আজকাল ওয়েবডেস্ক: তেলেঙ্গানায় ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড।করিমনগরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। খবর অনুযায়ী জানা গিয়েছে, এক যুবতী তাঁর প্রেমিক ও তাঁর বন্ধুর সাহায্যে নিজের স্বামীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছেন। নিজের স্বামীকে খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত যুবতী। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দিক হলো, ওই যুবতী ইউটিউব ভিডিও দেখে খুনের পদ্ধতি শিখেছিলেন৷ এই ঘটনা জানাজানি হতেই হুলুস্থুল চারিদিক। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত যুবকের নাম সম্পথ। খবর অনুযায়ী একটি গ্রন্থাগারে ক্লিনারের কাজ করতেন তিনি। এই যুবক রামাদেবী নামে এক যুবতীর সঙ্গে বৈবাহিক জীবনে আবদ্ধ ছিলেন। এমনকি তাঁদের দু'টি সন্তান ছিল। জানা গিয়েছে সম্পথ চূড়ান্ত মদ্যপানে আসক্ত ছিলেন। ফলস্বরূপ প্রায়ই মাতাল অবস্থায় বাড়ি ফিরে স্ত্রীর সঙ্গে নানা বিষয়ে ঝগড়া করতেন। পুরো সংসার চালানোর জন্য রামাদেবী একটি ছোট নাস্তার দোকানও চালাতেন।

সূত্রে জানা গিয়েছে, এই দোকানেই রামাদেবীর সঙ্গে পরিচয় হয় ৫০ বছর বয়সী যুবক করণ রাজাইয়ার। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের মধ্যে একটি অবৈধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পুলিশ জানিয়েছে, একপর্যায়ে রামাদেবী তাঁর স্বামীকে জীবন থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

পরবর্তীতে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত যুবতী জানান স্বামীকে খুন করার উপায় খুঁজতে গিয়ে তিনি ইউটিউবে একটি ভিডিও দেখেন। সেখানে একজন মানুষকে কীভাবে হত্যা করা যায়, তা দেখানো হয়েছিল। পুলিশ জানতে পারে ভিডিওতে পেস্টিসাইড বা কীটনাশক কানে ঢেলে হত্যার পদ্ধতি দেখানো হয়। এই পরিকল্পনা সে তাঁর প্রেমিক রাজাইয়ার সঙ্গে শেয়ার করেন।

আরও পড়ুনঃ বর-বউ সাজে বিদায় শিক্ষক শিক্ষিকাকে! প্রথমবারের মত বিহারে এমন আবেগঘন মুহূর্ত, জানুন...

পরে রামাদেবী, রাজাইয়া এবং তাঁর বন্ধু শ্রীনিবাস একসঙ্গে সম্পথকে হত্যার ছক কষেন। হত্যার রাতে রাজাইয়া ও শ্রীনিবাস সম্পথ কে বোম্মাকাল ফ্লাইওভারের কাছে ডেকে নেন এবং তাঁকে মদ খাওয়ান। এরপর মদ খেয়ে সম্পথ অচেতন হয়ে ঘুমিয়ে পড়লে রাজাইয়া তাঁর কানে কীটনাশক ঢেলে দেন। পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলেই সম্পথের মৃত্যু হয়। এরপর রাজাইয়া রামাদেবীকে ফোন করে জানিয়ে দেন যে কাজ শেষ।

আরও পড়ুনঃ সামান্য ভুলেই স্বামীকে লাথি মেরে সোজা জলে ফেলে দিলেন স্ত্রী! ভিডিও ভাইরালে উত্তেজনা, কারণ জানলে ভিরমি খাবেন ...

এখানেই শেষ নয়। পরদিন রামাদেবী নিজের ফের পুলিশ স্টেশনে গিয়ে স্বামীর নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ করেন। ১ অগাস্ট সম্পথের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তারপর ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ স্থানীয় হাসপাতালে পাঠান হয়৷ সূত্রে জানা গিয়েছে, এরপর থেকেই পুলিশ সন্দেহ করে, কারণ রামাদেবী ও রাজাইয়া মৃতদেহের ময়নাতদন্তে অনাগ্রহ দেখায়।

সম্পথের ছেলে বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে এবং পুলিশের কাছে বিস্তারিত তদন্তের অনুরোধ জানায়। এরপর পুলিশ কল রেকর্ড, সিসিটিভি ফুটেজ ও মোবাইল লোকেশন চেক করে তিনজনের দিকে নজর দেয়। জিজ্ঞাসাবাদের সময় রামদেবী রাজাইয়া এবং তাঁদের আরেক বন্ধু, তিনজনই হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন।
বর্তমানে তিনজনকেই গ্রেপ্তার করে পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে অভিযুক্তদের৷ ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত জারি রয়েছে৷