আজকাল ওয়েবডেস্ক: যানজট আর দুর্ভোগ, যেন সমার্থক। কিন্তু যে দুর্ভোগ যদি রোজের হয়, তা যেন যন্ত্রণারও নিত্যযাত্রীদের জন্য। কারও অফিসে পৌঁছতে দেরি হয়। কেউ বা সময় মতো বাড়ি ফিরতে পারেন না। আরও সমস্যার, যখন দীর্ঘ যানজটে আটকে পড়ে কোনও অ্যাম্বুল্যান্স। রাস্তায় আটকে থাকতে থাকতে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন বহু বৃদ্ধ নাগরিক। 

সম্প্রতি বেঙ্গালুরুতে দীর্ঘ যানজটে আটকে পড়ার বীভৎস অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন এক তরুণী। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, তাঁর বান্ধবী বিমানে চেপে দুবাই পৌঁছে গেছেন। অথচ দীর্ঘ যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা তিনি আটকে আছেন। এখনও পর্যন্ত বাড়িতে পৌঁছতে পারেননি। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, তরুণী তাঁর বান্ধবীকে বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে দিতে গিয়েছিলেন। শেষ মুহূর্তে চেক ইন করেই বিমানে চাপেন বান্ধবী। তাঁকে বিমানবন্দরে নামিয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি। বিমানে চেপে বান্ধবী দুবাইয়ে পৌঁছে গেলেও, তিন ঘণ্টা বেঙ্গালুরুর দীর্ঘ যানজটে তিনি আটকে ছিলেন। নিজের শহরে বাড়িতে পৌঁছতেই কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে তাঁর। 

পোস্টটিতে ইতিমধ্যেই কয়েক কোটি মানুষ দেখছেন। চরম ভোগান্তির অভিজ্ঞতার বর্ণনায় ভরে গিয়েছে পোস্টটি। অনেকেই লিখেছেন, বেঙ্গালুরুর নিত্যদিনের সঙ্গী হল এই যানজট। দিনের পর দিন এই যানজটের সমস্যা আরও বেড়ে চলেছে। যার কোনও সুরাহা নেই। প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করতে পারে না। কেউ কেউ লিখেছেন তাঁদের অভিজ্ঞতাও কথাও। 

আরও পড়ুন: 'কুচি কুচি করে কাটব', হবু স্ত্রীর পছন্দ হয়নি লেহেঙ্গা, দোকানদারকে খুনের হুমকি যুবকের! শিউরে ওঠা দৃশ্য প্রকাশ্যে

একজন লিখেছেন, 'আমি মজা করছি না। এটা সত্যিই ঘটেছে। আমার বোন মেঙ্গালুরুতে যাচ্ছিলেন। শেষ মুহূর্তে বিমানবন্দরে পৌঁছন। যতক্ষণে সে মেঙ্গালুরুতে পৌঁছে যায়, ততক্ষণে আমি বাড়ির কাছাকাছিও পৌঁছতে পারিনি। বোন মেঙ্গালুরুর বাড়িতে পৌঁছে যাওয়ার পরেও, আমি বেঙ্গালুরুর যানজটে আটকে ছিলাম।' 

আবার একজন লিখেছেন, 'আপনার মতো পরিস্থিতি থাকলে আমি গাড়িতে বসেই থাকতাম না। পায়ে হেঁটে বাড়িতে পৌঁছে যেতাম।' আবার এক যুবক ওই পোস্টে কমেন্ট করেন, 'বেঙ্গালুরুতে সবকিছুই উল্টো ঘটে। এক কিমি পথ গাড়িতে যেতে সময় লাগে তিন ঘণ্টা। এক কিমি পথ পায়ে হেঁটে যেতে সময় লাগে ১০ মিনিট।'

এক তরুণী লিখেছেন, 'সাধারণত বিমানে চেপে ভিন শহরে পৌঁছতে সময় লাগে দুই ঘণ্টা।‌ আর বেঙ্গালুরু বিমানবন্দর থেকে বাড়ি পৌঁছে সময় লাগে পাঁচ ঘণ্টা। সত্যিকারের পাঁচ ঘণ্টা! বিমানে যাতায়াতের থেকেও বেঙ্গালুরুর যানজটে ফেঁসে দিনের কয়েক ঘণ্টা কেটে যায়। এটা সত্যিই ট্রমার।' 

বেঙ্গালুরুর যানজট ঘিরে কয়েক মাস ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ।‌ দীর্ঘ যানজটের বহু ছবি, ভিডিও, পোস্ট সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েও পড়েছে। এমনকী নামী ব্যবসায়ীরাও এই যানজটে আটকে চরম ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। সম্প্রতি জিরোধা সংস্থার কো-ফাউন্ডার নিখিল কামাথ ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। পরিস্থিতির উন্নতির বদলে, আরও অবনতি হওয়ায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন তিনি। যদিও এত কিছুর পরেও পরিস্থিতির কোনও বদল হয়নি।