আজকাল ওয়েবডেস্ক: ক্ষমতায় ফেরার পর থেকেই একের পর এক সিদ্ধান্ত। ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে বারে বারে সমালোচনা হয়েছে তাঁর নিজের দেশেই। এবার ট্রাম্পের কোপে ভারত। এক সময়ে বন্ধু বলা ভারতের উপরে শুল্কের কোপ। আশঙ্কা ছিল ভারতকে নিয়ে। মাঝে মাঝেই ভারতের প্রতি বাণিজ্য এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের আভাস দিলেও, আশঙ্কা ছিলই শুল্কের পরিমানের দিকে। বুধবার জানা গেল, ভারতীয় পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে মার্কিন মুলুক। কবে থেকে চালু হবে এই নিয়ম নিয়ম? জানা গিয়েছে, অন্যান্য দেশের মতোই আগামী ১ আগস্ট থেকেই ভারতের উপরেও এই নিয়ম লাগু হয়ে যাবে।
ট্রাম্পের এক সময়ে ‘বন্ধু’ বলা ভারতের উপর বিপুল শুল্ক আরোপের ঘটনা নিয়ে জোর চর্চা হলেও, ঠিক তার কয়েকঘণ্টা পরে ট্রাম্পের নয়া সিদ্ধান্তে আর বোর চর্চা। কী করেছেন ট্রাম্প? ভারতীয় পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের কয়েকঘণ্টা পরেই ট্রাম্প ঘোষণা করেন, মার্কিন মুলুক ডিল করেছে পাকিস্তানের সঙ্গে। কী সেই ডিল? ট্রাম্প নিজেই জানিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়, পাক মুলুকের সঞ্চয়ে থাকা বিশাল তৈলভাণ্ডারের উন্নতির জন্য মার্কিন মুলুক আর পাকিস্তান একসঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করবে। ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে চুক্তি সেরে ফেলেছি। চুক্তি অনুযায়ী সে দেশের বিশাল তৈলভান্ডারের উন্নতিতে পাকিস্তান এবং আমেরিকা যৌথভাবে কাজ করবে।‘ একইসঙ্গে তিনি লেখেন, হতেই পারে অদূর ভবিষ্যতে পাকিস্তান ভারতকে তেল বিক্রি করবে। যদিও কীভাবে সেই কাজ হবে তা স্পষ্ট নয় এখনও। বিশেষজ্ঞদের মতে, হতে পারে কোনও একটি আমেরিকান সংস্থাকে পাকিস্তানের অপরিশোধিত তেল উত্তোলনের জন্য খনন অধিকার দেওয়া হবে।
অন্যদিকে এই চুক্তি নিয়ে আবার পাক-মার্কিন মুলুকের বক্তব্য কিছুটা আলাদা। কেমন সেটা? আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, যেখানে মার্কিন মুলুক বলছে চুক্তি হয়েছে তৈলভাণ্ডার নিয়ে, অন্যদিকে ইসলামাবাদ বলছে, মার্কিন মুলুকের সঙ্গে পাকিস্তানের বাণিজ্য চুক্তি হয়েছে, এতে মার্কিন মুলুকে তাদের পণ্যের দাম কমবে বলে আশা করছে তারা।
তবে যে প্রশ্ন ঘুরছে? পাক-মার্কিন মুলুকের এই ‘তেল ডিল’-এ কী সমস্যায় পড়বে ভারত? তথ্য অনুযায়ী তা হওয়ার কথা নয়। কেন? কারণ, ভারতের তেলের মজুদ অনেক বেশি - ২০১৬ সালের হিসাবে প্রায় ৪.৮ বিলিয়ন ব্যারেল। এবং গভীর সমুদ্রের মজুদ থেকে অপরিশোধিত তেল উত্তোলন এবং পরিশোধন করার ক্ষমতা ভারতের রয়েছে, যা পাকিস্তানের নেই। তথ্য, ভারত নিজেরাই পাকিস্তানের তুলনায় প্রতিদিন বেশি অপরিশোধিত তেল উৎপাদন করে, উদাহরণস্বরূপ, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে, ভারত প্রতিদিন ৬০০,০০০ ব্যারেলের বেশি তেল উৎপাদন করেছিল এবং পাকিস্তান মাত্র ৬৮,০০০ ব্যারেলের বেশি উৎপাদন করেছিল। তবে দুটি দেশই মূলত নির্ভর করে আমদানির উপরে।

এই বছরের শুরুতে, যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পের সাথে দেখা করেন, তখন ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও তেল ও গ্যাস কিনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন, সম্ভবত এই আশায় যে এর ফলে শুল্ক হ্রাস পাবে। ট্রাম্পের পরপর নেওয়া দুই সিদ্ধান্তের পর, বিশেষজ্ঞদের মতে, মার্কিন মুলুক মূলত দুটি বিষয়ে ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে পাকিসাত্নের সঙ্গে চুক্তি করে। এক, রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল কেনা বন্ধ করা এবং দুই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে তেল কেনা।
