আজকাল ওয়েবডেস্ক: সারাক্ষণ হিন্দিতে কথা বলত মেয়ে। উচ্চারণেও ছিল সমস্যা। তার জেরেই দুনিয়া থেকে ছ'বছরের মেয়েকে চিরতরে সরিয়ে দিলেন মা। মেয়েকে শ্বাসরোধ করে খুনের কথা স্বীকার করলেন তিনি।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের নভি মুম্বইয়ে। শনিবার পুলিশ জানিয়েছে, ছ'বছরের এক নাবালিকাকে শ্বাসরোধ করে খুনের কথা স্বীকার করেছেন তার মা। কারণ? পুত্রসন্তান চেয়েছিলেন তিনি। ছেলে না হওয়ায়, ছ'বছরের মেয়েকে খুন করেছেন তিনি।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, ঘাতক মা জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ে শুধু হিন্দিতে কথা বলত। মারাঠিতে কিছুই বলত না। যা ঘিরে তীব্র ক্ষোভ ছিল ৩০ বছরের যুবতীর মনে। পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের কারণে একাধিক চিকিৎসকের কাছে যেতেন তিনি। ঘাতক যুবতী নভি মুম্বইয়ের কালাম্বলি এলাকার বাসিন্দা। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মেয়ের মৃত্যু হয়েছিল বলে পুলিশকে প্রথমে জানিয়েছিলেন। কিন্তু শুরু থেকেই পুলিশের সন্দেহ ছিল।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার ছ'বছরের মেয়েকে খুন করেছিলেন তিনি। সেদিন নাবালিকার সঙ্গে তার ঠাকুমা দেখা করতে এসেছিলেন। ঘরে নাতনিকে দেখতে না পেয়ে তিনি ফিরে যান। সেই সন্ধ্যায় নাবালিকার বাবা ফিরে দেখেন, মেয়ে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে আছে। তড়িঘড়ি করে মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যান। তখনই যুবতী জানান, মেয়ের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে।
তদন্তে নেমেই নাবালিকার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। রিপোর্টে হার্ট অ্যাটাকের উল্লেখ ছিল না। এরপরই পরিবারকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। টানা ছ'ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর যুবতী স্বীকার করেন, মেয়েকে তিনি শ্বাসরোধ করে খুন করেছেন। তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘাতক তরুণী সায়েন্স গ্র্যাজুয়েট ছিলেন। তাঁর স্বামী তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী। ২০১৭ সালে তাঁরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। দু'বছর পর কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। নাবালিকার উচ্চারণ ও কথা বলায় সমস্যা ছিল। বেশিরভাগ সময় হিন্দিতে কথা বলত। স্বামীকে যুবতী বারবার বলতেন, 'আমি এমন কোনও সন্তান চাই না, যে ঠিকমতো কথাও বলতে পারে না।' পুত্রসন্তান না পাওয়ায় মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত বছর জুলাই মাসে এমন আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল। পুত্রসন্তানের আকাঙ্ক্ষা ছিল। কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার পর চরম পদক্ষেপ করেন মা। ন'দিনের সদ্যোজাতর গলা কেটে খুন করেন তিনি। জেরায় খুনের ঘটনাটি স্বীকার করেছেন ঘাতক মা। শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে দিল্লির বাবা হরিদাস কলোনিতে। গোবিন্দ নামের এক ব্যক্তি থানায় এসে পুলিশকে জানান, তাঁর স্ত্রী ন'দিনের কন্যাসন্তানের গলা কেটে খুন করেছেন। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। আবাসনের দ্বিতীয়তলায় একটি ঘর থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। অন্য একটি ঘর থেকে মহিলাকে আটক করে তারা।
টানা দুইদিন জেরার পর তরুণী স্বীকার করেন, সদ্যোজাত কন্যাসন্তানের গলা কেটে তিনি খুন করেছেন। কারণ, কন্যাসন্তান তিনি চাননি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, গোবিন্দ পেশায় শ্রমিক। তাঁর একটি ছেলে আছে। বাড়িতে স্ত্রী, সন্তান ছাড়াও মা, ভাইও থাকেন। অভাব অনটন রয়েছে সংসারে। এই পরিস্থিতিতে কন্যাসন্তানের জন্ম মেনে নিতে পারেননি তরুণী।
