আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিহারের বোধগয়ায় একটি বিয়েতে রসগোল্লা নিয়ে বিরোধ এমন জায়গায় পৌঁছল যে শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠান ভেঙে মারামারিতে গড়ায় এবং বিয়েটাই বাতিল হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে ২৯ নভেম্বর এবং এর সিসিটিভি ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই বিষয়টি বেশ আলোচনার কেন্দ্রে উঠে আসে। জানা গেছে, সবকিছু ঠিকঠাকভাবেই চলছিল এবং বর-বধূ সাত পদক্ষেপের জন্য মণ্ডপে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, সেই সময়েই অতিথিদের একটি অংশ অভিযোগ করে যে বিয়েতে পরিবেশন করা রসগোল্লার পরিমাণ যথেষ্ট নয়। প্রথমে ছোটখাটো অনুযোগ হিসেবে শুরু হলেও খুব দ্রুতই তা দুই পক্ষের পরিবারের মধ্যে উত্তপ্ত বাগবিতণ্ডায় পরিণত হয়।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় উভয় পক্ষের আত্মীয়স্বজনেরা একে অপরের উপর চেয়ার ছুঁড়ছে, ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতি করছে এবং পুরো ভেন্যুতে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেও হোটেলের কর্মীরা সফল হতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত বিয়ের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। ঘটনার পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে যখন কনের পরিবার পণের দাবিতে হয়রানি ও অসদাচরণের অভিযোগ তুলে বরের পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। তবে এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
স্থানীয় পুলিশ এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি এবং অভিযোগপত্র পর্যালোচনা শেষে তদন্ত শুরু হবে বলে জানা গেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘটনাটি নিয়ে চলছে নানান প্রতিক্রিয়া এবং অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করছেন যে শুধুমাত্র রসগোল্লা নিয়ে এমনভাবে বিয়ে ভেঙে যেতে পারে। অনেকেই মন্তব্য করছেন, বিয়ের মতো উচ্চচাপের পরিস্থিতিতে বহুদিনের চাপা অসন্তোষ তুচ্ছ বিষয়ে বিস্ফোরিত হতে সময় লাগে না।
বিয়ের পাত্রের বাবা মহেন্দ্র প্রসাদ নিশ্চিত করেছেন যে বিতর্কের মূল কারণ ছিল রসগোল্লার অভাব এবং তিনি দাবি করেছেন যে কনের পক্ষ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে পণ মামলা করেছে। তিনি আরও জানান যে বরের পরিবার বিয়ে এগিয়ে নেওয়ার পক্ষে ছিল, কিন্তু কনের পক্ষ অনুষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়। বরের মা মুননি দেবী অভিযোগ করে বলেছেন, মারামারির সুযোগে কনের পরিবারের লোকেরা তিনি যে গয়না উপহার হিসেবে বয়ে এনেছিলেন তা নিয়ে যায়। বরের পরিবারের দাবি, বিয়ের খরচের পাশাপাশি হোটেল বুকিংসহ বড় অংশের দায়িত্ব তারাই নিয়েছিলেন। বরের খুড়তুতো ভাই সুশীল কুমার জানান, তারা চেষ্টা করেছিলেন আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মিটিয়ে বিয়ে সম্পন্ন করতে, কিন্তু তাতে কাজ হয়নি।
ঘটনাটি এখনো তদন্তাধীন এবং বিয়ের ভেঙে যাওয়া নিয়েই দুই পরিবারে তীব্র ক্ষোভ ও দোষারোপের পরিবেশ বিরাজ করছে।
