আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিহারের রাজনৈতিক মাটিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। বুধবার জনতা দল (ইউনাইটেড)-এর আইনসভা দলের নেতা হিসেবে নির্বাচিত হলেন নীতীশ কুমার। দিনের শেষে তাঁকে জাতীয় গণতান্ত্রিক জোটের (এনডিএ) নেতা হিসেবেও নির্বাচিত করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। এর মধ্য দিয়েই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে রেকর্ড দশমবারের মতো শপথ নেওয়ার পথ প্রশস্ত হবে কুমারের জন্য।
দিনের শেষার্ধে তিনি বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বিহারের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরপরই নতুন সরকার গঠনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।
নীতীশ কুমার আগামী ২০ নভেম্বর পাটনায় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন। সঙ্গে অন্তত ২০ জন মন্ত্রীও শপথ নিতে পারেন বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে। ঐতিহাসিক গান্ধী ময়দানে সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কয়েকজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং এনডিএ শাসিত বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা।
সাম্প্রতিক বিহার বিধানসভা নির্বাচনে এনডিএ জোট—অর্থাৎ জেডিইউ এবং বিজেপি—২৪৩ সদস্যের বিধানসভায় ২০০-রও বেশি আসন পেয়েছে। বিজেপি মোট ৯টি আসন জেতে, আর জেডিইউ পায় ৮৫টি আসন। ১৪ নভেম্বর নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই নতুন সরকার গঠনের আলোচনা দ্রুত গতি পেয়েছে।
এদিকে, মন্ত্রিসভায় কোন কোন দল কোন কোন দপ্তর পাবে তা নিয়ে এনডিএ জোটের শরিকদের মধ্যে তীব্র লবিং চলছে। একই সঙ্গে নতুন বিধানসভার স্পিকার পদ নিয়ে জোটের দুই প্রধান শরিক—বিজেপি এবং জেডিইউ—দু'পক্ষই দাবি জানাচ্ছে। ফলে শপথগ্রহণের আগেই স্পিকার নির্বাচনে ঐকমত্য গড়ে তুলতে তৎপর হয়েছেন নেতৃত্ব।
মঙ্গলবার থেকেই এনডিএ শীর্ষ নেতৃত্ব চেষ্টা চালাচ্ছে স্পিকার পদের দায়িত্ব কে নেবে তা নিয়ে একমত হতে। কারণ বিজেপি এবং জেডিইউ উভয়ই নিজেদের প্রার্থীকে সামনে রাখতে আগ্রহী। গত বিধানসভায় স্পিকার ছিলেন বিজেপি নেতা নন্দ কিশোর যাদব এবং উপ-স্পিকার ছিলেন জেডিইউ-এর নরেন্দ্র নারায়ণ যাদব।
বিশ্লেষকদের মতে, নীতীশ কুমারের দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা এবং জোটের অভ্যন্তরীণ সমন্বয় রক্ষার দক্ষতা এই পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বিশেষ করে মন্ত্রিসভার দপ্তর বন্টন, স্পিকার নির্বাচন এবং জোটের অভ্যন্তরীণ ভারসাম্য রক্ষা করা নতুন সরকারের প্রথম চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে।
২০ নভেম্বরের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে পাটনায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গান্ধী ময়দানে প্রস্তুতি প্রায় শেষ, যেখানে হাজারো মানুষ নতুন সরকারের শপথ অনুষ্ঠানের সাক্ষী হতে জড়ো হতে পারেন। নীতীশ কুমারের রাজনৈতিক কেরিয়ারে দশম শপথগ্রহণ হওয়ায় অনুষ্ঠানটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। বিহারের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কোন পথে এগোবে, তা নিয়ে এখন সবার নজরই সেই ঐতিহাসিক ময়দান ও আসন্ন নতুন মন্ত্রিসভার গঠনের দিকে।
