আজকাল ওয়েবডেস্ক: মাঝরাতে জাতীয় সড়ক তখন শুনশান। আচমকা সেই নিস্তব্ধতা চিরে বিকট শব্দ। উল্টো দিক থেকে ডিভাইডার টপকে ধেয়ে আসা একটি বেপরোয়া গতির ট্রাক সজোরে ধাক্কা মারল যাত্রীবোঝাই লাক্সারি বাসে। সংঘর্ষের জেরে মুহূর্তের মধ্যে দাউদাউ করে জ্বলে উঠল বাসটি। বৃহস্পতিবার রাত দু’টো নাগাদ কর্নাটকের চিত্রদুর্গা জেলার হিরিউরের কাছে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে দশজনের। আহত আরও একাধিক। 

সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, আহত বাসচালক রফিক এখন হাসপাতালের বিছানায়। যন্ত্রণার মাঝেই শিউরে উঠছেন সেই ভয়াবহ মুহূর্তের কথা ভেবে। তিনি জানান, "আমি ৬০-৭০ কিলোমিটার গতিতে বাস চালাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি উল্টো দিকের রাস্তা থেকে ডিভাইডার টপকে একটা ট্রাক যমের মতো ধেয়ে আসছে। বাঁচানোর চেষ্টা যে করিনি, তা নয়। পাশের একটা গাড়িতে ঘষা লেগে গেলেও বাস সামলাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল চোখের নিমেষে।" এর পরেই সংজ্ঞা হারান তিনি।

বাসের খালাসি মহম্মদ সাদিকের বর্ণনা আরও শিউরে ওঠার মতো। তিনি বাসের সামনের দিকে ঘুমাচ্ছিলেন। তাঁর কথায়, "ট্রাকটি সরাসরি বাসের ডিজেল ট্যাঙ্কে ধাক্কা মারে। কাচ ভেঙে আমি ছিটকে বাইরে পড়ে যাই। তার পরেই দেখি বাসটি আগুনের গোলায় পরিণত হয়েছে।"

পুলিশ জানিয়েছে, ট্রাকটির গতিবেগ ছিল অনিয়ন্ত্রিত। সংঘর্ষের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে বাসের যাত্রীদের বেরনোর সুযোগটুকুও দেয়নি আগুন। মর্মান্তিক এই ঘটনায় রীতিমত শোকের ছায়া নেমেছে এলাকায়। কয়েকজন যাত্রী পালাতে পারলেও, কয়েকজন বাসে আটকে পড়েন। এখনও পর্যন্ত ৯ জন যাত্রী ও ট্রাক চালকের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। 

বাসে চালক, কন্ডাক্টর-সহ ৩২ জন ছিলেন। আহতদের উদ্ধার করে তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বড়দিনের আবহে এহেন ভয়াবহ দুর্ঘটনার খবর পেয়েই শোকপ্রকাশ করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এক্স হ্যান্ডেলে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, 'কর্ণাটকের চিত্রদূর্গ জেলায় ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় অত্যন্ত মর্মাহত। যাঁরা প্রিয়জনদের হারালেন, তাঁদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।' এর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের তরফে মৃতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের জন্য ৫০ হাজার টাকা আর্থিক ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন তিনি।