আজকাল ওয়েবডেস্ক: নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বিস্তর গাফিলতি। যার জেরে বেঘোরে প্রাণ গেল ২৫ জনের। গোয়ার জনপ্রিয় নাইটক্লাবে হুল্লোড়ের মাঝেই দাউদাউ আগুন। ভয়ঙ্কর অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে খাক গোটা নাইটক্লাব। আহত হয়েছেন আরও ৫০ জন। এই নাইটক্লাবেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উঠল প্রশ্ন।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, বির্চ বাই রোমিও লেন নামের জনপ্রিয় নাইটক্লাব কোনও এনওসি জমা দেয়নি। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাও ছিল না। এমার্জেন্সি এক্সিটের ব্যবস্থাও ছিল না বেসমেন্টে। জানা গেছে, একতলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে। বাঁচার জন্য অনেকেই বেসমেন্টে ঠাঁই নিয়েছিলেন। বেসমেন্টে ছিল না ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা। ছিল না এক্সিট গেট। সেখানেই আটকে ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, মৃতদের মধ্যে তিনজন অগ্নিদগ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। বাকিদের মৃত্যু হয়েছে দমবন্ধ হয়ে। মৃতদের মধ্যে তিনজন পর্যটক ছিলেন। ১৪ জন ওই নাইটক্লাবের কর্মী ছিলেন। বাকি পরিচয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী ড. প্রমোদ সাওয়ান্ত এক্স হ্যান্ডেলে জানিয়েছেন, 'প্রাথমিক তদন্তের পর জানা গেছে, গোয়ার আরপোরায় নাইটক্লাবে যথাযথ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না। নাইটক্লাবের ম্যানেজমেন্টের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও যে সকল আধিকারিকরা নাইটক্লাবের জন্য ছাড়পত্র দিয়েছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করা হবে। ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করা হবে। দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির পদক্ষেপ করা হবে।'
গোয়া অগ্নিকাণ্ডের পর এক্স হ্যান্ডেলে শোকপ্রকাশ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, 'স্থানীয় প্রশাসন উদ্ধার ও চিকিৎসা সহায়তায় সর্বোচ্চ তৎপরতা দেখাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিহতদের পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল (PMNRF) থেকে অনুদান প্রদানের ঘোষণা করেছেন। অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও দায় নির্ধারণে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু হয়েছে। মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।'
?t=DXQcfbPsu4JSKFz_IUVYUA&s=08
বর্ষশেষের উদযাপনে মেতে উঠেছিল গোয়া। তখনই ঘটল বিপত্তি। জনপ্রিয় নাইটক্লাবে ভয়ঙ্কর অগ্নিকাণ্ড। দাউদাউ আগুনে জেরে এ পর্যন্ত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে অনেকেই পর্যটক রয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারার আশঙ্কা রয়েছে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে নর্থ গোয়ার বাগা সমুদ্র সৈকতের কাছে আরপোরায়। পুলিশ জানিয়েছে, বির্চ বাই রোমিও লেন নামের জনপ্রিয় নাইটক্লাবেই ভয়ঙ্কর অগ্নিকাণ্ডটি ঘটেছে শনিবার রাত একটা নাগাদ। সেই সময় কয়েকজন পর্যটক ছিলেন নাইটক্লাবে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান ছিল, নাইটক্লাবের রান্নাঘরের পাশেই গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের জেরে অগ্নিকাণ্ডটি ঘটেছে। কিন্তু গোয়া ডিজিপি জানিয়েছেন, পরীক্ষা করে দেখা গেছে নাইটক্লাবের গ্যাস সিলিন্ডার অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। অর্থাৎ গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে অগ্নিকাণ্ড ঘটেনি। কী কারণে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখা হয়েছে।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের জেরে ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে তিন থেকে চারজন পর্যটক রয়েছেন। বাকিরা ওই নাইটক্লাবের কর্মী। আহত হয়েছেন আরও ৫০ জন। তাঁরা গোয়া মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে গোটা নাইটক্লাবে দাউদাউ আগুন ছড়িয়ে পড়ে। যার জেরে সকলেই পালিয়ে বাঁচতে পারেননি। অনেকেই রান্নাঘরের মধ্যে আটকে পড়েছিলেন। রাতেই দমকলের একাধিক ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ঘণ্টা দুয়েক চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে ওই নাইটক্লাবে। যা বর্তমানে পুড়ে খাক। আহত ও নিহতদের দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
গোয়ার ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ জানিয়েছেন, জনপ্রিয় নাইটক্লাবে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল কিনা, নিরাপত্তায় কী কী গাফিলতি ছিল, গ্যাস কানেকশনের সিস্টেম, এমার্জেন্সি পথ কটি ছিল, সবটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বর্তমানে নাইটক্লাবটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। নাইটক্লাবের ম্যানেজার ও মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, নাইটক্লাবে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা যথাযথ ছিল না।
