আজকাল ওয়েবডেস্ক: দিল্লির লাল কেল্লার কাছে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ছয় দিন পর আত্মঘাতী হামলাকারী হিসেবে চিহ্নিত ড. উমর উন নাবির এক সহযোগীকে রবিবার গ্রেপ্তার করেছে জাতীয় তদন্ত সংস্থা (NIA)। বিস্ফোরণে ১৩ জনের মৃত্যু হয়। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির নাম আমির রশিদ আলি। তিনি জম্মু ও কাশ্মীরের পাম্পোরের সাম্বুরার বাসিন্দা।

এটাই প্রথমবার যখন তদন্ত সংস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে ড. উমর উন নাবিকে “আত্মঘাতী হামলাকারী” বলে উল্লেখ করেছে। ১০ নভেম্বর লাল কেল্লার কাছে যে গাড়িটি বিস্ফোরিত হয়, সেটির চালকের আসনেই উমর ছিলেন বলে ফরেনসিক পরীক্ষায় নিশ্চিত হয়েছে। বিস্ফোরণের পর তাঁর পা গাড়ির স্টিয়ারিং ও অ্যাক্সেলেটরের মাঝখানে আটকে থাকতে দেখা যায়।

NIA জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া আমির রশিদ আলি আত্মঘাতী হামলাকারীর সঙ্গে মিলে এই হামলার পরিকল্পনা করেন। এজেন্সির দাবি, হামলায় ব্যবহৃত সাদা রঙের আই-২০ গাড়িটি কিনতে সহায়তা করতেই আমির দিল্লিতে এসেছিলেন এবং গাড়িটি তাঁর নামেই রেজিস্টার্ড ছিল।

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে যে দিল্লি পুলিশ, জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ, হরিয়ানা পুলিশ, উত্তরপ্রদেশ পুলিশ এবং অন্য কেন্দ্রীয় সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে তদন্ত চালানো হচ্ছে। বিস্ফোরণের পিছনে বড় কোনও সন্ত্রাসী চক্র কাজ করেছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে বিভিন্ন সূত্রে অনুসন্ধান চলছে। এখন পর্যন্ত ৭৩ জন সাক্ষীর বয়ান নেওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে বিস্ফোরণে আহতরাও আছেন। এ ছাড়া উমরের আরেকটি গাড়িও আটক  করে পরীক্ষা করা হচ্ছে।

ড. উমর উন নাবি হরিয়ানার ফরিদাবাদের আল ফালাহ মেডিক্যাল কলেজে কর্মরত ছিলেন। DNA পরীক্ষায় তাঁর জৈবিক নমুনা মায়ের নমুনার সঙ্গে মিলে যাওয়ার পরই নিশ্চিত হওয়া যায় যে গাড়ির বিস্ফোরণে তিনি-ই মারা গেছেন। তদন্তকারীরা এই হামলাকে “সফিস্টিকেটেড হোয়াইট-কলার টেরর মডিউল” বলে বর্ণনা করেছেন। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ সম্প্রতি যে ডাক্তারদের একটি সন্ত্রাসী চক্র গ্রেপ্তার করেছে, তার সঙ্গেও এই ঘটনাটির যোগ থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

এদিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এই বিস্ফোরণকে “নৃশংস সন্ত্রাসী হামলা” বলে নিন্দা করেছে। সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এটি “রাষ্ট্রবিরোধী শক্তির এক কাপুরুষোচিত ও জঘন্য কাজ” এবং ভারত সব ধরনের সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় “জিরো টলারেন্স” নীতি বজায় রাখবে। লাল কেল্লার বিস্ফোরণের তদন্ত ক্রমশ জটিলতর হচ্ছে। NIA-র দাবি, হামলার পেছনে আরও মানুষ যুক্ত থাকতে পারে এবং বৃহত্তর ষড়যন্ত্র উদ্ধারে তদন্ত এখনও চলছে।