আজকাল ওয়েবডেস্ক: কর্মসূত্রে ব্যস্ত থাকেন সারাবছর। তবে স্ত্রী যখন হাসপাতালে, কাতরাচ্ছেন প্রসবযন্ত্রণায়, তখনও যে অনুরোধ করার পরেও সামান্য ছুটিটুকু মিলবে না, তা ধারণাতেও ছিল না। রেডিটে সম্প্রতি নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন এক যুবক। সেখানে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা শুনে, অন্যান্যরাও নিজেদের মতামত দিয়েছেন। শুরু হয়েছে বিতর্কও।
ওই পোস্টে, যুবক দাবি করেছেন, তাঁর স্ত্রীর প্রসববেদনা চলাকালীন, তিনি ম্যানেজারের কাছে ছুটি চেয়েছিলেন, ওই সমটুকু স্ত্রীর পাশে থাকবেন বলে। দু'দিনের ছুটি চেয়ে নিয়েছিলেন তিনি। তবে, যুবকের অভিযোগ, ছুটি তো মেলেনিও। পোস্টে যুবক জানিয়েছেন, তাঁর ম্যানেজার তাঁকে সাফ কাজ করার নির্দেশ দেন। জানিয়ে দেন প্রয়োজনে তিনি এক সপ্তাহ পরে ছুটি নিতে পারেন, আপাতত প্রয়োজনে 'ওয়ার্ক ফ্রম হাসপাতাল' করবেন। যদিও উত্তরে যুবক জানিয়েছিলেন, এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালে কাজের চাপ অত্যাধিক, তাই হাসপাতাল থেকে অফিসের কাজ করা সম্ভব হবে না।
নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে যুবক লিখেছেন, 'রেডিটে লিখছি কারণ আমি জানি না আর কী করব। আমার স্ত্রী, আমাদের প্রথম সন্তানের জন্মের জন্য হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। আমি আমার ম্যানেজারকে জানিয়েছিলাম এবং মাত্র দু'দিনের ছুটি চেয়েছিলাম। মানবিক সহানুভূতির পরিবর্তে, আমাকে আমার ছুটির আর্জি পিছিয়ে দিতে বলা হয়েছিল, আমার জায়গায় আমার বাবা-মা কাজ করতে পারবেন কি না হাসপাতালে, তা জানতে চাওয়া হয় এবং শেষমেশ আমাকে হাসপাতাল থেকেই কাজ করতে বলা হয়েছিল।' তিনি জানিয়েছেন, 'গোটা ঘটনার সবথেকে খারাপ দিক হল, আমি কাজটা ছাড়তে পারব না। পরিবার রয়েছে, সন্তান রয়েছে। তাদের দায়িত্ব আমার। তাই এই কাজ আমাকে করতেই হবে।'
ওই পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে ব্যাপকহারে। হাজার হাজার মানুষ দেখেছেন পোস্টটি। নিজেদের মতামত জানিয়েছেন। পোস্টটিতে মন্তব্য করার সময়, অনেক রেডিট ব্যবহারকারী ম্যানেজারের আচরণের নিন্দা করেছেন, কর্মীকে পরিবারকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা মনে করিয়েছেন। একজন লিখেছেন, 'সবসময় কাজ থাকবে। যদি আপনার ছুটি জমা থাকে তবে আপনার ম্যানেজারকে উপেক্ষা করুন এবং আপনার স্ত্রী এবং সন্তানের পাশে থাকুন।' অপর একজনও তাই লিখেছেন। কেউ কেউ জানিয়েছেন, কাজ বাঁচাতে গিয়ে এমন সিদ্ধান্ত যেন না নেন, যাতে পরে অনুশোচনা করতে হয়।
ওয়ার্ক ফ্রম হাসপাতাল প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, চোপড়া ব্লকে এসআইআর সংক্রান্ত অতিরিক্ত কাজের চাপে এবার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেন এক বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও)। অসুস্থ অবস্থাতেই হাসপাতালের বেডে বসে এনুমারেশন ফর্ম আপলোড করতে দেখা গেল তাঁকে। ঘটনাটি সামনে আসতেই প্রশাসনিক মহলে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। চোপড়া ব্লকের জাগিরবস্তি এলাকার ১৮৮ নম্বর বুথের বিএলও মুস্তফা কামাল জানান, গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই তিনি টানা পরিশ্রম করছেন। মোট ৯১৮টি ফর্ম বিলি করতে হয়েছে তাঁকে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম সংগ্রহ, তার পর রাতে জেগে সেই ফর্ম আপলোড দুইয়ের চাপেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন তিনি। ইতিমধ্যেই অর্ধেকের বেশি ফর্ম আপলোড করা হয়ে গেছে। তবে দৌড়ঝাঁপ, মানসিক চাপ ও বিশ্রামের অভাবে শরীর ভেঙে পড়ে তাঁর। তাতেও কাজ করে চলেছেন অক্লান্ত।
