আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের পাহালগামে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর, দিল্লির পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান শিমলা চুক্তি স্থগিত করেছে। পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি বুধবার এক জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে পাকিস্তান ওয়াঘা সীমান্তে বাণিজ্য বন্ধ, ভারতীয় নাগরিকদের জন্য সার্ক ভিসায় ছাড় স্থগিত, এবং ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় সামরিক কূটনীতিকদের ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ ঘোষণা করেছে।
১৯৭১ সালের ভারত-পাক যুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে সই হওয়া শিমলা চুক্তি দুই দেশের মধ্যে শান্তি ও ভবিষ্যৎ দ্বিপাক্ষিক আলোচনা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। এই চুক্তির মাধ্যমে লাইন অফ কন্ট্রোল (LOC)-এর সীমারেখা নির্ধারিত হয় এবং যুদ্ধবন্দিদের ফেরত দেওয়া, সৈন্য প্রত্যাহার এবং ভবিষ্যতে সরাসরি আলোচনার অঙ্গীকার করা হয়।
পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির দীর্ঘ বৈঠকে ভারতের প্রতিক্রিয়াকে “একতরফা, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, আইনি ভিত্তিহীন ও চরমভাবে দায়িত্বজ্ঞানহীন” বলে নিন্দা করা হয়। যদিও তারা পাহালগাঁও হামলার ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে, তবে জড়িত থাকার অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছে।
ঘোষিত সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে:
৩০ এপ্রিলের মধ্যে ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশনের কূটনীতিক ও কর্মীদের সংখ্যা কমিয়ে ৩০ জনে নামানো হবে।
ভারতীয় নাগরিকদের সার্ক ভিসা ছাড়ের সুবিধা স্থগিত।
ভারতের সামরিক কূটনীতিকদের ‘persona non grata’ ঘোষণা করে বহিষ্কার।
ওয়াঘা-অট্টারি সীমান্ত দিয়ে বাণিজ্য অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ।
এছাড়াও, পাকিস্তান কড়া ভাষায় জানিয়েছে যে, ভারতের পক্ষ থেকে ইন্দাস জল চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্তকে তারা “যুদ্ধ ঘোষণা” হিসেবে বিবেচনা করবে। পাকিস্তান বলেছে, তারা শান্তির পক্ষপাতী এবং আলোচনা চায়, তবে সেটি “ন্যায্য ও আইনসঙ্গত শর্তে” হতে হবে।
এই ঘটনার ফলে দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
