আজকাল ওয়েবডেস্ক: দেরাদুনে বর্ণবিদ্বেষের শিকার ত্রিপুরার এক মেধাবী ছাত্র। দেরাদুনের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ পড়তেন অ্যাঞ্জেল চাকমা (২৪)। অভিযোগ, গত ৯ ডিসেম্বর একদল দুষ্কৃতী তাঁকে এবং তাঁর ভাইকে ‘চিনা’ বলে কটাক্ষ করে। প্রতিবাদ করায় অ্যাঞ্জেলকে ছুরি ও ভারী বস্তু দিয়ে নৃশংসভাবে আক্রমণ করা হয়। টানা ১৭ দিন হাসপাতালে লড়াই করার পর গত শুক্রবার তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
সম্প্রতি তাঁর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ক্ষোভের আগুন জ্বলছে পাহাড়ি রাজ্যে। বর্ণবিদ্বেষের প্রতিবাদ করায় ২৪ বছরের ওই তরুণকে নৃশংসভাবে মারধর করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। চিকিৎসারত অবস্থায় তাঁর মৃত্যুর পর থেকেই ত্রিপুরার নানা প্রান্তে মোমবাতি মিছিল ও প্রতিবাদ চলছে। এই পরিস্থিতিতে সোমবার মৃত ছাত্রের পরিবারের জন্য ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা।
এই ঘটনা নিয়ে দ্বিতীয়বার উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামির সঙ্গে কথা বলেন মানিকবাবু। অভিযুক্তদের দ্রুত শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি। পরে সমাজমাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘‘উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে অ্যাঞ্জেল চাকমার বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে। তিনি আশ্বস্ত করেছেন যে, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকলকে উপযুক্ত সাজা দেওয়া হবে। এই কঠিন সময়ে রাজ্য সরকার ওই পরিবারের পাশে রয়েছে।’’ ত্রিপুরার চাকমা ও মগ ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে কয়েকটি দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, অ্যাঞ্জেলের পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি দিতে হবে এবং উত্তরাখণ্ড সরকারের কাছ থেকেও ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে।
তবে এই ঘটনায় উত্তরাখণ্ড পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন তুলেছে ‘অল ইন্ডিয়া চাকমা স্টুডেন্টস ইউনিয়ন’। সংগঠনের সভাপতি দৃশ্যমণি চাকমার অভিযোগ, পুলিশ প্রথম থেকেই বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। ৯ ডিসেম্বর ঘটনাটি ঘটলেও পুলিশ এফআইআর নিতে ১২ তারিখ পর্যন্ত সময় নষ্ট করেছে। অভিযোগ, পুলিশের এই গাফিলতির সুযোগ নিয়েই এক মূল অভিযুক্ত ফেরার হয়ে গিয়েছে, যার খোঁজ এখনও মেলেনি।
এদিকে আগরতলায় বিশাল এক মোমবাতি মিছিলে পা মেলান অসংখ্য মানুষ। সেখানে অ্যাঞ্জেলের বিচার চাওয়ার পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব ভারতের মানুষের ওপর চলা বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধেও সরব হন প্রতিবাদীরা।
