আজকাল ওয়েবডেস্ক: মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে ফিরেছেন নীতীশ কুমার। কিন্তু, স্বরাষ্ট্র দপ্তর আর তাঁর হাতে নেই। গুরুত্বপূর্ণ এই দপ্তরের দায়িত্বে এখন উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধিরী। এখন প্রশ্ন হল, সম্রাট চৌধুরী স্বরাষ্ট্রদপ্তর নিয়ে স্বাধীনভাবে কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণে কতটা যোগ্য?
গত বিহার নির্বাচনে, বিজেপি ৮৯টি আসন পেয়ে বৃহত্তম দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল, নীতিশ কুমারের জেডিইউ পেয়েছিল ৮৫টি আসন। এবারের ভোটে একক বৃহত্তম দল পদ্ম বাহিনী। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে জেডিইউ। সম্রাট চৌধুরীর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পরই বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কেউ কেউ এই নিয়োগকে সরকারের উপর নীতীশ কুমারের নিয়ন্ত্রণ হ্রাসের ইঙ্গিতবলে মনে করছেন। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, এই পদক্ষেপ আসলে প্রশাসনের মধ্যে বিজেপির প্রভাব বৃদ্ধি।
একই রকম পরিস্থিতি মহারাষ্ট্রেও আগে দেখা গিয়েছিল, যেখানে একনাথ শিণ্ডে সরকারের অধীনে উপ-মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ স্বরাষ্ট্র দপ্তরের দায়িত্বে ছিলেন। পরবর্তী নির্বাচনের পর ফড়নবিশ যখন মুখ্যমন্ত্রী হন, তখন শিণ্ডে স্বরাষ্ট্র দপ্তর চেয়েছিলেন বলে জানা যায়। কিন্তু শেষপর্যন্ত ফড়নবিশই ওই দপ্তর ধরে রাখেন।
বর্তমানে, শুধুমাত্র কয়েকটি রাজ্যেই মুখ্যমন্ত্রী স্বরাষ্ট্র দপ্তর সামলান না। যেমন- গুজরাটে, উপ-মুখ্যমন্ত্রী হর্ষ সাংভি স্বরাষ্ট্র বিভাগ পরিচালনা করেন। কর্ণাটকে, সিনিয়র নেতা জি পরমেশ্বর মুখ্যমন্ত্রী বা উপ-মুখ্যমন্ত্রীর পরিবর্তে এই দপ্তর পরিচালনা করেন।
বিহারে, স্বরাষ্ট্র বিভাগ গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক গুরুত্ব বহন করে কারণ এই দপ্তরের মাধ্যমেই সরাসরি রাজ্য পুলিশ নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। স্বরাষ্ট্র বিভাগ গেলেও, নীতীশ কুমার তাঁর বর্তমান মন্ত্রিসভার মধ্যে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর সামলাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে, তিনি যেকোনও বিভাগে হস্তক্ষেপ করার এবং সিদ্ধান্ত বদলের ক্ষমতা রাখেন। যদিও প্রচোলিত শাসনব্যবস্থায় এই ধরনের পদক্ষেপ অস্বাভাবিক।
সাধারণত, একজন মন্ত্রী- নিজ নিজ দপ্তরের উপর প্রাথমিক কর্তৃত্ব বজায় রাখেন। যেহেতু নীতীশ কুমার স্বরাষ্ট্র বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করছেন না, তাই তিনি এই দপ্তরের দৈনিক কাজে সরাসরি হস্তক্ষেপ এড়িয়ে যাবেন। তবে, প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় নীতীশ কুমার প্রশাসনের সব দপ্তরের কাজ প্রভাবিত করতে পারেন।।
যদিও সম্রাট চৌধুরী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তবুও তিনি ডিজি, আইজি এবং এসপির মতো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়োগ এবং বদলি সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে তাঁকে সাধারণ প্রশাসনের উপর নির্ভর করতে হবে। কারণ তিনি স্বাধীনভাবে এই বদলির সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। এই ব্যবস্থা একটি আদর্শ আইনি অনুশীলন।
এটা স্বীকার করা অপরিহার্য যে- মুখ্যমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং অন্যান্য মন্ত্রীরা সরকারের মধ্যে থেকে সহযোগিতার একে অপরকে ভিত্তিতে কাজ করেন। সাধারণত, মুখ্যমন্ত্রী তাদের বিভাগ সম্পর্কিত মন্ত্রীদের সুপারিশ প্রত্যাখ্যান করেন না, যা সরকারের পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধি করে।
