আজকাল ওয়েবডেস্ক: গত ছয় বছরে দেশে সরকারি স্কুলের সংখ্যা কমেছে এবং একইসঙ্গে বেড়েছে এমন স্কুলের সংখ্যা, যেখানে ছাত্রভর্তি শূন্য বা দশের নিচে। সোমবার সংসদে উপস্থাপিত ইউনিফাইড ডিস্ট্রিক্ট ইনফরমেশন সিস্টেম ফর এডুকেশন (UDISE+)–এর সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

কংগ্রেস সাংসদ অমরিন্দর সিং রাজা ওয়ারিং এবং কার্তি চিদম্বরমের প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেন, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে দেশে সরকারি স্কুলের মোট সংখ্যা ছিল ১০,৩২,৫৭০। তা ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে কমে দাঁড়িয়েছে ১০,১৩,৩২২-এ। অর্থাৎ এই সময়ে দেশে প্রায় ১৯ হাজার স্কুল কমে গেছে। এর মধ্যে মধ্যপ্রদেশে সবচেয়ে বেশি প্রভাব দেখা গেছে—২০১৯ সালে যেখানে সরকারি স্কুল ছিল ৯৯,৪১১টি, সেখানে ২০২৪-২৫ সালে সংখ্যাটি নেমে এসেছে ৯২,২৫০-এ। ওড়িশায় ৪,৬০০-এর বেশি এবং জম্মু–কাশ্মীরে প্রায় ৪,৩০০ স্কুল কমে গেছে এই সময়ে। শুধু ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষেই বিহারে সবচেয়ে বেশি—১,৮৯০টি স্কুল বন্ধ হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় তথ্য জানাচ্ছে। এর পরেই রয়েছে হিমাচল প্রদেশ (৪৯২) এবং কর্নাটকা (৪৬২)।

সরকারি স্কুল কমে গেলেও বিপরীত চিত্র দেখা গেছে ভর্তি-সংক্রান্ত পরিসংখ্যানে। ২০২২-২৩ সালে যেখানে শূন্য অথবা দশের নিচে ছাত্রভর্তি থাকা স্কুলের সংখ্যা ছিল ৫২,৩০৯টি, সেখানে ২০২৪-২৫ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৬৫,০৫৪টি। আশ্চর্যের বিষয়, এমন স্কুলে শিক্ষকসংখ্যা বরং বেড়েছে—১.২৬ লক্ষ থেকে ১.৪৪ লক্ষে। পশ্চিমবঙ্গ এই বিভাগে শীর্ষে রয়েছে ৬,৭০৩টি স্কুল নিয়ে। এরপরই রয়েছে উত্তরপ্রদেশ (৬,৫৬১) এবং মহারাষ্ট্র (৬,৫৫২)।

এই বৈপরীত্য নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও, সরকারের পক্ষ থেকে স্কুল সংখ্যা কমার কারণ সম্পর্কে স্পষ্ট ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেছেন, শিক্ষক নিয়োগ, বেতন এবং সঠিকভাবে শিক্ষক বিতরণ করা রাজ্য সরকারের দায়িত্ব। কেন্দ্র সামগ্রিক শিক্ষা প্রকল্পের মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা দেয়, যাতে শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত বজায় থাকে।

তবে স্কুল সংখ্যা কমার পেছনে বন্ধ হওয়া, একীভূতকরণ বা পুনরায় ব্যবহার—কোন কারণ কতটা ভূমিকা রেখেছে, তা স্পষ্ট করেননি মন্ত্রী। ফলে শিক্ষাব্যবস্থায় এই ধারাবাহিক পরিবর্তন ভবিষ্যতে সরকারি প্রাথমিক শিক্ষার অবস্থান নিয়ে আরও বিতর্ক ও উদ্বেগ তৈরি করবে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।