আজকাল ওয়েবডেস্ক: টেলিভিশন রিয়্যালিটি শো-তে পরিচিত মুখ। খবর পাওয়া গিয়েছে, ৩৬ বছর বয়সী নৃত্যশিল্পী সুধীন্দ্র একটি পথ দুর্ঘটনায় মারা গেলেন। একেবারে নতুন কেনা গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। পথে গাড়ির সামান্য ত্রুটি হওয়ায় হাইওয়ের পাশে সেটি দাঁড় করিয়েছিলেন। আর তখনই একটি দ্রুত গতির ট্রাক তাঁকে সজোরে ধাক্কা মারে।

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, সুধীন্দ্র সম্প্রতি একটি নতুন মারুতি সুজুকি ইকো কিনেছিলেন। মঙ্গলবার তিনি তাঁর ভাইকে সেই গাড়িটি দেখাতে বেঙ্গালুরু থেকে তিয়ামাগোন্দলুর দিকে যাচ্ছিলেন। নেলামানগালা তালুকের পেম্মানাহাল্লি গ্রামের কাছে হাইওয়ের পাশে কোনও কারণে গাড়িটি থামিয়েছিলেন তিনি। জানা গিয়েছে, গাড়িতে কিছু একটা সমস্যা দেখা দিয়েছিল।

একটি ভিডিওতে দুর্ঘটনার সেই ভয়াবহ দৃশ্য ধরা পড়েছে। দেখা গিয়েছে, সুধীন্দ্র তাঁর গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। হঠাৎই দূর থেকে আসা একটি ট্রাক কোনও কারণ ছাড়াই তাঁর গাড়ির দিকে ঘুরে যায়। সুধীন্দ্র ট্রাকটিকে নিজের দিকে আসতে দেখে হতভম্ব হয়ে যান। জড়সড় হয়ে ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকেন। এরপরই ট্রাকটি প্রচণ্ড গতিতে তাঁকে ধাক্কা মারে। ট্রাক ও গাড়ির মাঝে পড়ে যান সুধীন্দ্র। ফলে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। ধাক্কা মারার পরই ট্রাকটি বাঁ দিকে ঘুরে থামে।

দুর্ঘটনার পর ট্রাকচালক পালিয়ে গেলেও কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাকে গ্রেপ্তার করে থানার পুলিশ। পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, চালক দাবি করেছে যে সে গাড়ি চালানোর সময় ঘুমিয়ে পড়েছিল। পুলিশ সেই দাবি খতিয়ে দেখছে।

প্রসঙ্গত, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একের পর এক পথ দু্র্ঘটনা। উত্তরপ্রদেশের বারাবাঁকি জেলায় এক ভয়ঙ্কর পথ দুর্ঘটনা ঘটেছে৷ দু্র্ঘটনায় ছয়জন মারা গিয়েছেন। পাশপাশি গুরুতর আহত হয়েছেন আরও দু'জন। খবর অনুযায়ী, সোমবার রাতে একটি ট্রাকের সঙ্গে একটি গাড়ির ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়৷ এর জেরেই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় আধিকারিকরা জানিয়েছেন। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত প্রায় দশটা নাগাদ দেবা থানা এলাকার কুতলুপুর গ্রামের কাছে কল্যাণী নদীর উপরে থাকা একটি সেতুর উপর দুর্ঘটনাটি ঘটে। মৃত ব্যক্তিরা প্রত্যেকেই গাড়ির যাত্রী ছিলেন। খবর অনুযায়ী, তাঁদের সবার বাড়ি ফতেহপুর শহরে। টক্কর এতটাই জোরে হয়েছিল যে, গাড়িটি পুরোপুরি দুমড়েমুচড়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে গাড়ির কোনও নম্বরপ্লেট ছিলনা। সংঘর্ষের জেরে পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে সামলাতে এবং রাস্তা থেকে গাড়ির ধ্বংসাবশেষ সরাতে শেষ পর্যন্ত ক্রেন ব্যবহার করতে হয়।

সংঘর্ষের খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ সেখানে পৌঁছায়। আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ও পরে জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। কর্মকর্তারা জানান, চারজন ঘটনাস্থলেই মারা যান, আর দু'জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে তাঁদের মৃত ঘোষণা করা হয়।

জেলাশাসক শশাঙ্ক ত্রিপাঠী ও পুলিশ সুপার অর্পিত বিজয়বর্গীয় দ্রুত দুর্ঘটনাস্থলে ছুটে যান। ত্রিপাঠী বলেন, "ছ'জনের মৃত্যু হয়েছে এবং গুরুতর আহত দু'জনের বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।" প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, গাড়িটি ভুল করে ট্রাকের লেনে ঢুকে পড়াতেই এই দুর্ঘটনা।

পুলিশ সুপার বিজয়বর্গীয় জানিয়েছেন, "গাড়িতে মোট আটজন যাত্রী ছিলেন। মৃতদের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ ও একজন মহিলা। দু'জন আহত হয়েছেন।" তিনি আরও জানান, তাঁরা ওই ভাড়া করা গাড়িতে চেপে বাইরে কোথাও গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথেই এমন ঘটে। নিহতদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত করা যায়নি বলে খবর।

পুলিশ প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাদের দাবি, ট্রাকটি অত্যন্ত দ্রুত গতিতে আসছিল। উল্টো দিক থেকে গাড়ি আসতে দেখে চালক সম্ভবত নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এর ফলেই এত বড় দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ ট্রাক আটক করেছে। ঘটনার জেরে সেতুটিতে বেশ কিছুক্ষণ যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিকাশচন্দ্র ত্রিপাঠী বলেছেন, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গিয়েছে, দুটি গাড়িই দ্রুত গতিতে চলছিল। তিনি জানান, মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে ট্রাকের চালক পালিয়ে গিয়েছেন। তার খোঁজে বর্তমানে তল্লাশি জারি রয়েছে৷