আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে পথের কাঁটা স্বামী। সেই পথের কাঁটাকেই চিরতরে দুনিয়া থেকে গায়েব করতে চেয়েছিল স্ত্রী। তাই একবার নয়, দু'বার স্বামীর খাবারে বিষ মিশিয়ে কার্যসিদ্ধি করল সে। প্রথমবার বিষ মেশানো খাবার খাইয়েও কাজ হয়নি। হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ফিরছিলেন স্বামী। 

 

রাগ জমেছিল তখন থেকেই। বাড়ি ফেরার পরেই দ্বিতীয়বার একই কাজ করেন। আবারও স্বামীর খাবারে বিষ মিশিয়ে দেন। এবার আর স্বামীর প্রাণ বাঁচানো যায়নি। স্ত্রীর ধারণা ছিল, খাবারে বিষক্রিয়ার জেরে স্বামীর মৃত্যুর পিছনে তাঁকে কেউ সন্দেহ করবেন না। প্রেমের সম্পর্কেও আর বাধা থাকবে না। খুনের দুই মাস তাঁর কেচ্ছা ফাঁস হল‌। অবশেষে পুলিশের জালে ঘাতক স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিক। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের ফিরোজাবাদে। পুলিশ জানিয়েছে, ফিরোজাবাদের উল্লাও গ্রামে ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ঘটেছে। মৃত যুবকের নাম, সুশীল। খাবারে বিষক্রিয়ার পরেই তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর খাবারেই বিষ মিশিয়ে দিয়েছিলেন স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিক। 

 

আরও পড়ুন: চাকরির পরীক্ষায় জ্ঞান হারান, হাসপাতালে যাওয়ার পথে চলন্ত অ্যাম্বুল্যান্সেই গণধর্ষণ! তরুণীর বর্ণনায় শিউরে উঠল পুলিশ

 

ফিরোজাবাদ সিটি এসপি রবি শঙ্কর প্রসাদ জানিয়েছেন, গত ২৪ জুলাই, বৃহস্পতিবার থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন সুনীলের। প্রথম থেকেই তাঁর সন্দেহ ছিল, পুত্রবধূর উপরে। তাঁর ধারণা, খাবারের বিষক্রিয়ার নেপথ্যে খুনের পরিকল্পনাই রয়েছে। সুনীলের স্ত্রীর সঙ্গে ওই গ্রামেরই এক যুবকের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। পুত্রবধূ ও তাঁর প্রেমিক মিলে খাবারে বিষ মিশিয়ে সুনীলকে খুন করেছে। 

 

মৃত যুবকের মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই বধূ ও তাঁর পরিচিত বন্ধুকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ‌। তারপরেই দু'জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। দু'জনেই বর্তমানে জেল হেফাজতে রয়েছে। পুলিশ তদন্তে নেমে আরও জানতে পারে, গ্রামের ওই যুবকের সঙ্গে সুনীলের স্ত্রীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। বিবাহবহির্ভূত প্রেমের বিষয়টি জানতে পেরেছিলেন সুনীল। তারপরেই দাম্পত্য কলহ চরমে পৌঁছয়। সুনীলের কটুক্তি সহ্য করতে পারছিলেন না তাঁর স্ত্রী। অশান্তি থাকবে রেহাই পেতেই খুনের পরিকল্পনা করেন। 

 

জানা গেছে, গত ১৩ মে প্রথমবার ট্রমা সেন্টারে ভর্তি হয়েছিলেন সুনীল। তার আগেরদিন রাতে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে পরিবেশন করেছিলেন স্ত্রী। সেই খাবার খেয়েই অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে চিকিৎসার পর একদিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে ওঠেন সুনীল। ১৪ মে তাঁকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। খুনের পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত না হওয়ায় আবারও বিষ মিশিয়ে খুনের চেষ্টা করেন তাঁর স্ত্রী। 

 

এরপর বাড়ি ফেরার পর আবারও খাবারে বিষ মিশিয়ে দেন‌‌ স্ত্রী। দ্বিতীয়বার বিষ মেশানো খাবার খেয়ে আর শেষরক্ষা হয়নি। সুনীলের মৃত্যু হয়। প্রথম থেকেই বধূর আচরণে সন্দেহ হয়েছিল পরিবারের সদস্যদের। থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন, খাবারে বিষক্রিয়ার জেরে মৃত্যুর নেপথ্যে স্ত্রীর কোনও ভূমিকা রয়েছে। এমনকী গ্রামের এক যুবক জড়িত থাকতে পারে। 

 

পুলিশ এরপর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কটির কথা জানতে পারে। জানা গেছে, অনলাইনে বিষ অর্ডার করেছিলেন সুনীলের স্ত্রী।‌ দইয়ের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে দিয়েছিলেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিষের পাত্র, এমনকী সেই পার্সেলটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত তরুণী ও তাঁর প্রেমিকের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক এবং খুনের পিছনে কোন কোন উদ্দেশ্য ছিল, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।