আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্ত্রীর অন্য প্রেমের সম্পর্ক জানতে পেরে গিয়েছিল স্বামী৷ ধরা পড়ার ভয়ে স্বামীকে খুন এক স্ত্রীর। উত্তরপ্রদেশের মিরাঠ জেলায় বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে স্বামীকে খুন করার অভিযোগ উঠল এক মহিলার বিরুদ্ধে। জানা গিয়েছে, স্বামী তাঁর স্ত্রীর প্রেমের সম্পর্কের কথা জানতে পারায়, মহিলা তার প্রেমিকের সাহায্যে নিজের স্বামীকেই খুন করার ষড়যন্ত্র করে। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ দেহ তাঁর গ্রামের অদূরে একটি মাঠ থেকে পাওয়া যায়। এই ঘটনার পর অভিযুক্ত স্ত্রী এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয়। জানা গিয়েছে অভিযুক্ত তিন সন্তানের মা। প্রথমে স্বামীর মৃত্যুতে শোকের ভান করে অভিযুক্ত। পরে সুযোগ বুঝে তার প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যায়। প্রথম দিকে পুলিশ মনে করেছিল, ডাকাতি করতে এসে হয়তো এই খুন হয়েছে। কিন্তু তদন্ত যত এগোয়, তত এক ভিন্ন কাহিনি সামনে আসে।

পুলিশ যখন নিহত ব্যক্তির স্ত্রী অঞ্জলিকে জেরা করতে যায়, তখন দেখা যায় সে তার আগোয়ানপুর গ্রাম থেকে নিখোঁজ। ধরা পড়ার ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্ত। পরবর্তীতে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, অঞ্জলির সঙ্গে একই গ্রামের অজয় নামে এক যুবকের বিবাহ-বহির্ভূত প্রেম ছিল। পুলিশ অজয়ের বাড়িতেও তার খোঁজ পায়নি। পরে অবশ্য পুলিশ তাদের দু'জনকে একসঙ্গে খুঁজে বের করে। পুলিশের জেরায় অজয় সব সত্যি স্বীকার করে। সে জানায়, নিহত রাহুল তাদের সম্পর্কের কথা জেনে গিয়েছিল। এতে অঞ্জলি এতটাই রেগে যায় যে সে রাহুলকে মেরে ফেলার ছক কষে। তাদের পরিকল্পনা মাফিক, অজয় রাহুলকে মাঠের কাছে দেখা করতে ডাকে এবং সেখানে তাঁকে তিনটি গুলি করে হত্যা করে। বর্তমানে দুই অভিযুক্ত পুলিশি হেফাজতে। 

প্রসঙ্গত, পরকীয়ার জেরে একের পর এক আত্মহত্যা, খুন৷ সম্প্রতি এমনই এক ঘটনা ঘটল অন্ধ্রপ্রদেশের কৃষ্ণা নদীর উপর। প্রথমে খুন ও পরে নদীর উপরে থাকা শ্রীশৈলম জলাধারে স্বামীর দেহ ফেলে দেন এক স্ত্রী। জানা গিয়েছে, এভাবে তিনি অপরাধ লুকানোর চেষ্টা করেন। একইসঙ্গে অভিযুক্ত তাঁর প্রেমিক। দুজন মিলে ষড়যন্ত্র করে এই নৃশংস কাণ্ড ঘটান। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই এই খুনের রহস্যের কিনারা করল পুলিশ।

তেলেঙ্গানার ওয়ানাপারথি জেলার পুলিশ সুপার রাভুলা গিরিধর ঘটনার প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, "অত্যন্ত কৌশলে তদন্ত চলেছে৷ প্রযুক্তির সাহায্য ও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেই পুলিশ সরাসরি অপরাধীদের ধরে ফেলেছে।"

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত কুরুমূর্তি  ওয়ানাপারথির বাসিন্দা ছিলেন। তিনি পেশায় একজন নিরাপত্তারক্ষী। জানা গিয়েছে, গত ২৫ অক্টোবর রাতের পর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। এই ঘটনায় তাঁর স্ত্রী কেকুলা নাগামণি এবং তাঁর প্রেমিক নন্দিমালা শ্রীকান্তের নাম মুল অভিযুক্ত হিসেবে জানা গিয়েছে।

পুলিশ সুপারের কথায়, অভিযুক্ত দুজন মিলে ঠান্ডা মাথায় খুনের পরিকল্পনা তৈরি করে। জানা গিয়েছে ২৫ অক্টোবর রাতে নাগামণি ও শ্রীকান্ত নাকি কুরুমূর্তিকে জোর করে মদ খাইয়ে দেন। এরপর শ্বাসরোধ করে নৃশংসবাবে তাঁকে মেরে ফেলা হয়।

জানা গিয়েছে এরপর দেহটি সরিয়ে ফেলতে তাঁরা একটি গাড়ি ভাড়া করেন। সেই গাড়িতে করে শ্রীশৈলম বাঁধের কাছে গিয়ে মৃতদেহটি ফেলে দিয়ে আসেন অভিযুক্তরা। পুলিশকে ভুল বোঝাতে এবং সন্দেহ এড়াতে নাগামণি পরে ওয়ানাপারথি টাউন থানায় স্বামীর নিখোঁজ হওয়ার একটি অভিযোগও দায়ের করেছিলেন।

তবে এই খুনের ঘটনা লুকানোর চেষ্টা দ্রুতই ব্যর্থ হয়। নাগামণি ও শ্রীকান্তের গ্রেপ্তারের পর নিশ্চিত হওয়া যায় যে, অবৈধ সম্পর্কের কারণেই পূর্বপরিকল্পিতভাবে এই খুন করা হয়েছে। ঘটনার জেরে এসপি গিরিধর বলেন, "অপরাধীরা যতই চালাকি করুক না কেন, সত্য একদিন না একদিন বেরিয়ে আসবেই। কেউই আইনের হাত থেকে বাঁচতে পারে না।"