আজকাল ওয়েবডেস্ক: যুবতীর নিথর দেহ পড়ে। মহারাষ্ট্রের পালঘর জেলায় মুম্বই-ভদোদরা হাইওয়ের কাছে এক ২৫ বছর বয়সী যুবতীর দেহ উদ্ধার হয়েছিল দিন কয়েক আগে। অবশেষে সেই খুনের ঘটনায় তাঁর স্বামীকেই গ্রেপ্তার করল পুলিশ। মঙ্গলবার পুলিশ কর্মকর্তারা এই খবর জানিয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ৪৩ বছর বয়সী যুবতীর স্বামী। জানা গিয়েছে দীর্ঘদিন ধরে ওই ব্যক্তি স্ত্রীর চরিত্র নিয়ে সন্দেহ করতেন। দিনের পর দিন দুজনার মধ্যে মন কষাকষি, বাকবিতণ্ডা চলত। সেই রাগেই তিনি তাঁর স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলেন। গত ১৩ নভেম্বর হাইওয়ের ওপর একটি নির্মীয়মাণ সেতুর কাছে মৃতদেহটি পাওয়া যায়।
ঘটনার জেরে তালাসারি থানার পরিদর্শক অজয় গোরাড় জানান, "তদন্তে প্রথমে মনে করা হয়, যুবতীকে তাঁর নিজের ওড়না দিয়েই গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে। এর পরই খুনের মামলা রুজু করা হয়।" দ্রুত কোনও সূত্র না পাওয়ায় পুলিশ বিভিন্ন দল তৈরি করে তদন্ত শুরু করে। এরপর মৃতার ছবি প্রকাশ করা হয়। পরে আত্মীয়দের মাধ্যমে তাঁকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়।
তদন্ত এগোতেই পুলিশের সন্দেহ হয় ওই মহিলার স্বামী সাকির আলি মুস্তাফা আলি মনসুরির ওপর। তিনি পেশায় চালক। মূলত উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা হলেও সুরাটে থাকতেন। পুলিশ কর্মকর্তা জানান, সোমবার মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের আছাড় সীমান্ত থেকে সাকিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, "তাঁর স্ত্রীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক আছে বলে তিনি সন্দেহ করতেন। এই সন্দেহের কারণেই তিনি স্ত্রীকে খুন করেছেন।"
অন্যদিকে, গত ৬ নভেম্বর উত্তরপ্রদেশের নয়ডার সেক্টর-৮২-এর কাছে একটি নর্দমা থেকে এক মহিলার মুন্ডুহীন নগ্ন দেহ উদ্ধার হয়। জানা গিয়েছে, তাঁর দুটো হাতও কাটা ছিল৷ শহরের জমকালো এলাকায় এই ঘটনায় হুলুস্থুল পড়ে যায়৷ মৃতদেহ কার, কোথা থেকে এল, এসব নিয়ে তদন্ত চলতে চলতে সপ্তাহ কেটে যায়। পুলিশ সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে, যেই মহিলার দেহ উদ্ধার হয়েছে, তিনি পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। তাঁকে এহেন নৃশংস খুনের অভিযোগ উঠেছে তাঁর প্রেমিকের বিরুদ্ধে।
নয়ডা পুলিশ সম্প্রতি এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযোগ, সে তার প্রেমিকা অর্থাৎ ওই মহিলাকে খুন করে দেহটি শহরের একটি পরিচিত এলাকায় ফেলে দেয়।
তদন্তে উঠে আসে অভিযুক্ত যুবক ওই মহিলার প্রেমিক। সে নয়ডায় বাস চালকের কাজ করত৷ প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে বাসের মধ্যেই অভিযুক্ত তার প্রেমিকা খুন করে। প্রথমে তাঁর মাথা ও হাত কেটে নেওয়া হয়। এর পরেই তাঁর নগ্ন দেহ সেক্টর ৮২ তে ফেলে দিয়ে চম্পট দেয় অভিযুক্ত৷ জানা গেছে, অভিযুক্ত ও নিহত, দু'জনেই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। তবে, পশ্চিমবঙ্গের কোথাকার বাসিন্দা সে বিষয়ে এখনও স্পষ্ট কিছু জানায়নি পুলিশ৷
তদন্তে একটি বেসরকারি বাসের হদিশ পায় পুলিশ৷ সেই বাসের মালিক ও চালক অভিযুক্ত মনু সিংহ৷ তাকে জেরা করা হয়। সে জানায় মহিলা তার প্রেমিকা ছিলেন। আড়াই বছর প্রেমের সম্পর্ক। ২০২৩ সালে তিনি স্বামীর সঙ্গে বচসা করে দুই সন্তান নিয়ে নয়ডায় চলে আসেন৷ সেখানেই মনুর সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। মনু জানিয়েছে, ওই মহিলা তাকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিতেন৷ এদিকে মনুও বিবাহিত। শুধু তাই নয়, মহিলার কাছ থেকে প্রায় দু'লক্ষ টাকা ধার নেয় মনু। সেই টাকা ফেরত দিতে না পারায় মনুর উপর চাপ দিচ্ছিলেন তিনি। এরপরই প্রেমিকাকে সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা করছিল মনু। তাঁকে বাসে করে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে ডাকে মনু। এরপরই বাসের ভিতরে তাঁকে খুন করে অভিযুক্ত। মাথা ও হাত কেটে নেয়। পরে মৃতদেহ নর্দমায় ফেলে গাজিয়াবাদে পালিয়ে যায়।
জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত স্বীকার করেছে যে, সে খুন করেছে। খুনের পর সে তাঁর হাতও কেটে ফেলে। এরপর মৃতদেহ নয়ডায় ফেলে আসে, আর কাটা মাথা ও হাত নিয়ে গিয়ে ফেলে দনকৌরে। এর আগে, অভিযুক্তজে খুঁজতে পুলিশ নিহত মহিলার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছিল এবং আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখছিল।
প্রসঙ্গত, পুলিশ চৌকি থেকে ২০০ মিটার দূরে মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার হয় চলতি মাসের ৬ নভেম্বর। এক সাফাইকর্মী প্রথমে দেহটি নর্দমায় পড়ে থাকতে দেখে তড়িঘড়ি পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়েই তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। দ্রুত তরুণীর দেহ অটোপ্সির জন্য পাঠানো হয়। ঘটনায় কে বা কারা জড়িত, তা খতিয়ে দেখা শুরু করে পুলিশ। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়। ওই এলাকায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চিরুনি তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। পাশাপাশি খুনের মামলাও রুজু করা হয়।
