শক্তি হয়ে উঠছে।
ভারত
ভারতের বিমানবাহিনী বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম ফাইটার জেট বহর পরিচালনা করে। বহরে রয়েছে Su-30MKI, MiG-29, Mirage-2000, Rafale এবং দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত HAL Tejas। ভারত ক্রমাগত আপগ্রেড, নতুন চুক্তি এবং নিজস্ব উৎপাদন দক্ষতা বাড়ানোর মাধ্যমে আকাশ প্রতিরক্ষা আরও মজবুত করছে। আঞ্চলিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ এবং সীমান্ত উত্তেজনার কারণে ভারত শক্তিশালী এয়ার কমব্যাট ক্ষমতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দেয়।
ফ্রান্স
ফ্রান্স তুলনামূলকভাবে ছোট বহর পরিচালনা করলেও অত্যন্ত আধুনিক ও দক্ষ যুদ্ধবিমানের জন্য পরিচিত। Dassault Rafale হল ফরাসি বিমানবাহিনীর প্রধান শক্তি। উন্নত প্রযুক্তি, নিজস্ব উৎপাদনক্ষমতা এবং ন্যাটোসহ বিভিন্ন সামরিক জোটে সক্রিয় অংশগ্রহণ ফ্রান্সকে বিশ্বমঞ্চে একটি গুরুত্বপূর্ণ আকাশশক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
