আজকাল ওয়েবডেস্ক: বাংলাদেশের চট্টগ্রামে একটি অদ্ভুত ও আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে সম্প্রতি, যেখানে বিয়ের ৪৫ দিন পর এক যুবক আবিষ্কার করেন, তার নববিবাহিতা স্ত্রী আসলে একজন পুরুষ। মাহমুদুল হাসান শান্ত নামের ওই যুবকের সঙ্গে 'সামিয়া' নামে এক নারীর পরিচয়ে ফেসবুকে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে, যা প্রেমে পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত ২০২৫ সালের ৭ জুন ধর্মীয় রীতিতে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তবে বিয়ের পর স্ত্রীর অস্বাভাবিক আচরণ এবং শারীরিক ঘনিষ্ঠতা এড়িয়ে চলা শান্ত এবং তার পরিবারকে সন্দিহান করে তোলে। অবশেষে ২৫ জুলাই, সত্য প্রকাশ পায়—‘সামিয়া’ আসলে শাহিন-উর-রহমান নামের এক ব্যক্তি, যিনি জেনার ক্ষেত্রে পুরুষ হলেও দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে নারী হিসেবে অনুভব করে আসছেন এবং নারীর পোশাকে থাকতে ভালোবাসেন।

শাহিন স্বীকার করেন, তিনি ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে শান্তর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান এবং তাকে বিয়ে করেন। তবে তার দাবি, তিনি হরমোন সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছেন এবং ছোটবেলা থেকেই নিজেকে মেয়ে ভাবতেন। এই ঘটনার পর চট্টগ্রামের স্থানীয় সমাজে এবং সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার ঝড় ওঠে। যদিও বিয়েটি সরকারিভাবে রেজিস্টার করা হয়নি, তবুও আইনি দিক থেকে প্রতারণা, মিথ্যা পরিচয় এবং আত্মপ্রতারণার প্রশ্ন উঠেছে।

আরও পড়ুন: বীর্যেও মেটে না তৃষ্ণা! সঙ্গমের শিখরে উঠতেই হঠাৎ ছন্দপতন-পুরুষদের ‘আনহ্যাপি অর্গাজম’, এক অজানা সমস্যা ও তার সম্ভাব্য কারণ

এই ঘটনার মতোই এক চাঞ্চল্যকর প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে। একেএ নামে এক ২৬ বছর বয়সী যুবক সামাজিক মাধ্যমে 'আদিন্দা কানজা' নামে এক নারীর সঙ্গে পরিচিত হন, যিনি সবসময় মুখ ঢাকা পোশাক পরতেন। সম্পর্ক গড়ে ওঠার পর তারা বিয়ে করেন ২০২৪ সালের ১২ এপ্রিল। বিয়ের পরও আদিন্দা মুখ ঢেকে রাখতেন এবং কোনোভাবেই স্বামীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে চাইতেন না। এই অস্বাভাবিক আচরণ একেএ-কে সন্দেহে ফেললে তিনি তদন্ত শুরু করেন এবং জানতে পারেন, আদিন্দা আসলে একজন পুরুষ—ইএসএইচ নামে একজন ব্যক্তি, যিনি ২০২০ সাল থেকে নারীর পোশাকে প্রতারণা করে আসছেন এবং উদ্দেশ্য ছিল একেএ-র সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়া।

ইএসএইচ পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন যে, তিনি একেএ-কে ঠকিয়ে বিয়ে করেছিলেন এবং নিজের কণ্ঠস্বর ও আচরণকে এতটাই নারীর মতো করে তুলেছিলেন যে কারো সন্দেহ হওয়ার সুযোগ ছিল না। পুলিশ জানিয়েছে, তার বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলায় সর্বোচ্চ চার বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার এই দুটি ঘটনা একদিকে যেমন যৌন পরিচয় ও মানসিক লিঙ্গচেতনা সংক্রান্ত প্রশ্ন তোলে, তেমনি প্রতারণা ও সামাজিক বিশ্বাসভঙ্গের জটিলতাও সামনে আনে। প্রযুক্তিনির্ভর সম্পর্কের যুগে পরিচয় যাচাই ও সম্পর্কের আন্তরিকতা নিয়ে সমাজকে নতুনভাবে ভাবতে বাধ্য করছে এই দুই ঘটনা।