আজকাল ওয়েবডেস্ক: পরকীয়ার সন্দেহে স্ত্রীর সঙ্গে ভয়াবহ কাণ্ড। জানা গিয়েছে, ঝগড়ার পর ভয়ানকভাবে আঘাত করে এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীর নাক কেটে ফেলে৷ ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের ঝাবুয়া জেলায়৷ এই নক্কারজনক ঘটনার কথা পরবর্তীতে বুধবার জানিয়েছেন এক পুলিশ কর্তা।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ঝাবুয়া জেলার রানাপুর থানা এলাকার পদালওয়া গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটেছে। জানা গিয়েছে, সন্দেহের জেরে দীর্ঘদিন ধরে দুজনার মধ্যে বিপুল বচসা চলত। এদিন ফের এমন বাকবিতণ্ডা চলাকালীন ব্যক্তি এমন নৃশংসভাবে আঘাত করে। ঘটনার জেরে, পুলিশ দ্রুত অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে।বর্তমানে তাকে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) শিব দয়াল সিং সংবাদমাধ্যমে জানান, "২৩ বছর বয়সি এক মহিলা অভিযোগ করেছেন যে তাঁর স্বামী তাঁকে মারধর করেছে। ব্লেড দিয়ে তাঁর নাক কেটে দিয়েছে।" তিনি জানান, মহিলাকে পরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের রিপোর্ট (এমএলসি) পাওয়ার পর এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়। এহেন নৃশংস ঘটনার জেরর অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এসপি আরও বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, স্বামী তাঁর স্ত্রীকে অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক আছে বলে সন্দেহ করতেন। সেই সন্দেহের বশেই তিনি এই নির্মম কাণ্ড ঘটিয়েছেন। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত স্বামীর নাম রাকেশ বিলওয়াল। তিনি স্ত্রীকে নিয়ে কাজের জন্য গুজরাটে গিয়েছিলেন। সেখানেই স্ত্রীকে সন্দেহ করে তাঁর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলে। তাঁদের মধ্যে প্রচণ্ড ঝগড়া শুরু হয়। খবর অনুযায়ী, এর পরই মঙ্গলবার তাঁরা গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন।
আহত যুবতী জানিয়েছেন, বাড়ি ফিরতেই স্বামী তাঁকে লাঠি দিয়ে মারতে শুরু করে। তার পর ব্লেড দিয়ে তাঁর নাক কেটে দেয়। যুবতী বলেন, "গুজরাট থেকে আসার সময় আমি যখন ডিভোর্স চাই, তখন সে বলে বাড়ি গিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলবে। কিন্তু বাড়ি ফিরতেই আমাকে লাঠি দিয়ে মারতে শুরু করে। এর পর আচমকা ব্লেড দিয়ে আমার নাক কেটে দেয়।" তিনি আরও জানান, তাঁর ছোট ছেলে মায়ের উপর এহেন অত্যাচার দেখে চিৎকার করলেও অভিযুক্ত স্বামী তাঁকে ছাড়েনি। যদিও অপরাধ করার পর অভিযুক্ত নিজেই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
অন্যদিকে, পরকীয়ার জেরে একের পর এক আত্মহত্যা, খুন৷ সম্প্রতি এমনই এক ঘটনা ঘটল অন্ধ্রপ্রদেশের কৃষ্ণা নদীর উপর। প্রথমে খুন ও পরে নদীর উপরে থাকা শ্রীশৈলম জলাধারে স্বামীর দেহ ফেলে দেন এক স্ত্রী। জানা গিয়েছে, এভাবে তিনি অপরাধ লুকানোর চেষ্টা করেন। একইসঙ্গে অভিযুক্ত তাঁর প্রেমিক। দুজন মিলে ষড়যন্ত্র করে এই নৃশংস কাণ্ড ঘটান। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই এই খুনের রহস্যের কিনারা করল পুলিশ।
তেলেঙ্গানার ওয়ানাপারথি জেলার পুলিশ সুপার রাভুলা গিরিধর ঘটনার প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, "অত্যন্ত কৌশলে তদন্ত চলেছে৷ প্রযুক্তির সাহায্য ও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেই পুলিশ সরাসরি অপরাধীদের ধরে ফেলেছে।"
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত কুরুমূর্তি ওয়ানাপারথির বাসিন্দা ছিলেন। তিনি পেশায় একজন নিরাপত্তারক্ষী। জানা গিয়েছে, গত ২৫ অক্টোবর রাতের পর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। এই ঘটনায় তাঁর স্ত্রী কেকুলা নাগামণি এবং তাঁর প্রেমিক নন্দিমালা শ্রীকান্তের নাম মুল অভিযুক্ত হিসেবে জানা গিয়েছে।
পুলিশ সুপারের কথায়, অভিযুক্ত দুজন মিলে ঠান্ডা মাথায় খুনের পরিকল্পনা তৈরি করে। জানা গিয়েছে ২৫ অক্টোবর রাতে নাগামণি ও শ্রীকান্ত নাকি কুরুমূর্তিকে জোর করে মদ খাইয়ে দেন। এরপর শ্বাসরোধ করে নৃশংসবাবে তাঁকে মেরে ফেলা হয়।
জানা গিয়েছে এরপর দেহটি সরিয়ে ফেলতে তাঁরা একটি গাড়ি ভাড়া করেন। সেই গাড়িতে করে শ্রীশৈলম বাঁধের কাছে গিয়ে মৃতদেহটি ফেলে দিয়ে আসেন অভিযুক্তরা। পুলিশকে ভুল বোঝাতে এবং সন্দেহ এড়াতে নাগামণি পরে ওয়ানাপারথি টাউন থানায় স্বামীর নিখোঁজ হওয়ার একটি অভিযোগও দায়ের করেছিলেন।
তবে এই খুনের ঘটনা লুকানোর চেষ্টা দ্রুতই ব্যর্থ হয়। নাগামণি ও শ্রীকান্তের গ্রেপ্তারের পর নিশ্চিত হওয়া যায় যে, অবৈধ সম্পর্কের কারণেই পূর্বপরিকল্পিতভাবে এই খুন করা হয়েছে। ঘটনার জেরে এসপি গিরিধর বলেন, "অপরাধীরা যতই চালাকি করুক না কেন, সত্য একদিন না একদিন বেরিয়ে আসবেই। কেউই আইনের হাত থেকে বাঁচতে পারে না।"
